পহেলগাঁওয়ের ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাকিস্তানপন্থী মন্তব্য করায় ভারতের আসাম রাজ্যে একদিনে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারদের বেশিরভাগই মুসলিম।
শনিবার (২৬ মার্চ) এনডিটিভি অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় অভিযান চালিয়ে এদের আটক করে আসাম পুলিশ। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া বার্তায় মুখ্যমন্ত্রী জানান, আসাম রাজ্যে কেউ যদি কাশ্মিরে সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে কিংবা পাকিস্তানের পক্ষ নেয়, তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গ্রেপ্তাদের নাম ও রাজ্যের কোন জেলার বাসিন্দা সে তালিকাও দিয়েছেন হিমন্ত।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন— মো. জাবির হোসাইন (হাইলাকান্দি), এম এ কে বাহাউদ্দিন ও মো. জাভেদ মজুমদার (শিলচর), মো. আমিনুল ইসলাম (নগাঁও), মো. সাহিল আলী (শিভাসনগর), মো. জারিফ আলী (বেরপাতা), অনিল বানিয়া (বিশ্বনাথ)। বাকি দুজনের নাম তালিকায় পাওয়া যায়নি।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার করা হয় আসাম বিধানসভার বিরোধী দল অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (এআইইউডিএফ) বিধায়ক আমিনুল ইসলামকে। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার সময় সামাজিকমাধ্যমে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে তিনি দাবি করেছিলেন, হামলাটি বিজেপি ও প্রধানমন্ত্রী মোদির ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র’। এই পুরোনো ভিডিওটি সম্প্রতি আবার ভাইরাল হয়অ পরে পেহেলগাঁও হামলার প্রেক্ষাপটে আমিনুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রাজ্য প্রশাসনের বরাতে জানা গেছে, আমিনুল ইসলামকে ইতোমধ্যে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গত ২২ এপ্রিল, মঙ্গলবার বিকেলে জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগাঁও জেলার বৈসরণ এলাকায় পর্যটকদের ওপর চালানো হয় নির্মম হামলা। কাশ্মিরভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই তৈয়বার উপশাখা দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) এই হামলার দায় স্বীকার করে।
হামলাকারীরা স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র নিয়ে অতর্কিতে গুলি চালায় পর্যটকদের ওপর, নিহত হন অন্তত ২৮ জন। আহত হন আরও অনেকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর কাশ্মিরে এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাণঘাতী হামলা।
এ হামলার জন্য সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার দ্রুতই কড়া প্রতিক্রিয়া জানায়। সিন্ধু পানিচুক্তি সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা, তথ্য আদান-প্রদানে রুদ্ধতা, সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদারসহ একাধিক পদক্ষেপ নেয় ভারত। জবাবে পাকিস্তানও ভারতের জন্য আকাশ ও স্থলসীমা সীমিত করার ইঙ্গিতসহ কূটনৈতিকভাবে পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণের ঘোষণা দেয়। ফলে দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে।