‘নির্বাচনের আগে নতুন কোনো নিষেধাজ্ঞার সম্ভাবনা নেই’

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোনো দেশের বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা তো দূরের কথা, নতুন করে আর কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।

সোমবার (৯ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সফরত সুইডেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী ডায়ানা জানসের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন প্রতিমন্ত্রী।

বৈঠক শেষে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো থেকে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আসার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শাহরিয়ার আলম বলেন, মোটেও না। তারা কোথায় পেয়েছেন আমরা জানি না। কিন্তু আমি খুব দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে পারি, এ ধরনের কোনো সম্ভাবনা নেই। এটি করা হয়েছে মানুষের মধ্যে একটা ভয় বা ভীতি তৈরি করার জন্য।

শাহরিয়ার আলম আরও বলেন, একটা গোষ্ঠী এটা থেকে একটা সুবিধা নিতে পারে। আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, বাংলাদেশের সংসদ নির্বাচনের আগে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা তো দূরের কথা; নতুন করে আর কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার সম্ভাবনা বা এটার বাস্তবতা বা কোনো প্রেক্ষাপট নেই।

বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায় সুইডেন
বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। এ প্রসঙ্গে সুইডেনের মন্ত্রী বলেন, আমরা বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চাই। আর এটার বিষয়ে দায়দায়িত্ব হচ্ছে সরকারের।

নির্বাচন প্রসঙ্গে শাহরিয়ার আলম বলেন, সুইডেনের মন্ত্রীর সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে আলাপ হয়েছে। নির্বাচন কমিশনে নতুন আইন হয়েছে, সেটা তাকে বলেছি। জাতীয় সংসদ নির্বাচন কীভাবে অবাধ ও সুষ্ঠু করা যায়, তার জন্য কী প্রচেষ্টা আমরা নিচ্ছি, সেটা বলেছি। ২০০৮ সালের এবং এর আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা কেমন ছিল সেটা বলেছি।

বাংলাদেশ সফররত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সেমবার বৈঠক করে বিএনপি। বৈঠকে দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাবে না বিএনপি। এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চাইলে শাহরিয়ার আলম বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন বাংলাদেশের সংবিধান অনুয়ায়ী হবে এবং নির্বাচন কমিশনের অধীনেই হবে। যে কেউ বানচালের চেষ্টা করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যু, বাণিজ্য, ইন্দো-প্যাসিফিক ইস্যু, ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবসহ বাংলাদেশ ও সুইডেনের দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করে উভয়পক্ষ।

ইন্দো-প্যাসিফিক ইস্যুতে আলোচনা বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইন্দো-প্যাসিফিক আউটলুক নিয়ে তিনি (সুইডেনের মন্ত্রী) জানতে চেয়েছেন। আমরা আমাদের পররাষ্ট্রনীতির কথা বলেছি। আমরা ব্যাখ্যা করেছি, পররাষ্ট্রনীতির ওপর নির্ভর করে আমরা ইন্দো-প্যাসিফিক আউটলুক করেছি। যেখানে আমরা রুল বেইসড অর্ডারের প্রতি সমর্থন জানিয়েছি। তারা স্বাগত জানিয়েছে। তাদের অবস্থাও প্রায় একই।

ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে শাহরিয়ার আলম বলেন, আমরা রাশিয়া-ইউক্রেন ইস্যুর প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোচনা করেছি। এক্ষেত্রে খাদ্য নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে আমরা কীভাবে সামনে এগোচ্ছি, তা সুইডেনের মন্ত্রীকে বলেছি। আমরা বলেছি, রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও যুদ্ধ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছি।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনা প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যাবেন। তিনি দেশে ফিরে গিয়ে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি মানবিক সহায়তার অর্থায়নে কীভাবে সহায়তা করতে পারে, সেটা তুলে ধরবেন।