দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকার আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। একইসঙ্গে আরও কয়েক দিন বৃষ্টি হতে পারে।
শনিবার সন্ধ্যায় আবহাওয়া পূর্বাভাসে এমন তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের পাশাপাশি গোপালগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, মৌলভীবাজার, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে চলমান শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে। এছাড়া ৩১ জানুয়ারি থেকে কয়েকদিন হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। এদিকে প্রচণ্ড শীতের কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। ঘন কুয়াশায় ব্যাহত নৌযান, বিমান ও ট্রেন চলাচল। এ অবস্থায় বৃষ্টি হলে বিপাকে পড়বেন চাষিরাও। তারা বলছেন, বেশি বৃষ্টি হলে, চাষের জমিতে পানি জমে ফসলের ক্ষতি হতে পারে।
আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানান, ৩১ জানুয়ারি দেশের বেশিরভাগ স্থানে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত শুরু হতে পারে, যা ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলতে পারে। তবে ২ ফেব্রুয়ারি থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আরও কয়েক দিন বৃষ্টি হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র জানায়, শনিবার সকাল ৯টা থেকে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক ছিল। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকার কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়ে। ঘন কুয়াশার কারণে অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। কিশোরগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, মৌলভীবাজার, যশোর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা জেলাসহ রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ ছিল- যা অব্যাহত থাকতে পারে।
এদিকে শনিবার ভোর ৬টায় পঞ্চগড়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর ৩ ঘণ্টা পর সকাল ৯টায় তাপমাত্রা আরও কমে ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে দাঁড়ায়, যা শনিবার সারা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল। ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
রাজশাহী : শনিবার সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি মৌসুমে এটি রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। শুক্রবার জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি। বৈরী আবহাওয়ার কারণে রাজশাহীর প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো বন্ধ রয়েছে। খুব প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ির বাইরে বের হচ্ছেন না। শীতে কষ্ট পাচ্ছেন দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষ। জীবিকার তাগিদে তাদের কাজের সন্ধানে বের হতে হচ্ছে।
বগুড়া : তীব্র শীতে সারিয়াকান্দি উপজেলার যমুনা নদীর দুর্গম চরাঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষ দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন। নদী ভাঙনে ভিটেমাটি ও কৃষি জমি হারানো এসব মানুষ জীবিকার জন্য প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করছেন। সরকারিভাবে জেলায় ৬৩ হাজার পিস কম্বল এবং বেসরকারিভাবে আরও অনেক ধরনের শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। এরপরও সারিয়াকান্দিতে গরম কাপড়ের অভাবে কষ্ট পাচ্ছেন বাসিন্দারা। কাজলা ইউনিয়নের চরঘাগুয়া চরের সজিবর বেওয়া (৭০) জানান, চেয়ারম্যান ও মেম্বরদের কাছে এবার কোনো শীতবস্ত্র পাননি।
সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান বলেন, সরকারিভাবে যে কম্বল পাওয়া গিয়েছিল তা বাড়ি বাড়ি গিয়ে গরিবদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। চরবাসীদেরও সহযোগিতা করা হয়েছে।