তিস্তার পানি বিপৎসীমার উপরে, ৩ হাজার পরিবার পানিবন্দি

bonna
ফাইল ছবি

ডেস্ক রিপোর্ট: পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সর্তকীকরণ কেন্দ্র থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

তবে তিস্তা পাড়ের বাসিন্দাদের দাবি, ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এবং পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গত দুইদিনের চেয়ে ২৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

ডালিয়াস্থ তিস্তা অববাহিকায় ভারী বর্ষন চলছে। উজানের ঢল সামাল দিতে খুলে রাখা হয়েছে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট।

এদিকে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার তিস্তা অববাহিকার পূর্বছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশা চাঁপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী, গয়াবাড়ি ও জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ি, শৌলমারী ও কৈমারী ইউনিয়নের বিস্তীর্র্ণ এলাকার ২৫টি চর ও গ্রামের ৩ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়েছে বলে জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।

তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সর্তকীকরন কেন্দ্র জানিয়েছে, বুধবারের চেয়ে তিস্তার পানি দুই সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে সকাল ৬টা হতে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিপৎসীমার (৫২ দশমিক ৬০ মিটার) দুই সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে (৫২ দশমিক ৫৮ মিটার) প্রবাহিত হচ্ছে। বিকাল ৩টায় তিস্তার পানি বাইশপুকুর পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সন্ধ্যা ৬টায় আরও ৬ মিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

ডিমলা উপজেলার পূবর্ ছাতনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রভাষক আব্দুল লতিফ খান জানান, গত দুই দিনের চেয়ে উজানের ঢলের গতি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে এলাকার নিচু ও উঁচু স্থানে নদীর পানি প্রবেশ করেছে। চরগ্রাম গুলোর ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। ইতিমধ্যে তার এলাকার এক হাজার ৪০ পরিবারের বসত বাড়িতে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। ঝাড়সিংহেশ্বর মৌজার ছয়টি পরিবারের বাড়িঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহীন বলেন, তার এলাকার চরখড়িবাড়ি মৌজায় তিস্তার বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। ইতিমধ্যে সহস্রাধিক পরিবারের বসতবাড়িতে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যহত রয়েছে।

ঝুনাগাছ চাপানি ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান বলেন, ফরেস্টের চরে পাঁচ শতাধিক পরিবারের বসতবাড়িতে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। ইতিমধ্যে ছয়টি পরিবারকে অন্যত্র সরিয়ে আনা হয়েছে।

খালিশা চাপানি ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান সরকার বলেন, পূর্ব বাইশ পুকুর ও ছোটখাতা মৌজার পাঁচ শতাধিক পরিবারের বসতবাড়িতে বন্যার পানি বয়ে যাচ্ছে। নদী সংলগ্ন বসবাসরত পরিবারগুলো সতর্ক অবস্থায় থাকার জন্য বলা হয়েছে।

খসাখড়িবাড়ী ইউপি চেয়ার রবিউল ইসলাম লিথন বলেন, কিসামত ছাতনাই মৌজার তিন শতাধিক পরিবারের বসতবাড়িতে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। প্রতিটি বাড়ি হাঁটু পানিতে তলিয়ে রয়েছে। এখনও পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, উজানের ঢলের কারণে তিস্তার পানি ডালিয়া পয়েন্টে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা হতে বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বিকাল ৩টায় ৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সন্ধ্যা ৬টায় আরও ৬ মিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সূত্র: যুগান্তর