ঝিনাইদহের টিকারী বাজার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শহিদ মিনার ভেঙে ফেলার ভিডিও এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল। যা নিয়ে বইছে নিন্দার ঝড়। তবে বিদ্যালয়টির শিক্ষকরা বলছেন, জরাজীর্ণ শহিদ মিনারটির পাশে নতুন শহিদ মিনার নির্মাণ করায় পুরাতনটি অপসারণ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুন্ম করতে কুচক্রী মহল ভিডিওটি ভিন্নভাবে প্রচার করেছে। জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি তাদের।
শিক্ষার্থীরা স্কুলের শহিদ মিনার ভাঙছে এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে স্কুলের শিক্ষার্থীরা মিলে শহিদ মিনার ভাংচুর করছে। আর সেই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে মাতৃভাষা দিবসে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা না জানিয়ে উল্টো শহীদ মিনার ভাংচুর করা হচ্ছে দাবি করে পোস্ট করা হচ্ছে। ভাইরাল ভিডিওটি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার টিকারী বাজার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের।
স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায়, টিকারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও টিকারী বাজার মাধ্যমিক বিদ্যালয় পাশাপাশি অবস্থিত। ১৯৮৮ সালে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে একটি শহিদ মিনার নির্মাণ করা হয়। দীর্ঘদিন ব্যবহার হওয়ায় সেটির অবস্থা জরাজীর্ণ। তাই ২০২৩ সালে পুরাতন শহিদ মিনারটির পাশেই নতুন একটি শহিদ মিনার নির্মাণ করা হয়। বিদ্যালয়ে খেলার মাঠ সংকট থাকা ও নতুন শহিদ মিনারের পাশে জরাজীর্ণ শহীদ মিনার থাকায় সম্প্রতি তা অপসারণ করা হয়। অপসারণের সময় এক শিক্ষার্থী ভাঙচুরের ভিডিও ধারণ করে তার টিকটক আইডিতে পোস্ট করে। পরবর্তীতে ওই ভিডিও ভিন্নভাবে ও উদ্যেশ্য প্রনোদিত দাবি করে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হয়। এরপর শুরু হয় নানারকম বিরুপ মন্তব্য। যা নিয়ে শিক্ষার্থীরা পড়ছেন বিপাকে। পরিবার ও সমাজে হতে হচ্ছে হেয় প্রতিপন্ন। যার প্রভাব পড়ছে পড়ালেখায়।
ইমন নামের এক শিক্ষার্থী জানান, বিদ্যালয়ে খেলার মাঠ সংকট থাকা ও নতুন শহিদ মিনারের পাশে জরাজীর্ণ শহীদ মিনার থাকায় সম্প্রতি তা অপসারণ করা হয়। যা বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী টিকটকে আপলোড করায় ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে।
টিকারী বাজার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নাম না প্রকাশে ইচ্ছুক একজন সহকারী শিক্ষক জানান, শহীদ মিনার ভাংচুর হয়েছে বলে অপপ্রচার চালানো হয়েছে। অপপ্রচারকারীদের শাস্তির দাবি বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকদের।
টিকারী বাজার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নওশের আলী জানান, আমাদের প্রতিষ্ঠানের সুমান ক্ষুণœ করতে উদ্যেশ্য প্রনোদিতভাবে এই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, পুরাতন শহিদ মিনারটি অপসারণ করা হয় গত ১২ ফেব্রুয়ারী। আর ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে ২১শে ফেব্রয়ারী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের দিন। যা নিয়ে সারাদেশে বইছে নিন্দার ঝড়।