খালেদা জিয়ার জামিন বাড়ল ১৭ জুলাই পর্যন্ত

khalada ziaঢাকা: জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিনের মেয়াদ আগামী ১৭ জুলাই পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছেন আদালত।

মঙ্গলবার সকালে খালেদা জিয়ার আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান ১৭ জুলাই পর্যন্ত তা বৃদ্ধি করার নির্দেশ দেন। এ সময় মামলাটির যুক্তিতর্ক শুনানির জন্য মুলতবি করা হয়েছে।

এর আগে ১০ জুলাই পর্যন্ত জামিনে ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। কিন্তু তিনি কারাগারে আটক থাকায় আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া তার জামিনের আবেদন করেন।

এ মামলায় পাঁচ বছরের সাজার রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার করা আপিল ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্টকে নির্দেশ দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ।

১৬ মে আপিল বিভাগের দেয়া সেই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা চেয়ে খালেদা জিয়া আবেদন করেন।

এদিকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় দেয়া পাঁচ বছরের সাজার বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য আগামী ১২ জুলাই দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট। ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টায় শুনানি শুরু হবে।

একই দিন এ মামলায় খালেদা জিয়াকে দেয়া চার মাসের জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধি চেয়ে আবেদনের শুনানিও হবে।

সোমবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

গত ৫ জুলাই এ আবেদনটি করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।

উল্লেখ্য, আগামী ১২ জুলাই খালেদা জিয়ার চার মাসের জামিনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে।

সোমবার আপিল বিভাগে শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। খালেদা জিয়ার পক্ষে মওদুদ আহমদ, এ জে মোহাম্মদ আলী ও জয়নুল আবদিন। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার এহসানুর রহমান ও অ্যাডভোকেট মাসুদ রানা।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় পাঁচ বছরের দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল করে জামিন আবেদনের পর খালেদা জিয়াকে ১২ মার্চ চার মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের পর গত ১৬ মে তা বহাল রেখে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছিলেন উচ্চতর আদালত।

পরে খালেদা জিয়া ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে হাইকোর্টে আপিল মামলার নিষ্পত্তিতে আপিল বিভাগের আদেশ পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদন করেন। এ আবেদনের পর গত ৫ জুলাই আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত ৯ জুলাই শুনানির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠানোর আদেশ দেন। সে অনুসারে সোমবার এ আবেদনের ওপর শুনানি হয়।

এ মামলায় ছয় আসামির মধ্যে খালেদা জিয়াসহ তিনজন কারাবন্দি। বাকি তিন আসামি পলাতক রয়েছেন।

খালেদা জিয়া ছাড়া বাকি দুজন হলেন- মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ।

পলাতক তিনজন হলেন- বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান, সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ভাগনে মমিনুর রহমান।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি বকশীবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান মামলাটিতে খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন। একই সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত।

রায় ঘোষণার ১১ দিন পর ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকালে রায়ের সার্টিফায়েড কপি বা অনুলিপি হাতে পান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। এর পর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ২০ ফেব্রুয়ারি তারা এ আবেদন করেন। ২২ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ এবং অর্থদণ্ড স্থগিত করে নথি তলব করেন।

এর পর ৭ মার্চ অপর আসামি মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামালের আপিলও শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। ১০ মে আরেক আসামি শরফুদ্দিনের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন আদালত।