গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি ও যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির সংসদ সদস্য টিউলিপ সিদ্দিক এবং তার আইনজীবী নিজেদের দেশকে (যুক্তরাজ্য) ছোট করছেন বলে মন্তব্য করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান আবদুল মোমেন।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ব্রিটেনের রাজনীতি কি এতটাই ভঙ্গুর যে, একজনের নামে মামলা হলেই দেশটির রাজনীতি ধসে পড়বে? এটা কি হতে পারে? আমাদের কার্যপরিধিতে রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) রাজধানীর সেগুনবাগিচার দুদক প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
গত ২৩ জুন তিনি ও তার আইনজীবীর নোটিশের মাধ্যমে অভিযোগ তোলেন যে, দুদক ও অন্তর্বর্তী সরকার ব্রিটিশ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করছে এবং তার সুনাম ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা করছে।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, টিউলিপের আইনজীবীর শব্দচয়ন দেখে মনে হচ্ছে তারা নিজেদের (যুক্তরাজ্য) দেশকে ছোট করছেন এবং প্রমাণের চেষ্টা করছেন ব্রিটেনের রাজনীতি ভঙ্গুর। আমাদের পক্ষ থেকে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই। টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে মামলাটি কোনোভাবেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নয়।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, এটা কাউকে ছোট করার মামলা নয়। অনেক আসামির মতো টিউলিপও একজন অভিযুক্ত। আমাদের এর চেয়েও বড় মামলা আছে।
টিউলিপের উদ্দেশে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, চিঠিপত্র দিয়ে মামলা নিষ্পত্তির সুযোগ নেই। অপরাধ যেখানে হয়েছে, সেখানেই মোকাবিলা করতে হবে। কোর্টে মামলা চলছে, তাকে কোর্টে হাজির হয়ে মামলা মোকাবিলা করতে হবে।
আবদুল মোমেন আরও বলেন, টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশের নাগরিক। তার জাতীয় পরিচয়পত্র ও টিআইএন আছে। সেই সূত্রেই তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে মামলা করা হয়েছে। আশা করছি, টিউলিপ দেশের আইন মেনে চলবেন এবং যথাযথভাবে বিচারের মুখোমুখি হবেন।
উল্লেখ্য, ঢাকার গুলশানের একটি প্লট ‘অবৈধভাবে হস্তান্তরের ব্যবস্থা’ করিয়ে দিয়ে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের কাছ থেকে ‘ঘুস’ হিসেবে একটি ফ্ল্যাট নেওয়ার অভিযোগে এরই মধ্যে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার ভাগ্নি ও যুক্তরাজ্যের এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে গত ১৫ এপ্রিল মামলা করে সংস্থাটি। দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে টিউলিপ সিদ্দিকসহ রাজউকের দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করেন সংস্থার সহকারী পরিচালক মনিরুল ইসলাম।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন- রাজউকের সাবেক সহকারী আইন উপদেষ্টা শাহ মো. খসরুজ্জামান ও সর্দার মোশারফ হোসেন।
দুর্নীতির এই অভিযোগে চলতি বছরের জানুয়ারিতে টিউলিপ যুক্তরাজ্যের প্রতিমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বাধ্য হন।