প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের নিন্দায় মওদুদ

ডেস্ক রিপোর্ট: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, ‘ভারতকে যা দিয়েছি তা তারা সব সময় মনে রাখবেন’ প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের চেয়ে নির্লজ্জ, অপমানজনক বক্তব্য আমাদের জাতির জন্য হতে পারে না।

তিনি বলেন, ‘আমরা এর তীব্র নিন্দা করি। তিনি কীভাবে এই কথা বললেন? বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। সেই দেশের আপনি অনেক কিছু দিয়ে দিয়েছেন। কী দিয়েছেন আমরা জানি। দেশের মানুষও জানে। ’

শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সবুজ বাংলা টোয়েন্টিফোর ডট কমের ৫ম বর্ষপূর্তি ও ৬ষ্ঠ বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে ‘সংবাদপত্রের স্বাধীনতা : নির্বাচন কমিশনের হস্তক্ষেপ ও আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও গুণীজন সংবর্ধনায় তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে মওদুদ বলেন, ‘আপনি তাদের করিডোর ও ট্রানজিট দিয়েছেন, তাদের নিরাপত্তার জন্য সমস্ত ব্যবস্থা করেছেন। ভারতের উত্তর পূর্ব রাজ্যগুলোর জন্য যতগুলো সুবিধা দেয়া যায়, আপনি অকাতরে তা দিয়েছেন। আমাদের বন্দর ব্যবহারের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। সবই দিয়েছেন এবং সেটি এখন স্বীকারও করছেন। আমাদের জাতীয় কোনো স্বার্থ আপনি উদ্ধার করতে পারেননি।’

তিনি বলেন, ‘আপনি তো একা সেটা করতে পারেন না। এদেশ ১৬ কোটি মানুষের। আপানি তাদের ইচ্ছা আকাঙ্খাকে আঘাত দিয়েছেন। আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হলে আপনাকে এই আঘাতের প্রতিদান দিতে হবে।’

‘বাংলাদেশে নিয়ন্ত্রিত সংবাদ মাধ্যম চলছে’ উল্লেখ করে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘মাদক নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারেও প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, একবার ধরলে, আমি কাউকে ছাড়ি না, এতদিন ধরেন নাই কেন? ’

তিনি বলেন, ‘আজ মাদক নিয়ন্ত্রণের নামে মানুষকে হত্যার লাইসেন্স দিয়েছেন। ১৩৮জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। আমরা মাদক নিয়ন্ত্রণের সম্পূর্ণ পক্ষে। আপনাদের ৯ বছরে কোটি কোটি মানুষ মাদকাসক্ত হলো এই অপরাধের বিচারও আপনাদের একদিন হওয়া উচিত এবং হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আপনাদের এমপি বদির কথা সারা বাংলাদেশের মানুষ জানে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন তার ব্যাপারে তথ্য আছে, কিন্তু প্রমাণ নাই। তাহলে সেকশন ৬৪ আছে কেন?’

মওদুদ বলেন, ‘দেশের সত্যিকারের যে সঙ্কট, সেটিকে অন্যদিকে ধাবিত করার জন্য মানুষ হত্যার অভিযানে আপনি আইন শৃঙ্খলাবাহিনীকে নিযুক্ত করেছেন। এ জন্য এই সরকারের সময়ে মাদক নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না।’

সাবেক এই আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আইনমন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এই সরকার নিম্ন আদালত নিয়ন্ত্রণ করে। সুতরাং নিম্ন আদালতের বিচারকের স্বাধীনতা আছে বলে এখন আর বলা যাবে না। তারা সরকারের অধীনে কাজ করছে এবং তাদের ইচ্ছে মতই কাজ করবেন। ’

তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া জামিনে মুক্তি পাবেন এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে তারা বিলম্বিত করবেন। তারপরও আমি বলতে চাই খালেদা জিয়ার একমাত্র মুক্তির পথ হলো রাজপথ। অন্য কোনো পথ নাই।’

মওদুদ বলেন, নির্বাচন কমিশন খুলনা সিটি নির্বাচনে যা করেছে এরপর তাদের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। এই কমিশনের পুনর্গঠন করতে হবে।

অনুষ্ঠানে আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন প্রমুখ বক্তৃতা করেন।