যশোর সদর উপজেলার তালবাড়িয়া দক্ষিণপাড়ায় দীর্ঘদিন ধরে ভেজাল মোবিল ও ভেজাল দস্তা সার উৎপাদন কারখানা চালাচ্ছেন সামাউল ইসলাম ইমন নামে এক ব্যক্তি। এ দুটি অবৈধ কারবারে স্থানীয় পরিবেশ ও কৃষি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানেও তিনি রয়েছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,মোশারফ হোসেনের ছেলে সামাউল ইসলাম ইমন তার বাড়ির অদূরে সড়কের পাশে ভেজাল মোবিল উৎপাদনের কারখানা গড়ে তুলেছেন। কারখানার ধোঁয়া ও দুর্গন্ধে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। অনেকের শ্বাসকষ্ট, চোখ জ্বালাপোড়া ও অন্যান্য স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখা দিচ্ছে।
এ ছাড়া কারখানার বর্জ্য পাশের পুকুরে ফেলায় পানি পুরোপুরি দূষিত হয়ে পড়েছে। মাছ মারা যাচ্ছে এবং পুকুর ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ভয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না স্থানীয়রা।
এলাকাবাসী জানায়, ইমনের আরেকটি ব্যবসা হলো ভেজাল দস্তা সার উৎপাদন। তিনি নিয়মিত কারখানার অবস্থান পরিবর্তন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ফাঁকি দেন। তালবাড়িয়া, ঘুরুলিয়া ও জোত হাশিমপুর এলাকায় রয়েছে তার একাধিক গোপন কারখানা।
২০১৯ সালে র্যাব ও কৃষি কর্মকর্তারা অভিযান চালিয়ে এক লাখ টাকা জরিমানা করে কারখানা সিলগালা করলেও ইমন অল্পদিনের মধ্যেই নতুন জায়গায় উৎপাদন শুরু করেন। এসব নিম্নমানের সার বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে। কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সার মাটি ও ফসলের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
সূত্র মতে, রাজনৈতিক প্রভাব ও অর্থবলকে কাজে লাগিয়ে ইমন বছরের পর বছর ধরে এই অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। গত বছরের আগস্টে এক অভিযানের পর কিছুদিন গা-ঢাকা দিলেও বর্তমানে তিনি আবার পুরো দমে কারখানা চালাচ্ছেন।
এ বিষয়ে যশোর সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মোছাঃ রাজিয়া সুলতানা বলেন,“বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে। অভিযোগ সত্য হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
যশোর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ ইমদাদুল হক বলেন, “পরিবেশ দূষণ সংক্রান্ত অভিযোগ পেলে অবশ্যই জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এলাকাবাসী যশোর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন,“ভেজাল কারখানা বন্ধ করে ইমনকে আইনের আওতায় আনা না হলে পরিবেশ ও কৃষি আরও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে।”
ইমনের বক্তব্য নিতে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।