ব্যাংক রিপোর্ট পেলেই ‘ভণ্ডপীর’ পিয়ারের বিরুদ্ধে চার্জশিট

ঢাকা: জিন-ভূত তাড়ানোর নামে তরুণীদের সঙ্গে পর্নো ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগে গ্রেফতার ‘ভণ্ডপীর’ আহসান হাবিব পিয়ারের বিরুদ্ধে খুব শিগগিরই চার্জশিট দেবে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে তার অ্যাকাউন্টের স্টেটমেন্ট চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। স্টেটমেন্ট পেলেই আদালতে চার্জশিট দাখিল করবে তদন্ত সংস্থা কাউন্টার টেরোরিজম।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজমের সাইবার ক্রাইম ইউনিটের উপ-পরিদর্শক সজীবুজ্জামান বলেন, ভণ্ডপীর আহসান হাবীব পিয়ারের বিরুদ্ধে করা মামলাটি তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে। তার কোন ব্যাংকে কত টাকা আছে, তা জানতে বাংলাদেশ ব্যাংকে অ্যাকাউন্টের স্টেটমেন্ট চেয়ে আবেদন করেছি। স্টেটমেন্ট পেলেই তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দেবো। স্টেটমেন্ট পেতে এক-দুই মাস সময় লাগতে পারে।

তিনি আরও বলেন, তদন্তে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। এছাড়াও সে ঘটনার সতত্যা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

জবানবন্দিতে যা বলেছেন ভণ্ডপীর আহসান হাবীব পিয়ার

নিঃসঙ্গ জীবন-যাপনকারী নারীরা ছিল মূল টার্গেট। দুই নারীকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে সম্প্রতি পাঁচ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। টাকার বিনিময়ে দেশ-বিদেশে নারী বিশেষ করে যারা একাকী জীবন-যাপন করে তাদের সঙ্গে ভিডিও চ্যাটিং করতাম। এছাড়াও সাংসারিক ও পারিবারিক জীবনে যেসব নারী সমস্যায় ভুগছেন তাদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলতাম। এভাবেই শতাধিক নারীকে ফাঁদে ফেলে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্পর্ক গড়ে তুলে ভিডিও চ্যাটিংয়ে প্রলুব্ধ করতাম। তাদের কৌশলে বাসায় ডেকে নিতাম। ফাঁদে ফেলে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করতাম। সে সবের দৃশ্য ভিডিও ধারণ করে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে হাতিয়ে নিতাম মোটা অঙ্কের টাকা। টাকা দিতে রাজি না হলে ইন্টারনেটে ভিডিও ছেড়ে দেয়ারও হুমকি দিতাম।

উল্লেখ্য, বেশ কয়েকজন নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে গতবছরের ১ আগস্ট রাজধানীর খিলগাঁও থেকে ভণ্ডপীর আহসান হাবিব পিয়ারকে গ্রেফতার করে কাউন্টার টেরোরিজমের সাইবার ক্রাইম ইউনিট। ওইদিনই তার বিরুদ্ধে রাজধানীর খিলগাঁও থানায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করেন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজমের সহকারী উপ-পরিদর্শক লুৎফর রহমান।

তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২ আগস্ট ঢাকার ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত দু্ই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন পিয়ারের।

দুদিনের রিমান্ড শেষে ৫ আগস্ট ঢাকা মহানগর হাকিম এ কে এম মাঈন উদ্দিন সিদ্দিকীর আদালতে পিয়ার ঘটনার স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। জবানবন্দি রেকর্ড শেষে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপর থেকে তিনি কারাগারে আটক রয়েছেন।