ফেসবুক লাইভে এসে মারামারির ঘটনার ব্যাখ্যা দিলেন সাব্বির-মিরাজ

sabbirস্পোর্টস ডেস্ক: ভারতের দেরাদুনে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সর্বশেষ টি-টুয়েন্টিতে একাদশে ছিলেন না সাব্বির রহমান। তখন গণমাধ্যমে খবর এসেছিল দ্বিতীয় টি-টুয়েন্টিতে সতীর্থ মেহেদী হাসান মিরাজের সাথে বাকবিতণ্ডা ও শারীরিক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিলেন সাব্বির। আর সেকারণেই তৃতীয় ম্যাচে একাদশে ছিলেন না তিনি। আর এরকম মারামারির ঘটনায় স্তম্ভিত দেশের ক্রিকেট সমর্থকরা। তবে রোববার রাতে সাব্বির ও মিরাজ একসাথে লাইভে এসে জানালেন সেরকম কিছুই হয়নি। যা হয়েছিল সেটা ‘মিস আন্ডাস্ট্যান্ডিং’ মাত্র। দু’জন ভালো বন্ধু। এবং সকল সমর্থকদের বিষয়টি পজিটিভলি নেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন এই দুই ক্রিকেটার।

রোববার রাতে প্রথমে ফেসবুকে লাইভে আসেন সাব্বির। তারপর তার সাথে যোগ দেন মেহেদি। শুরুতেই বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলকে অভিনন্দন জানিয়ে সাব্বির বলেছেন, ‘একটা বিশেষ কারণে (লাইভে) এসেছি। আপনারা জানেন বাংলাদেশ উইম্যান্স টিম এশিয়া কাপ জিতেছে। বাংলাদেশ উইম্যান্স টিমকে অনেক অনেক অভিনন্দন। ওরা অনেক বড় একটা কাজ করেছে। এটা বাংলাদেশের অনেক বড় একটা এচিভমেন্ট, উইম্যান্স টিমের হয়ে। যেটা আমরা বাংলাদেশের বয়েজ টিম করতে পারি নাই সেটা উইম্যান্স টিম করেছে।’

সাব্বির বলেন, ‘লাস্ট একটা সিরিজ গেছে। সিরিজটা ভালো হয় নাই। বাট আমরা সবসময় ভালো করার চেষ্টা করেছি। সামনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর আছে। আশা করি আপনাদের সাপোর্ট পাবো। যেরকম লাস্ট কয়েক বছর আপনার সাপোর্ট করে গেছেন।’

এরপর তিনি মিরাজের প্রসঙ্গ এনে বলেন, ‘যার সাথে আমি আজ লাইভে এসেছি সেটা হচ্ছে ‘স্টারবয়’ মেহেদী হাসান মিরাজ (এসময় মিরাজ সাব্বিরের পাশে এসে বসেন)। আমার ছোট ভাই। আসলে আমাদের মধ্যে একটা মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং হয়েছে। আপনারা হয়তো শুনেছেন। অনেক সময় পরিবারের মধ্যে এমন হয়। মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং। যেটা পরিবারের মধ্যেই থাকা উচিত। আসলে বড় হয়ে ওর সাথে এমন কাজটা করা আমার উচিৎ হয়নি। বাট চেষ্টা করি সবসময় ছোট ভাইদের ভালোবাসা বা স্নেহ করার জন্য। অ্যাজ এ ছোট ভাই ওর (মিরাজের) সাথে আমার ভালো সম্পর্ক।’

এ সময় মিরাজও বিষয়টা নিয়ে কথা বলা শুরু করেন। তিনি বলেছেন, ‘আসলে বিষয়টা নিয়ে অনেকের নেগেটিভ ধারণা। অনেক মানুষ অনেক কমেন্ট করতেছে যে আমাদের ভিতরে কি মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং হইছে। আসলে তেমন কিছুই না। আমার কাছে মনে হইছে যে অনেক সময় একসাথে থাকলে অনেকের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। কিন্তু অনেকে মনে করছে যে আমার সাথে সাব্বির ভাইর মারামারি হইছে। আসলে তেমন কিছুই না। (এ সময় সাব্বিরও বলেন, মারামারি না)। আসলে সাব্বির ভাই আমাকে অনেক আদর করে, ভালোবাসে অনেক আগে থেকেই।’

এ সময় আবার সাব্বির বলেন, ‘ওর সাথে আমার অনেক আগে থেকে পরিচয়। ওর সাথে আমার লাস্ট ৮-১০ বছরের পরিচয়। ওর সাথে আমার লং টাইম বন্ধুত্ব। আর ছোট ভাই বড় ভাই ফ্রেন্ডশিপ, এটা অনেক বড় ফ্রেন্ডশিপ। আসলে তেমন কিছুই হয়নি। ওর সাথে আমার মারামারি বা তেমন কিছুই হয়নি। এটা মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং। আর মারামারি হইলে তো ও আমারে ইনভাইট করতো না। আপনারা এটা নেগেটিভলি নিয়েন না, পজিটিভলি নিয়েন।’

এর আগে ক্রিকবাজ জানিয়েছিলে যে, ২৬ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান সাব্বির দেরাদুনে দ্বিতীয় টি-টুয়েন্টি চলাকালে স্পিনার মিরাজের সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। পরে তা শারীরিক সংঘর্ষে রূপ নেয়। নাম না প্রকাশের শর্তে দলের সাথে থাকা একজন অফিসিয়াল জানিয়েছেন, ‘অনেক বড় কোন ইস্যু না, সামান্য ভুল বোঝাবুঝি। এই ঘটনার কথা ম্যানেজারের রিপোর্টেও নেই।’

শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে এবছরের শুরু থেকেই শাস্তির মাঝে আছেন সাব্বির। জাতীয় ক্রিকেট লিগ চলাকালে এক কিশোরকে মাঠে পিটিয়েছিলেন তিনি। এ কারণে কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ পড়েছেন সাথে ২০ লাখ টাকা জরিমানাও দিয়েছেন সাব্বির। ঘরোয়া লিগে তার ৬ মাসের নিষেধাজ্ঞা এখনও বলবৎ আছে।