যশোর ঘুরে গেল পরীক্ষামূলক ব্লাস্টার ট্রেন খুশি স্থানীয়রা

যশোরের রূপদিয়া স্টেশন ঘুরে গেল ফরিদপুর ভাঙ্গার একটি রেলের ব্লাস্ট ট্রেন

শনিবার সকাল পৌনে নয়টার সময় পরিক্ষা মুলক ভাঙ্গা থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনটি সকাল ১০ টা ২৫ মিনিটে যশোর রূপদিয়া রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছে। প্রায় ১০ মিনিট এই স্টেশনে রেলটি অবস্থান করে। এরপর আবার ভাঙ্গার দিকে রওয়ানা হয় ট্রেনটি।

ভাঙ্গা-যশোর প্রথম ধাপের পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল সম্পন্ন হলো।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন,কোনও রকম ঝামেলা ছাড়াই পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল সম্পন্ন হয়েছে। আগামী জুন নাগাদ এই পথে বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচল শুরু হতে পারে জানিয়েছেন তারা।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আওতায় আনতে এই রেলপথ নির্মাণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ অর্থায়নে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘চায়না রেলওয়ে গ্রুপ’ (সিআরইসি) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে। ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত ব্রডগেজ ওই রেলপথে ভাঙ্গা, কাশিয়ানী এবং যশোরের পদ্মবিলা ও সিঙ্গিয়াতে রেলওয়ে জংশন থাকছে। এ ছাড়া নগরকান্দা, মুকসুদপুর, মহেশপুর, লোহাগড়া, নড়াইল এবং যশোরের জামদিয়া ও রূপদিয়াতে রেলস্টেশন হয়েছে। কাজের অংশ হিসেবে আজ ও আগামীকাল রোববার দুই দিন ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত বিভিন্ন গতিতে ট্রেন চালিয়ে নির্মাণ অবস্থা পরীক্ষা করা হবে।

পরীক্ষামূলক অংশ নেয়া রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা জানান, ভাঙ্গা থেকে যশোর অংশের ৮৭ দশমিক ৩২ কিলোমিটার পথ ৮৪ কিলোমিটার বেগে পাড়ি দিয়েছেন তারা। পথে কোথাও কোনও সমস্যার সম্মুখীন হননি তারা। আশা করা যাচ্ছে এ রুটে আগামী জুনের মধ্যেই বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন পরিচালনা করা সম্ভব হবে।

এদিকে, পদ্মা রেল সেতু হয়ে নতুন ট্রেন চলাচলের সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় খুশি স্থানীয়রা। তাদের দাবি, এলাকার উন্নয়নের পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্য ও যোগাযোগ ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত সৃষ্টি হয়েছে।

রেলওয়ে সূত্রমতে, এ প্রকল্প শেষের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। মাঠপর্যায়ে প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালে। ২০১৬ সালের ৩ মে একনেকে ‘পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প’ নামে এটির অনুমোদন হয়। এই প্রকল্পের ব্যয় হয়েছে ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা।

পরীক্ষামূলক ট্রেনের চালক বলেন, সকাল ৮ টা ৪০ মিনিটে আমরা ভাঙ্গা ছেড়ে আসি। সকাল ১০ টা ৩৫ মিনিটে যশোরের রূপদিয়া স্টেশনে পৌঁছেছি।

সহকারী লোকো মাস্টার হাসান মতিউর রহমান জানান, ৬০ কিমি বেগে ট্রেনটি এসেছে। যাওয়ার সময় আরও ২০ কিমি বেগে যাবে। এরপর যাত্রীবাহী যে ট্রায়াল ট্রেন ১২০ কিমি বেগে আসবে বলে তিনি জানান।

যশোর রেলওয়ের স্টেশন মাস্টার আয়নাল হাসান বলেন, এই ট্রেন যশোরবাসীর জন্যে প্রধানমন্ত্রীর ঈদের উপহার। ট্রেনটি ৬০ থেকে ৮০ কিমি বেগে যশোরে আসে। যাওয়ার সময় আরও বেশি বেগে যাবে। আগামী জুন মাস নাগাদ এই রুটে বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হতে পারে বলে তিনি জানান।