ছাত্রলীগের কমিটি গঠনে সময় নিলেন প্রধানমন্ত্রী

student lig logoডেস্ক রিপোর্ট: প্রত্যাশিত কমিটি পেতে অপেক্ষা বাড়ল ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী নেতাদের। বুধবার দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করার পর কমিটি গঠন নিয়ে আরও সময় নিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে এত আবেদনে বিস্ময় প্রকাশ করে বক্তব্যরত নেতাদের কাছে পদপ্রত্যাশার কারণ জানতে চান তিনি। ছাত্রলীগের সাংগঠনিক নেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি যাকে দায়িত্ব দেব তার নেতৃত্বে কাজ করতে হবে। সংগঠনকে এগিয়ে নিতে হবে। তবে সংগঠনের নেতা নির্বাচনে শেখ হাসিনার ওপর আস্থা রাখলেও বক্তব্যে ছাত্রলীগ নেতারা নিজেদের আত্মপ্রচারই করেছেন বেশি।

সম্মেলনের দুই মাস পর ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী নেতাদের গণভবনে ডেকে মতবিনিময় করেন শেখ হাসিনা। বুধবার রাতে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদ চেয়ে আবেদন করা পদপ্রত্যাশী ১৬৯ জন নেতাকে নিয়ে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করেন। তবে আলোচনা হলেও কমিটি নিয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি। গত ১১ ও ১২ মে ছাত্রলীগের ২৯তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় অধিবেশনের পর কমিটি ঘোষণার নিয়ম থাকলেও শীর্ষ পদের নেতৃত্ব বাছাইয়ে সময় নেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছাত্রলীগের নেতৃত্ব গঠন নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে সমালোচনা হয়ে আসছিল। বিষয়টি আওয়ামী লীগের সভাপতি পর্যন্ত গড়ালে এবার সমঝোতার ভিত্তিতে নেতা নির্বাচনের সিদ্ধান্ত হয়। সম্মেলনের আগে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে ২৩২টি ফরম জমা পড়ে। এসব আবেদন যাচাই-বাছাইয়ে দুই মাস সময় নেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দীর্ঘ অনুসন্ধান ও আবেদন যাচাই-বাছাই শেষে বুধবার পদপ্রত্যাশী নেতাদের গণভবনে ডাকেন তিনি।

বৈঠকে উপস্থিত একাধিক ছাত্রলীগ নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, খুব ধৈর্যের সঙ্গে প্রত্যেক পদপ্রত্যাশী নেতাদের বক্তব্য শুনেছেন শেখ হাসিনা। সবার বক্তব্য ও পদ পাওয়ার আগ্রহ দেখে তিনি বলেছেন, সবাই নেতা হবে না। আর আমি সবাইকে পদ দিতেও পারব না। সবাই উপযুক্ত। আমি আরও যাচাই-বাছাই করে দেখব। আরও সময় লাগবে। আমি পরে জানাব। এ সময় তিনি বলেন, আমি যাকে দায়িত্ব দেব, তার নেতৃত্বে সবাই কাজ করবে। সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

এ সময় উপস্থিত ছাত্রলীগ নেতারা স্লোগান দিয়ে গণভবন মুখরিত করে তোলেন। সবাই একই সুরে বলেন, ‘নেত্রী আপনি যাকে দায়িত্ব দেবেন আমরা তার নেতৃত্বেই কাজ করব। আপনার নির্দেশনা মেনে চলব।’

বক্তব্যের শুরুতে সংক্ষিপ্ত আলোনায় অংশ নেন ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ। পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসাইন। তবে শেষপর্যন্ত তাকে পরিচালনা করতে হয়নি। বক্তব্য দিতে ইচ্ছুক সবাই একে একে বক্তব্য দিয়ে সাংগঠনিক নেত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেছেন। এ সময় বক্তব্য দেয়ার আগ্রহীর সংখ্যা বেড়ে গেলে মাইক নিয়ে টানাটনি হয়। এতে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়।

ছাত্রলীগের একটি সূত্র জানায়, বয়স নিয়েও কথা বলেছেন কয়েকজন নেতা। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, বিষয়গুলো নিয়ে আরেকটু দেখতে হবে। তারপর কমিটি হবে। এবার ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হওয়ার বয়স ২৮ বছর। গত ২৮তম কাউন্সিলে এ বয়স ছিল ২৯ বছর। বয়সসীমার কারণেও অনেক নেতা বাদ পড়বেন। আর এবার ছাত্রলীগে নেতৃত্ব নির্বাচিত হচ্ছে ‘সিলেকশনের’ মাধ্যমে, ফলে সবার মধ্যেই এক ধরনের ‘আশা’ কাজ করছে। কেউ যেন নিরাশ না হন, সে কারণে বৈঠক করা হচ্ছে।

এ সময় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, উপ-দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া উপস্থিত ছিলেন। তবে সেখানে উপস্থিত ছিলেন না দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।সূত্র: যুগান্তর