ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে যশোরে ইসলামী আন্দোলনের বিশাল জনসভা

শুক্রবার বিকেলে যশোর ঈদগাহ ময়দানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, যশোর জেলা শাখার উদ্যোগে এক বিশাল জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা সভাপতি মিয়া মুহাম্মদ আব্দুল হালিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর,আলহাজ্ব মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করিম (চরমোনাই পীর)।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, “শুধু নেতার পরিবর্তন করলেই হবে না, দেশের প্রকৃত কল্যাণের জন্য নীতির সংস্কার দরকার। দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে দুর্নীতি, দুঃশাসন ও লুটপাট বন্ধ করে ইসলামের ন্যায়ভিত্তিক শাসন ব্যবস্থা কায়েম করতে হবে। ইসলামের মহান আদর্শ ছাড়া কল্যাণরাষ্ট্র গঠন কখনোই সম্ভব নয়।”
তিনি ফিলিস্তিনে ইসরাইলি আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “ইহুদিবাদী ইসরাইল ফিলিস্তিনে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। হাজার হাজার নারী, শিশু, সাংবাদিক, সাধারণ মানুষ নির্মমভাবে শহীদ হচ্ছে। গাজা প্রদেশকে একটি খোলা জেলখানায় পরিণত করেছে। মুসলমানদের প্রথম কিবলা বায়তুল মুকাদ্দাসকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। এটি মুসলমানদের কাছে ফিরিয়ে আনতেই হবে।”
তিনি সকল ইসলামী দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে শরিক হওয়ার আহ্বান জানান এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলনের প্রতীক “হাতপাখা” কে বিজয়ী করতে সকলকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দলের নায়েবে আমির হযরত মাওলানা হাফেজ আব্দুল আউয়াল বলেন, “বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের পরও ষড়যন্ত্র থেমে নেই। ইসলামী আন্দোলনের সকল নেতাকর্মীকে অতন্দ্র প্রহরীর ন্যায় এসব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রস্তুত থাকতে হবে।”
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) মাওলানা মোঃ শোয়াইব হোসেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ডীন প্রফেসর ডঃ মুহাম্মদ ফারুক আহমাদ, ইসলামী আইনজীবী পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নূর ইসলাম নুরুল,লেখক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট অধ্যক্ষ নাজমুল হুদা, আইনজীবী পরিষদের কেন্দ্রীয় জয়েন্ট সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট বায়েজিদ হুসাইন প্রমুখ।
বক্তারা জুলাই মাসে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচার, গত ১৬ বছরে গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন। দুর্নীতিবাজদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রের কোষাগারে জমা দেওয়ার দাবি জানানো হয়।
খুলনা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা শোয়াইব হোসেন বলেন,“বিদ্যমান নির্বাচন ব্যবস্থা বাতিল করে সংখ্যানুপাতিক ভোটপ্রক্রিয়া চালু করতে হবে, যাতে প্রতিটি দলের ভোট শতাংশ অনুযায়ী সংসদীয় আসন বরাদ্দ হয়। এটি হলে জনগণের মতামতের প্রকৃত প্রতিফলন ঘটবে।”
জনসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজুল আলম খোকা, জয়েন্ট সেক্রেটারি এইচএম মহসিন, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি হাফেজ আব্দুর রশিদ, প্রচার সম্পাদক মোঃ কামরুজ্জামান, অর্থ সম্পাদক এটিএম আখতারুজ্জামান তাজু, দপ্তর সম্পাদক মুফতি মঈন উদ্দিন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মোঃ আসাদুজ্জামান, শিল্প বাণিজ্য সম্পাদক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মুন্না, ওলামা-মাশায়েখ পরিষদের জেলা সভাপতি মাওলানা আব্দুল হালিম, শ্রমিক আন্দোলন জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবুল বাশার, যুব আন্দোলন জেলা সভাপতি মুফতি আবুজর বিন হাফিজ, ছাত্র আন্দোলন জেলা সভাপতি মাওলানা ইমরান হোসাইন, এবং জেলার বিভিন্ন থানার সভাপতি ও নেতৃবৃন্দ।