প্রতিটি নাগরিককে স্বাবলম্বী করতে কাজ করছে সরকার: প্রধানমন্ত্রী

প্রতিটি নাগরিককে স্বাবলম্বী করতে কাজ করছে সরকার: প্রধানমন্ত্রী শুক্রবার (১০ মে) টুংগীপাড়ায় উপজেলা আ.লীগ কার্যালয়ে দাড়িয়াকুল আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্পের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিএমও

টুঙ্গিপাড়া থেকে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার বহুমুখী কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের প্রতিটি নাগরিককে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে কাজ করছে।

শুক্রবার (মে ১০) দুপুরে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দাড়িয়াকুল গ্রাম উন্নয়ন সমিতির সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা চাই, সারা বাংলাদেশে এভাবে মানুষকে নিয়ে যৌথভাবে উৎপাদন বৃদ্ধি, সঞ্চয়ের মাধ্যমে মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি এবং সঞ্চয়ের মাধ্যমে জীবনমান উন্নত করতে।

 

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমরা ১৯৯৬ সালে ২১ বছর পর সরকারে আসি।

 

সরকারে আসার পর থেকে আমাদের প্রচেষ্টা বাংলাদেশকে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করব এবং জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করেই আমরা কাজ করব। তখন এই একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পটা, ওই যে জাতির পিতা সমবায় করতে চেয়েছিলেন তারই আলোকে আমরা এটা গড়ে তুলি।

 

তিনি বলেন, প্রতিটি পরিবারের জন্য এটি হচ্ছে ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের ব্যবস্থা। ক্ষুদ্র ঋণের অধিক যে ট্যাক্স দিতে হয়, সেটা দিতে হবে না।

 

টাকা নিয়ে অতিমাত্রায় সুদ দিতে হয়, সেটা দিতে হবে না। বরং সমবায়ের মাধ্যমে আমরা প্রত্যেকটা পরিবারকে যে সহযোগিতা করব, সেটা থেকে যে উৎপাদন হবে, সেই উৎপাদন থেকে কেউ যদি ১০০ টাকা জমাতে পারে তাহলে সরকারের কাছ থেকে আরও ১০০ টাকা দেওয়া হবে দুই বছরের জন্য। সেটা জমা হবে তার মূলধন হিসেবে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি এর জন্য একটা ব্যাংক তৈরি করেছি, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক। এই পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে এটা থাকবে। প্রকল্প থেকে যারা একটু স্বাবলম্বী হয়ে; পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকেই তাদের টাকা থাকবে তার মূলধন হিসেবে, তিনি ব্যবসা বা যেটাই করেন—হাঁস-মুরগি পালন বা চাষ করা, যে যেই কাজ পারবে সেই কাজ করে ওই ব্যাংক থেকে লোন নেবেন এবং কাজ করে টাকা শোধ দেবেন। অর্থাৎ সম্পূর্ণভাবে স্বাবলম্বী হবে।

 

তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো ২০০১-এ বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসে এটাও বন্ধ করে দেয় এক রকম বলতে গেলে। এর কার্যকারিতাই থাকে না। যা হোক, আমরা পরবর্তীতে সরকারে এসেছি এবং কাজ করে যাচ্ছি। একে একে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকটাকে আরও উন্নত করে গড়ে তোলা এবং সেই সঙ্গে এই ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণ দেওয়া, আর ঋণের সঙ্গে যারা সঞ্চয় করতে পারবে, পারলে তাদের এই আর্থিক সহায়তা দিয়েই স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলা। সেই কাজটা কিন্তু আমরা করে যাচ্ছি।

এ সময় পহেলা আষাঢ় থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও দেশবাসীকে বৃক্ষ রোপণের আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে সুবিধাবঞ্চিতদের মাঝে বিভিন্ন ধরনের কৃষি ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করেন।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার ছোট বোন শেখ রেহানা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ১ জনকে ১টি ধান মাড়াই মেশিন, ২ জনকে দুটি ল্যাপটপ, শিক্ষা সহায়তা হিসেবে ৩৮ শিক্ষার্থীকে ৪০ হাজার টাকা করে আর্থিক অনুদান, ১০ জনকে ১০টি ভ্যান, ৩০টি সেলাই মেশিন, ৩৮ জন শিক্ষার্থীকে শিক্ষা উপকরণ হিসেবে স্কুল ড্রেস, স্কুল ব্যাগ, কাগজ-কলম, ছাতা দেওয়া হয়।

এছাড়া ১০ জনকে ১০টি বাই-সাইকেল, ১০ জনকে বীজ, সারসহ পুষ্টি বাগান উপকরণ এবং একজনকে কবুতর খামার করার জন্য ১০ জোড়া কবুতর দেন।

এর আগে সকালে টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।