রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েলে মাদকবিরোধী অভিযান : মওদুদ

ডেস্ক রিপোর্ট: মাদকবিরোধী অভিযানের মাধ্যমে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েলের চেষ্টা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ।

বুধবার (৬ জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে ‘সাংবাদিক হত্যা-নির্যাতন বন্ধ এবং মাহমুদুর রহমান ও শওকত মাহমুদসহ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা সন্ত্রাসের প্রতিবাদ’ শীর্ষক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) (একাংশ) এ সমাবেশের আয়োজন করে।

মওদুদ আহমেদ বলেন, দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চলছে। এর মাধ্যমে সরকার ভিন্ন মত দলন করতে চায়। এর পেছনে রয়েছে সরকারের দুরভিসন্ধি। তাই সুপ্রিম কোর্টের একজন প্রাক্তন বিচারককে দিয়ে এ অভিযানের প্রত্যেক হত্যাকাণ্ডের বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি জানান তিনি।

সাবেক এ আইনমন্ত্রী বলেন, গত ৯ বছরে দেশে মাদকের বিস্তার লাভ করেছে। এ সরকারই মাদকের সুযোগ করে দিয়েছে। সরকার এতদিন কোথায় ছিল? হঠাৎ করে কেন মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হলো? আসলে এর মাধ্যমে সরকার মানুষ হত্যার লাইসেন্স দিচ্ছে। দেশে আইন না থাকায় বিচারবহির্ভূত হত্যা চলছে। কারণ এ সরকার আইনের শাসন, জনগণের মতামতকে বিশ্বাস করে না।

তিনি আরও বলেন, মাদকবিরোধী অভিযানে এখন পর্যন্ত যারা মারা গেছে তাদের ৮০-৯০ ভাগ মাদকে জড়িত নয়। ৭৯ জনের যে তালিকা করা হয়েছিল তাদের তো কেউ ধরা পড়েনি।

মওদুদ বলেন, নির্যাতন নিপীড়নে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে বর্তমান সরকার। কারণ এ সরকারের কোনো জবাবদিহিতা নেই। এ জন্যই সাংবাদিকদের ওপর বেশি নির্যাতন। এসব নির্যাতন বন্ধ করতে হলে কঠিন আন্দোলন করতে হবে। আন্দোলনের মাধ্যমেই সভ্যতা ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে।

বেগম জিয়ার কারাবন্দি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মিথ্যা মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটকে রেখেছে সরকার। উচ্চ আদালত জামিন দিলেও নিম্ন আদালত জামিন দিচ্ছে না। তারা সম্পূর্ণ সরকারের নিয়ন্ত্রণে। বিচারবিভাগের পৃথকীকরণ সত্যিকার অর্থে আর নেই। মাসদার হোসেন মামলার কার্যকারিতাও নেই।

মওদুদ আহমদ বলেন, বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। বিএনপি প্রত্যাশা করে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। মানুষ নির্ভয়ে ভোট দিতে পারবে। বিশেষ করে গ্রামের ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যাবেন নিঃসঙ্কোচে। এর বাইরে কোনো নির্বাচন জনগণ মানবে না, হতেও দিবে না।

‘বিএনপির মাদকব্যবসায়ীদের খোঁজা হচ্ছে’ আওয়ামী লীগ নেতাদের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মওদুদ বলেন, তাহলে এতদিন যাদের ধরলেন আর মারলেন তারা কি আওয়ামী লীগের লোক? আমি বলব- অবিলম্বে এসব বন্ধ করুন। প্রকৃতপক্ষে যারা মাদকব্যবসায়ী তাদের শীর্ষ নেতাদের ধরুন।

মাহমুদুর রহমান বলেন, দখলদার সরকারের আমলে অসংখ্য সাংবাদিক মিথ্যা মামলার শিকার। প্রবীণ সাংবাদিক ও সম্পাদক শফিক রেহমান, আবুল আসাদকেও তারা কারাগারে নিয়েছে। মামলা হয়েছে প্রথম আলো, ডেইলি স্টার সম্পাদকের বিরুদ্ধেও। আর এক শ্রেণির সাংবাদিক-সম্পাদক দখলদার প্রধানমন্ত্রীর তেলবাজিতে ব্যস্ত। মনে হয় আমরা কাল্পনিক সেই ‘বিগ ব্রাদার’ রাষ্ট্রে বাস করছি।

সভাপতির বক্তব্যে রুহুল আমিন গাজী ৩০ জুনের মধ্যে বন্ধ সব মিডিয়া খুলে দেয়া, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সব মামলা প্রত্যাহার, গোয়েন্দা খবরদারি বন্ধ এবং নিবর্তনমূলক আইন বন্ধের দাবি জানান। তা না হলে কঠোর আন্দোলন হুঁশিয়ারি দেন তিনি।