যশোরের কেশবপুরকে জলাতঙ্ক রোগের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ

jessore mapস্টাফ রিপোর্টার, যশোর: যশোরের কেশবপুরকে জলাতঙ্ক রোগের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। কুকুর ও হনুমানের অবাধ বিচরণ, তারা প্রায়ই মানুষের ওপর চড়াও হওয়ায় এলাকাটি ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করেছেন স্বাস্থ্য বিভাগের তদন্ত টিম।

২৯ জুন কেশবপুরের বিভিন্ন এলাকার ২৫ জনকে কুকুরে কামড়ে আহত করেছে। আক্রান্তরা কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন।

স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপেক্সের ডাক্তার শেখ আবু শাহীন বলেন, গত ছয় মাসে কুকুরের কামড়ে উপজেলায় ২৯২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এছাড়া আক্রান্ত সবাইকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সের পক্ষ থেকে সর্বক্ষণিক তদারকি করা হচ্ছে।

বিপুল সংখ্যক মানুষকে কুকুরে কামড়ানোর ঘটনা গণমাধ্যমে আসে। এর পর গত শনিবার সকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উচ্চ পর্যয়ের একটি তদন্ত টিম কেশবপুরে আসেন। তারা আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলেছেন। স্থানীয় লোক ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা গঠিত তদন্ত টিমের প্রধান ডাক্তার ইকরামুল হক বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাক্তার আবুল কালাম আজাদ পত্র পত্রিকার খবরের ভিত্তিতে সরেজমিন তদন্ত করার জন্য রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখাকে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। সে মোতাবেক আমরা রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার তদন্ত কমিটি কেশবপুরে তদন্ত করতে এসেছি।

তিনি বলেন, আক্রান্তদের সঠিকভাবে চিকিৎসা করা হয়েছে। আমরা প্রতিটি রোগীর খোঁজ-খবর নিয়েছি। তারা সুস্থ আছেন। কেশবপুরে প্রচুর হনুমান ও কুকুর থাকার কারণে এখানকার জনগোষ্ঠী জলাতঙ্ক রোগের ঝুঁকিতে বসবাস করছে। এই অবস্থায় এখানে সরকারিভাবে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভ্যাকসিন সরবরাহ করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে আগামী দিনে নিয়মিত মাসিক চাহিদা অনুযায়ী ভ্যাকসিন সরবরাহের চেষ্টা করা হবে।

স্থানীয় জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে আগামী দিনে কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সকে জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করার আশ্বাস দেন।

তদন্ত কমিটির সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় আরো উপস্থিত ছিলেন যশোরের সিভিল সার্জন ডাক্তার দিলীপ কুমার রায়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার তদন্ত কমিটির সদস্য ডাক্তার ফজলে রাব্বী, ডাক্তার নিজামুল ইসলাম, ডাক্তার শেখ আবু শাহিন, কেশবপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি আশরাফ-উজ-জামান খান, সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসাইন প্রমুখ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. উম্মে রোমান সিদ্দিকী শাম্মী বলেন, মহাপরিচালক স্যারের নির্দেশে কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ভ্যাকসিনের চাহিদা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।