ইন্টার্নি ডাক্তারের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে যশোর জেনারেল হাসপাতাল

jessore hospital

আড়াইশ শয্যার যশোর জেনারেল হাসপাতাল ইন্টার্নি ডাক্তারের উপর
নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। আর এই ইন্টার্নি ডাক্তারের দুব্যবহার এবং
অপচিকৎসার কারণে রোগী ও স্বজনরা প্রতিনিয়ত হয়রানি ও ক্ষতিগ্রস্থ
হচ্ছে। এ সব অভিযোগ হাসপাতালের সুপারের কাছে করা হলে তিনিও
ইন্টার্নি ডাক্তারের পক্ষাবলম্বন করে অনিয়ম দুনীতিকে জায়েজ করার
চেষ্টা চালায়।

শুক্রবার আড়াইশ শয্যার যশোর জেনারেল হাসাপাতালের চারতলায় মেডিসিন
ওয়ার্ডে যেয়ে কোন রেজিষ্টার্ড ডাক্তার পাওয়া যায়নি। ওয়ার্ডে
সেবিকাদের কক্ষের দক্ষিন পাশে দুজন ইন্টার্নি ডাক্তার পাওয়া যায়। তারা
দুজনে খোশ গল্পে মেতে ছিল। এরা ডাক্তার না রোগির লোক প্রথমে
বোঝা যায়নি। সেবিকা বলার পর জানা যায় ওই দুজন ইন্টার্নি ডাক্তার।
জরুরি বিভাগে নাজিম নামে একজন রোগি নিয়ে গেলে কর্তব্যরত
ডাক্তার বিচিত্র মল্লিক তাকে ভর্তি করে মেডিসিন ওয়ার্ডে পাঠান।
স্বজনরা রোগী ভর্তির টিকিট নিয়ে ডাক্তারদের কাছে যায়। ইন্টার্নি
ডাক্তার চেয়ার থেকে উঠে রোগী না দেখে স্বজনের কাছে জেরা শুরু করে
রোগীর কি হয়েছে, কখন হয়েছে, মুখ বেকিয়েছে কিনা ইত্যাদি। এ
সব প্রশ্নের উত্তর ইন্টার্নি ডাক্তারকে না দেয়ায় সে ক্ষুব্ধ হয়ে চেয়ার
থেকে উঠে মেডিসিন ওয়ার্ডের ফ্লোরে রোগী দেখে কোন ঔষধ লেখে
না। চেয়ার থেকে উঠে যেয়ে রোগি দেখার কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি
রোগীর সিটি স্ক্যান লিখে দেয়। অথচ রোগীর সিটি স্ক্যান লেখার মতো
কোন লক্ষন নেই। জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত ডাক্তার বিচিত্র মল্লিক বলেন,
রোগীর শরীর দুর্বল স্যালাইন দিলে ঠিক হয়ে যাবে। অথচ বিশেজ্ঞ ডাক্তার
ছাড়া ইন্টার্নি ডাক্তারের সিটি স্ক্যান লেখার কোন নিয়ম নেই।

মেডিসিন ওয়ার্ডে ইন্টর্নি ডাক্তার রাগে ক্ষোভে সিটি স্ক্যান লিখে
দেয়। সিটি স্ক্যান লিখে দেয়ার পর ডাক্তারের নাম জানতে চাইলে বলে না।
পরে মোবাইলে হাসপাতালের সুপার হারুন আর রশিদকে বিষয়টি বলা হলে
তখন ডাক্তার নিজের পরিচয় দিয়ে বলে স্যার আমি ইন্টার্নি ডাক্তার
শিশির। কিন্তু সুপারকে বলে শুধু ডাক্তারের নাম জানা ছাড়া কোন লাভ
হয়নি। সুপারও ইন্টার্নি ডাক্তারের পক্ষ নিয়ে রোগীর স্বজনদের বলে ওরা

ছোট মানুষ আপনারা রোগীর সম্পর্কে বললে সমস্যা কি। নিয়ম রয়েছে
ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি হলে ডাক্তার চেয়ার থেকে উঠে যেয়ে রোগীর
চিকিৎসা দিবে। কিন্তু জেনারেল হাসপাতালের ইন্টার্নি ডাক্তাররা
ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি হলে চেয়ার থেকে উঠে না। এরা রোগী না দেখেই
স্বজনদের কাছ থেকে রোগীর বর্ননা শুনে ঔষুধ লিখে চিকিৎসা দেয়।
সুপার হারুন অর রশিদের কাছে হাসপাতালে রেজিষ্ট্রার্ড ডাক্তারের
ডিউটি আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ডাক্তাররাও তো মানুষ
তাদেরও বিশ্রাম দরকার। অথচ হাসপাতালে প্রতিদিন ডিউটি করার জন্য
রোষ্টার ভাগ করা থাকে। তারপরও ডাক্তাররা ফাকি মারে। ডিউটি করে না। আর
ডাক্তারদের অনৈতিক কাজের সহযোগিতা করে সুপার হারন অর রশিদ।
অভিযোগ রয়েছে জেনারেল হাসপাতালে সুপার হারন অর রশিদ জামায়াতি
ইসলামির রাজনীতির সাথে সক্রিয়। তার বাড়ি মনিরামপুর উপজেলার
ঝাপায়। তার আতœীয় স্বজন সবাই জামায়াতের রাজনীতির সাথে
জড়িত। ডাক্তার হারন অর রশিদকে জেনারলে হাসপাতালের সুপারের দায়িত্ব
দেয়ার পর থেকেই হাপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থ ভেঙ্গে পড়েছে।