ডেস্ক রিপোর্ট: খুলনা সিটি নির্বাচনে অনিয়মের ঘটনায় বন্ধ ঘোষিত তিন ভোটকেন্দ্রে ব্যালট পেপারে সিল মারাসহ অনিয়মের সঙ্গে জড়িত এবং সহযোগীদের চিহ্নিত করেছে তদন্ত কমিটি। এক্ষেত্রে তিন কেন্দ্রের দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তাদের রহস্যজনক ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা।
তদন্তে উঠে এসেছে, এ সময় ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা অনেকটা চাপের মুখে ব্যালট পেপার দিতে বাধ্য হয়েছেন। বিএনপির এজেন্টরাও তখন এ বিষয়ে কোনো কথা বলেননি। তবে তারা অনেকটা ডামি এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন বলে মনে করছেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা। এদিকে নির্বাচন কমিশনের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন তদন্ত কমিটির প্রধান ও ইসির যুগ্ম সচিব খোন্দকার মিজানুর রহমান। এ প্রতিবেদনে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনার সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তদন্ত কমিটির একজন কর্মকর্তা জানান, নারী ভোটকেন্দ্রে ব্যালট পেপারে সিল মারতে পুরুষরা কীভাবে প্রবেশ করল, প্রশ্নের জবাবে পুলিশ কর্মকর্তারা তদন্ত কমিটিকে বলেছেন, ভোটারের লাইনে যারাই ছিল তাদের ঢুকতে দিয়েছি। এর চেয়ে আর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি তারা।
জানা গেছে, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা তদন্ত কমিটিকে বলেছেন, বেলা ১১টা থেকে ১২ পর্যন্ত ভোটকেন্দ্রের ভিতরে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল দুর্বৃত্তরা। তারা ভোটকেন্দ্রের ভিতরে অমানবিক আচরণ ও ভয়ানক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল।
ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভোটগ্রহণের দিন (১৫ মে) নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কারণে তিনটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ বন্ধ করে কমিশন। কেন্দ তে ইসির যুগ্ম সচিব খোন্দকার মিজানুর রহমানকে প্রধান করে উপ-সচিব ফরহাদ হোসেন ও সিনিয়র সহকারী সচিব শাহআলমকে নিয়ে তিন সদদ্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি গত ২২-২৩ মে তদন্ত করে।
জানা গেছে, খুলনা সিটি নির্বাচনে ২৮৬ কেন্দ্রের মধ্যে অনিয়মে স্থগিত তিন কেন্দ্র বাদ দিয়ে গড়ে ৬২ শতাংশ ভোট পড়ে। পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলো অন্তত ১২ ধরনের অনিয়ম দেখেছে বিভিন্ন কেন্দ্রে।
রিটার্নিং অফিসারের ঘোষিত ফলাফল পর্যালোচনায় দেখা গেছে, মেয়র পদে ২৮৬টি কেন্দ্রের মধ্যে তিনটি কেন্দ্রে ৯১.৩৮%, ৯৭.৬০% ও ৯৯.৯৪% ভোট পড়েছে। তার মানে এর মধ্যে একটি কেন্দ্রে মাত্র একটি ব্যালট পেপারে ভোটদান বাকি ছিল। আর ৮০% শতাংশের উপরে পড়েছে ৯টি কেন্দ্রে ও ৭০ শতাংশের উপরে পড়েছে ৪৫টি ভোট কেন্দ্রে। আর এসব অস্বাভাবিক ভোটদানের বিষয়ে প্রতিবেদন রবিবার ইসির কাছে জমা দেওয়া হবে। সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন