আবারও বেনাপোল স্থল বন্দরে আগুন, পুড়ে ছাই কোটি কোটি টাকার পন্য

মোঃ আনিছুর রহমান, বেনাপোল: আবারও বেনাপোল স্থল বন্দরে আগুন লেগে পুড়ে ছাই হয়ে গেল কোটি কোটি টাকার আমদানিকৃত পন্য। রোববার ভোর পনে ৪ টার সময় বন্দরের ১০ নং টিটিআই গেটে আমদানি কৃত পন্যর ট্রাকে আগুন লেগে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কোটি কোটি টাকার পন্য। ১০ টি আমদানিকৃত ট্রাক মালামালসহ এবং কয়েকটি পিকআপ মালামাল সহ পুড়ে ভস্মিভুত হয়।

fireপুড়ে যাওয়া মালামালে ভিতর ছিল গাড়ীসহ পেপার, তুলো, সুতা, মোটরসাইকেল ব্লিচিং পাউডার ও ভারতীয় ট্রাক ও পিকআপ গাড়ি।
প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানায়, এ্যাসিডের ড্রাম থেকে অগ্নিকান্ডের সুত্রপাত ঘটেছে।

bf2বেনাপোল বন্দর সুত্র জানায়, বেনাপোল বন্দরের আমদানিকৃত পন্য নিয়ে ভারতীয় ট্রাক ১০ নং টিটি আই ( ভারতীয় ট্রাক টার্মিনাল) গেটে অপেক্ষা করে পন্য আনলোড করার জন্য। সেখানে আমদানি পন্য আনলোড করতে গাড়ি গুলো অনেক সময় দুই সপ্তাহ ও অপেক্ষা করে। গত দুইদিন ভারতীয় ট্রাক ডাব্লিউ বি ২৩-৮১৭০ ও ডাব্লিউ বি- ২৩-৯১৫৫ নং গাড়ি দুটো ট্রাক টার্মিনালে থাকলে ও ড্রাইভার ছিল না। ঐ দুটি গাড়ি থেকে আগুনের সুত্রপাত হয়ে পাশে থাকা আরো ১০ টি ট্রাক ও ছোট ছোট ১৪/১৫ টি পিক আপ ভ্যান ও কমপ্লিট আমদানিকৃত প্রায় ৫০ টির মত মোটরসাইকেলের কার্টন পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

ভোর ৪ টা থেকে বেনাপোল ফায়ার সার্ভিস ও ঝিকরগাছা ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিটের কর্মীরা আগুন নিভানোর কাজ শুরু করে এরপর যশোর ও মনিরামপুর ফায়ারসার্ভিসের দুটি ইউনিট এসে যোগ দেয়। ফায়ার সার্ভিসের সাথে বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশ ও স্থানীয়রা সহযোগিতা করেন। সকাল ৬ টার সময় আগুন নিয়ন্ত্রনে আসে। অথচ বেনাপোল স্থল বন্দরে একটি ফায়ার ষ্টেশন থাকলে ও তাদের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি না থাকায় অগ্নি নির্বাপকের কাজে কোন ভুমিকা রাখতে দেখা যায়নি।

যশোর ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক পরিমল কুন্ডু বলেন, আমরা আমাদের সাধ্যমত ৪টি ইউনিট মিলে প্রায় ২ ঘন্টায় আগুন নিয়ন্ত্রন করতে সক্ষম হই।

বেনাপোল স্থল বন্দরের পরিচালক আমিনুল ইসলাম, ডিডি রেজাউল করিম শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পুলক কুমার মন্ডলসহ বন্দরের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।

বন্দর পরিচালক আমিনুল ইসলাম এর নিকট আগুন লাগার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি কোন কিছু মন্তব্য করতে রাজী হন নাই। তবে তিনি বলেন, তদন্ত কমিটি তৈরী হবে এবং তদন্ত কমিটির তদন্তর পর কি পরিমান পন্য পুড়েছে তা জানা যাবে।

বেনাপোল সিএন্ডএফ এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান স্বজন বলেন, বন্দরে জায়গা সংকটের কারনে ভারতীয় ট্রাক এসে টার্মিনালে দিনের পর দিন অপেক্ষা করে। এতে করে পন্যজট বেড়ে যায়। দিনের মাল যদি দিনে আললোড করত তাহলে এসব দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকত না। তাছাড়া দুর্ঘটনার জন্য পুর্ব প্রস্ততি ও বেনাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষের নেই। প্রয়োজনীয় পানির কোন ব্যবস্থা না থাকায় তারা রেল লাইনের খাদে জমে থাকা বৃষ্টির পানি থেকে পানি নিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে।

বেনাপোল বন্দরে বার বার আগুন লাগলেও তার কোন সূত্র এখনো কোন এক অদৃশ্য শক্তির কারনে বের করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
সুত্র জানায়, বেনাপোল বন্দরের এক শ্রেনীর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা কর্মচারীরা আমদানি পন্যর চুরির সাথে জড়িত। এরা পন্য চুরি করে একটি সিন্ডিগেটের মাধ্যমে। এরপর আমদানি কারককে বুঝ না দিতে পারায় ঐ সব গোডাউনে সুকৌশলে আগুন লাগিয়ে দেয়। তারপর গঠন করে তদন্ত কমিটি এর পর চলে দির্ঘদিন ধরে তদন্ত। তারপর এক সময় ঝিমিয়ে যায়। ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হয় আমদানি কারক গন।