সিলেটে বিএনপিকে যে কারণে ছাড় দেয়নি জামায়াত

bnp jamaat logoডেস্ক রিপোর্ট: সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জোটপ্রধান বিএনপিকে ছাড় দেয়নি জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতে ইসলামী। গত সোমবার ছিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। সিলেট মহানগর জামায়াতের আমির এহসানুল মাহবুব জোবায়ের স্বতন্ত্র নির্বাচন করছেন।

জামায়াতের দায়িত্বশীলরা বলছেন, সারা দেশের ১১টি সিটি করপোরেশনের ১০টিতে বিএনপির মেয়র প্রার্থীকে সমর্থন করেছে জামায়াত। এ অবস্থায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্মানজনক আসনে সমঝোতা না হলে জামায়াত বিএনপিকে ছাড় দেবে না- এ বার্তা পৌঁছানোই তাদের লক্ষ্য। সিলেট সিটিতে জয়-পরাজয় যাই হোক- জোটসঙ্গী বিএনপিকে এ বার্তা দলটি দিতে চাচ্ছে।

জানতে চাইলে জামায়াতের প্রার্থী সিলেট মহানগর আমির এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিল করে নির্বাচনী মাঠে পুরোদমে কাজ করছি।

তিনি বলেন, সিলেট সিটিতে আমার নির্বাচন করার দলীয় সিদ্ধান্ত অনেক আগের। আমরা জোটগত সমর্থন চেয়েছিলাম। কিন্তু বিএনপির পক্ষ থেকে গড়িমসি করা হয়েছে। জোটের সমর্থন না পাওয়ায় এককভাবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি।

জানা যায়, জামায়াত বিএনপিকে বার্তা দিতে চায় যে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির সঙ্গে তাদের হিসাবের সময় এসে গেছে। জাতীয় নির্বাচনের আগে তিন সিটির নির্বাচনই সবচেয়ে বড় ভোটের লড়াই।

দলটির মতে, এবারও ছাড় দিলে বিএনপি ধরেই নেবে জাতীয় নির্বাচনেও জামায়াতকে যতটা আসন দেওয়া হবে, তাতেই তারা সন্তুষ্ট থাকবে। তাই সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপিকে তারা বার্তা দিতে চান, প্রত্যাশিত আসন না দিলে জামায়াত নিজের মতো ভোট করবে। জামায়াতের নিবন্ধন না থাকায় দলটি জাতীয় নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থী দিতে পারবে না।

ফলে জামায়াতের সামনে কেবল স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার পথটিই খোলা থাকে। কিন্তু বিএনপি যদি জামায়াতের সঙ্গে আপস না করে কিংবা জামায়াতের চাওয়া অনুযায়ী আসন ভাগাভাগি না করে, তাহলে দলটির পরবর্তী চিন্তা-ভাবনা কী হতে পারে তা জানাতেই সিলেটে দলীয় প্রার্থী প্রত্যাহার করা হয়নি।

জামায়াতের নায়েবে আমির মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, সারা দেশের ১১টি সিটি করপোরেশনের ১০টিতে বিএনপির মেয়র প্রার্থীকে সমর্থন করেছে জামায়াত। গাজীপুরে প্রার্থী দিয়েও সরে দাঁড়িয়েছে। জোটের দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হিসেবে জামায়াতের একটি সিটিতে মেয়র পদে জোটের সমর্থন পাওয়া উচিত।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নানামুখী চাপ থাকা সত্ত্বেও জোট ক্ষতিগ্রস্ত হয়- এমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি জামায়াত। এ ভূমিকার কারণেই সম্মানজনক আসন পাওয়া উচিত তাদের। ছয় মাস আগে ভোটের প্রচার শুরু করে জামায়াত।

দলটির চাওয়া ছিল, অন্তত একটি সিটিতে মেয়র পদে তাদের প্রার্থীকে সমর্থন দেবে জোট। সে অনুযায়ী সিলেটকে বেছে নেয় দলটি।

তারা বলেন, ১৯৯৯ সালে বিএনপির সঙ্গে জোট করে জামায়াত। টানাপড়েন হলেও দুই দলের জোট ১৯ বছর টিকে আছে। ২০০১ সালের নির্বাচনে জামায়াতকে ৩০টি আসন দেয় বিএনপি। একটি আসনে দু’দলেরই প্রার্থী ছিলেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে জামায়াতকে ৩৫ আসন ছেড়ে দেয়। চারটি আসনে দু’দলের প্রার্থীই ছিলেন।

জামায়াত সূত্র জানিয়েছে, আগামী নির্বাচনে জামায়াতের চাওয়া কমপক্ষে ৪৩ আসন। এসব আসনে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছে জামায়াত। যুদ্ধাপরাধের বিচারে কোণঠাসা হয়ে পড়লেও এসব আসন ছাড়তে রাজি নয় তারা।