জিনিসপত্রের দাম কমাতে সব ধরনের চেষ্টা করছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে বাজার মনিটরিং কার্যক্রম বাড়ানো হয়েছে। মনিটরিং না থাকলে কিছু নিত্যপণ্যের দাম আরও বাড়তে পারতো। বাজার তদারকির ক্ষেত্রে হয়তো পুরোপরি লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব হয়নি। তারপরও কিছুটা তো উপকার হয়েছে। মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ এসব কথা বলেন।
বাণিজ্য সচিব আরও বলেন, ‘শুধু দাম বেধে দিয়েই তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। প্রয়োজন পণ্যের যথাযথ সরবরাহ নিশ্চিত করা। এ জন্য বড় ব্যবসায়ীর পাশাপাশি খুচরা ব্যবসায়ীদের ওপরও ভরসা করতে হয়। দোকানে-দোকানে গিয়ে প্রতিনিয়ত পাহারা দেওয়া সম্ভব নয়। তাই সরকার বাজার মনিটরিংয়ের সঙ্গে জেলা প্রশাসন, স্থানীয় বাজার কমিটি এবং সুশীল সমাজকে সম্পৃক্ত করেছে। জনসচেতনামূলক কার্যক্রমও চালানো হচ্ছে।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণেই পেঁয়াজের পাশাপাশি ডিম ও আলু আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। অনুমোদনের পর কিছুটা দেরি হলেও ডিম আমদানি শুরু হয়েছে। এসব পণ্যে আমদানির সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় পণ্যের মধ্যে আলু, পেয়াজসহ বিভিন্ন সবজির উৎপাদন শুরু হলে আগামী ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ নিত্যপণ্যে দাম সহনীয় পর্যায়ে চলে আসতে পারে। তবে এর আগ পর্যন্ত কিছুটা চাপের মধ্যে থাকতে হবে।’
সচিব বলেন, ‘বর্তমান মৌসুমটা এমন যে এ সময়ে বাজারে পর্যপ্ত মজুদ থাকে না। এই সময় কৃষকের কাজে তেমন পণ্য থাকে না, যেটুকু থাকে তার অধিকাংশই মধ্যস্বত্বভোগীর কাছে। এ কারণে এই সময়ে দাম বাড়ে। এছাড়া এ বছর ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছিল। পরবর্তীতে রপ্তানির অনুমতি দিলেও রপ্তানি মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে দেশটি। এতে ভারত থেকে আমদানি করা প্রতিকেজি পেয়াজের দম পড়ছে ১৩০ টাকা বেশি। তাই বর্তমানে পেয়াজসহ কিছু পণ্যের দাম বেশখানিকটা বেশি।’
অনুমতি দেওয়ার পরও ডিম আমদানিতে দেরি হওয়া সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বার্ড ফ্লু পরীক্ষার জন্যই দেরি হয়েছে। তবে সেই সমস্যা কেটে গেছে। এরই মধ্যে ভারত থেকে ৬১ হাজার ৯৫০ পিস ডিম আমদানি করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, অনুমোদন দেওয়া ২০ কোটি পিস ডিম পর্যায়ক্রমে আসবে। আলু আমদানিও শুরু হয়েছে। এ কারণে ইতোমধ্যে ডিম ও আলুর দাম কমছে। আগামীতে আরও কমবে।’
ভারত ছাড়া অন্যান্য দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির কোনো উদ্যেগ রয়েছে কিনা জানতে চাইলে সচিব বলেন, ‘বিকল্প দেশ হিসেবে শুধু মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানি লাভজনক। কিন্তু তারাও খুব বেশি পেঁয়াজ দিতে পারবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। এর বাইরে অন্যান্য দেশ থেকেএ পেঁয়াজ আমদানির প্রস্তুতি রয়েছে। প্রয়োজন হলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’