যশোরে বৈষম্য বিরোধী নেতার সংবাদ সম্মেলনে দাবি, ছাত্রদল নেতার হেনস্তার চেষ্টা

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যশোর জেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক বি এম আকাশ সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছেন, এক তরুণী তার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক মামলা করানোর যে অভিযোগ তুলেছেন সেটি ভিত্তিহীন। প্রকৃতপক্ষে তিনি ঘটনার দিন ঢাকায় অবস্থান করছিলেন।

সোমবার সকালে প্রেসক্লাব যশোরে এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগের কথা অস্বীকার করেন বিএম আকাশ। তিনি অভিযোগকারী তরুণীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করার ঘোষণাও দিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে বি এম আকাশ জানান, সম্পূর্ণ ঘটনাটি পূর্ব পরিকল্পিত এবং এর পেছনে একটি চক্র কাজ করছে। গত শুক্রবার (২৩মে) রাতে তিনি সোহাগ পরিবহনে ঢাকা থেকে যশোর আসার পথে একটি অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন পান। ফোনে একজন তরুণী নিজেকে মাহি পরিচয় দিয়ে কুমিল্লা থেকে যশোরে আসার কথা জানান এবং ধর্ষণের শিকার হয়েছেন দাবি করে তাঁর কাছে সাহায্য চান। তরুণীটি সে সময় একটি থানায় আশ্রয় নিয়েছিলেন বলে জানান। আকাশ তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে ওসি সাহেবের সাথে কথা বলতে বলেন এবং ওসির সাথে যোগাযোগ করে মেয়েটির নিরাপত্তার জন্য অনুরোধ জানান।
এরপর আকাশ তাঁর সংগঠন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বিষয়টি জানান। যারা ফ্রি আছেন, তাঁদের থানায় গিয়ে মেয়েটিকে সহযোগিতা করার অনুরোধ করেন। পরবর্তীতে মেয়েটি আকাশকে আবার ফোন করে ছেলেটির বিরুদ্ধে মামলা করার এবং তাকে বিয়ে করার দাবি জানায়। মেয়েটি সাংবাদিকদের বিষয়টি জানাতে এবং তার ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও হোয়াটসঅ্যাপে পাঠাতে চায়।
আকাশ জানান, এরপর তাকে ০১৮৬৯১৫৬১৮৬ নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে অসংখ্য ছবি ও ভিডিও পাঠানো হয়। যেখানে মেয়েটি সাংবাদিকদের দিয়ে নিউজ করার জন্য অনুরোধ করে এবং একটি ভিডিও বার্তায় যশোরবাসী ও একটি দলের কাছে সাহায্য চায়।

তবে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য জি এম মুন্না থানায় গিয়ে ওসি সাহেবের সাথে কথা বলার পর পরিস্থিতি ভিন্ন মোড় নেয়। ওসি সাহেব আকাশকে জানান যে রাশেদ খান (যিনি আকাশকে বিষয়টি অবগত করেছিলেন) তাঁকে ফোন করেছেন এবং জানিয়েছেন যে মেয়েটির প্রয়োজনীয় সকল সাহায্য থানা থেকে করা হবে এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সকল নেতাকর্মী তার পাশে আছেন। এরপরই মেয়েটি অভিযোগ করেন যে তাকে জোর করে মামলা করানো হয়েছে এবং তার অভিযোগ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা।

সংবাদ সম্মেলনে বি এম আকাশ স্পষ্টভাবে জানান, ওই তরুণীর বা তরুণ রাফার সাথে তার কোনো ব্যক্তিগত সম্পর্ক নেই। কে ওই মেয়ের কাছে তাঁর নম্বর দিয়েছিলো, সে সম্পর্কে তিনি অবগত নন। তিনি মনে করেন, পুরো বিষয়টি পূর্ব পরিকল্পিত। সংগঠনের অন্যান্য নেতাকর্মীর সাথে আলোচনা করে সাংগঠনিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে এই মিথ্যা অভিযোগের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করা হবে বলে তিনি জানান। তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, ছাত্রদল ও ছাত্রলীগের কর্মী-সমর্থকরা এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাঁকে হেনস্তা করছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহেদ মো. রিজভী, সদস্য সচিব (ভারপ্রাপ্ত) জান্নাতুল ফোয়ারা অন্তরা, সংগঠক জি. এম. মুন্না এবং সদস্য মেহেদি হাসান প্রমুখ।