লন্ডন মিশন নিয়ে সরকারে অস্বস্তি, পরিবর্তন আসছে!

Bangladesh High Commission, Londonডেস্ক রিপোর্ট: লন্ডন মিশন নিয়ে চরম অস্বস্তিতে সরকার। এ নিয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। সেখানে সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্তরা বৃটেনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের চেয়ে নিজেদের মধ্যে ‘কূটচাল’ নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।

মিশনে বিএনপির হামলা ঠেকানোর ‘দায়-দায়িত্ব’ এবং পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে বৃটিশ সরকারের সহযোগিতা আদায়ের প্রশ্নেও দায়িত্বপ্রাপ্তদের ব্যাপক গাফলতির অভিযোগ আছে। নানা কাজে মিশনে যাওয়া বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বৃটিশ নাগরিকদের অবহেলা, হয়রানি ও ভোগান্তির অভিযোগও চরমে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ওই মিশনে ব্যাপক রদবদল আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

সরকারি সূত্রগুলো বলছে- এবারের পরিবর্তনগুলো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নয়, সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনা ও মনিটরিংয়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে। অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে এটি করা হচ্ছে।

গত ৭ই ফেব্রুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলার রায়কে কেন্দ্র করে লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে হামলা, ভাঙচুর ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি খুলে ভাঙচুরের ঘটনায় ডেপুটি হাই কমিশনার খন্দকার এম তালহাকে আগেই প্রত্যাহার করা হয়েছে। তিনি মে মাসে ঢাকায় ফিরেছেন। বর্তমানে ছুটিতে রয়েছেন। ওই ঘটনায় জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেনকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সরকার। তদন্ত কমিটি কাজ করছে। এ বিষয়ে অভিযুক্তদের বক্তব্যও নেয়া হয়েছে। তবে রিপোর্ট জমা পড়েছে কি-না তা এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

সূূত্র মতে, সেই ঘটনার পর থেকে মিশনে অনেক পদে পরিবর্তন এসেছে। অনেকে দেশে ফিরেছেন, অনেকে ফিরছেন। এবার ২০১১ সালে মিশনে নিয়োগ পাওয়া শিরীন আক্তারকে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। একই সঙ্গে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে ২০১৪ সালে নিয়োগ পাওয়া মনিরুল ইসলাম কবিরকেও। বিডিআর বিদ্রোহে শিরীন আক্তারের স্বামী নিহত হন। সেই বিবেচনায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে কর্মরত শিরিনকে মানবিক কারণে ওই পোস্টিং দেয়া হয়েছিল। শিরীন রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ পেলেও তার দায়িত্বপালন বিষয়ে মিশনে তেমন বিতর্ক ছিল না। মনিরুল ইসলাম কবির সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনির আমলে মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ছিলেন। লন্ডনে তার নিয়োগ নিয়ে শুরুতে বিতর্ক থাকলেও পরবর্তীতে তিনি এটি কাটিয়ে ওঠেন। যেকোনো মিশনে সাধারণত ৩ বছর থাকার অলিখিত নিয়ম থাকলেও কবির ও শিরীনের বেলায় এটি ব্যতিক্রম হয়েছে।

মিশনে যাওয়ার পর দুই সন্তান রেখে কবিবের স্ত্রী (তথ্য ক্যাডারের কর্মকর্তা) মারা যাওয়া এবং মানবিক কারণে শিরীনকে একটু বেশি সময় দেয়া হয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন- দীর্ঘ সময় মিশনে থাকা ওই দুই কর্মকর্তার সম্প্রতি ঢাকায় ফেরার আদেশ হয়েছে। তারা শিগগির ফিরছেন।

উল্লেখ্য, লন্ডন মিশনে দীর্ঘ সময় প্রেস মিনিস্টারের দায়িত্বপালনকারী নাদীম কাদিরের ফেরার পর থেকে ওই পদটি শূন্য। এটি পূরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার একজন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক এ পদে নিয়োগ পাচ্ছেন বলে জানা গেছে। ওদিকে প্রত্যাহার হওয়া ডেপুটি চিফ অব মিশন খন্দকার এম তালহার শূন্য পদেও নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। সূত্র: মানবজমিন