যশোরের শার্শা উপজেলার শ্যামলাগাছীতে উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মোস্তফা কামাল মিন্টু তান্ডব চালিয়েছে বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় দুইজনের মাথা ফেটেছে ও আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাদের একজন যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তবে তিনি এই তান্ডব অন্য কোনো দলের নেতাকর্মীদের ওপর নয়, বরং নিজ দল বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর চালিয়েছেন। ভুক্তভোগিরা অভিযোগ করেছেন,সোমবার বিকেলে তিনটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত চলে এই তান্ডব। মিন্টু এবং তার সহযোগীরা বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর এ হামলা চালিয়েছে। তাদের অভিযোগ,মিন্টু রাজনৈতিক প্রতি হিংসার কারণে তাদের ওপর এই হামলা যারা তার সাথে রাজনীতি করতে রাজি হয়নি, তাদেরকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন তিনি । যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোস্তফা কামাল মিন্টু।
অভিযোগ করা হয়েছে,মিন্টুর হামলার শিকার হয়েছেন তার দুই সৎ ভাই পিন্টু ও লাল্টু রহমান। এছাড়া শ্যামলাগাছী গ্রামের বাসিন্দা এমএম কলেজের ছাত্রদল নেতা আল-আমিন,তার বাবা বিএনপি কর্মী দ্বীন মোহাম্মদ, শার্শা উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক লাল্টু, স্বেচ্ছাসেবকদলের সদস্য হায়দার,ছাত্রদল নেতা বিল্লাল ও রবিসহ আরও অনেকেই হামলার শিকার হন। এসময় কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুরও চালানো হয়।
ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, ৫ আগস্টের পর থেকেই মিন্টু তাদের শাসিয়ে আসছিলেন যে,তার সাথে রাজনীতি করতে হবে। তার কথার বাইরে গেলে কারও হাতপা থাকবে না,এমনকি হত্যার হুমকিও তিনি দিতেন। তার এ আচরণ ও নানা অনিয়মের কারণে অনেকেই তাকে অপছন্দ করতেন।এ কারণেই স্থানীয়রা জানান, মিন্টু ও তার সহযোগি মুজিদ, আমির, ইব্রাহিম, মহিদুল,আইয়ুব,হাবিব, হামজা,শাহিদুল, মাহাবুরসহ ১০/১২ জন এসে তাদের ওপর হামলা চালায়। এসময় পিন্টু,আল-আমিন ও তার বাবা দ্বীন মোহাম্মদের মাথা ফেটে যায়, রবির হাত ভেঙে যায় এবং অন্যান্যদের শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত লাগে। এসময় মিন্টু অনেকের বাড়িতে নিজে গিয়ে হুমকি দিয়ে আসেন।
স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী হায়দার জানান,আওয়ামী লীগ শাসন আমলে মিন্টু এলাকায় থাকতে পারেননি,কারণ তিনি চরম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ৫ আগস্টের পর বাড়ি ফিরে আসেন,কিন্তু এখন মিন্টু তাদের জন্য আতঙ্ক হয়ে উঠেছেন।
যশোর এমএম কলেজের ছাত্রদলের কর্মী শ্যামলগাছী গ্রামের মেহেদী হাসান বলেন, মিন্টু ও তার লোকজন তার বাড়িতে গিয়ে তার মাকে লাঞ্চিত করেছেন। যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আল-আমিন বলেন, মিন্টু আগেও তাকে হুমকি দিয়েছিলেন। সোমবার, মিন্টু ও তার লোকজন একটি ছোট গরু কিনে বড় গরুটি গোয়াল থেকে বের করার চেষ্টা করেন। বাধা দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে তারা আল-আমিন ও তার বাবাকে মারধর করেন,ফলে আল-আমিনের ও তার বাবার মাথা ফেটে যায়। আল-আমিন যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসলেও তার বাবাকে আসতে দেওয়া হয়নি। ভুক্তোভুগিরা বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষন করেন।
এ বিষয়ে শার্শা উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোস্তফা কামাল মিন্টু বলেন, তার দুই ভাইসহ তার সহযোগিদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হযে উঠেছে শ্যামলাগাছীর বাসিন্দারা। ওই গ্রামের চম্পা,রুমাসহ অনেক নারীরাও তাদের মারপিটের শিকার হয়েছেন। এছাড়া ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে বিভিন্ন মানুষের কাছে চাঁদাদাবি করে আসছেন দুইভাইসহ তাদের সহযোগিরা। অবৈধভাবে ডিস ও বালুর ব্যবসা দখলে নিচ্ছেন। এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করা হলেও তারা শোনেননি। তিনি আরও বলেন, শ্যামলগাছী তার বাড়ি হলেও যশোর জজ আদালতে আইনজীবী হওয়ায় তাকে বেশীরভাগ সময়ে যশোরে থাকতে হয়। তার কাছে বিভিন্নসময় অভিযোগ করা হয়। মারামারির শেষ পর্যায় তিনি গিয়েছেন। তার সাথেই রাজনীতি করতে হবে এমনটি না, মুলত তাদের উপর অতিষ্ঠ হয়ে তিনি সৎ দুইভাইসহ তাদের সহযোগিদের শাসন করেছেন বলে দাবি করেন।