ইংল্যান্ডের স্বপ্ন ভেঙে ফাইনালে ক্রোয়েশিয়া

স্পোর্টস ডেস্ক: ইংল্যান্ডের স্বপ্ন ভেঙে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনালে উঠেছে ক্রোয়েশিয়া। বুধবার মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমি ফাইনালে ইংলিশদের ২-১ গোলে হারিয়েছে ক্রোয়েটরা। নির্ধারিত সময়ে ১-১ এর সমতায় শেষ হলে অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় খেলা। ম্যাচের ১০৯ মিনিটে ক্রোয়েশিয়ার হয়ে জয় সূচক গোলটি করেন মারিও মানজুকিচ। ১৫ জুন ফাইনালে ফ্রান্সের মুখোমুখি হবে তারা।

এর আগে ম্যাচ শুরুর ৫ মিনিটের মাথায় ১-০তে এগিয়ে যায় ইংল্যান্ড। দুর্দান্ত এক ফ্রি-কিকে দলকে গোলটি এনে দেন ইংলিশ ডিফেন্ডার কেইরান ট্রিপার। তবে ম্যাচের ৬৮ মিনিটে ক্রোয়েশিয়াকে সমতায় ফেরান ইভান পেরিসিচ।

১৯৬৬ সালের পর প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন দেখছিল ইংল্যান্ড। ব্রিটিশ মিডিয়া তো এরই মধ্যে হ্যারি কেনের হাতে শিরোপাও দেখে ফেলেছিল। কিন্তু সেই স্বপ্ন চূর্ণ করে রাশিয়া বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌঁছে গেল দ্বিতীয়বারের মতো সেমি ফাইনাল খেলা ক্রোয়েশিয়া। ম্যাচের শুরুতেই পিছিয়ে পড়া ক্রোয়েটরা এদিন হার না মানা ফুটবল খেলেই ইতিহাস সৃষ্টি করল। এর আগে বিশ্বকাপে দেশটির সর্বোচ্চ সাফল্য ছিল সেমি ফাইনাল পর্যন্ত। ১৯৯৮ সালে প্রথমবারের মতো সেমি ফাইনালে উঠেছিল তারা।

এদিন ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে ক্রোয়েশিয়ার ডি-বক্সের কাছে লুকা মদ্রিচের অবৈধ ট্যাকেলের শিকার হন ডেলে আলি। ফাউলের বাঁশি বাজান রেফারি। আর তাতেই সর্বনাশ ঘটে ক্রোয়েশিয়ার। ট্রিপারের ফ্রি-কিকটি থামানোর সুযোগই পেলেন না দানিজেল সুবাসিচ।

এরপর দুই দলই দারুণ আক্রমণাত্মক খেলা চালিয়ে যায়। ২২ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করতে পারত ইংল্যান্ড। ইভান স্ট্রাইনচের ভুল পাসে বড় সুযোগ পায় ইংলিশরা। কিন্তু রহিম স্টার্লিংয়ের বাড়ানো বল ধরার সময় অফ সাইডে থাকেন হ্যারি কেন। ৩০ মিনিটের সময় আবার ব্যর্থ হন কেন। ক্রোয়েশিয়ার গোলকিপারকে ফাঁকা পেয়েও গোল করতে পারেননি তিনি।

তার কিছুক্ষণ পর দারুণ এক গোলের সুযোগ সৃষ্টি করেছিল ক্রোয়েশিয়া। ডানপ্রান্ত থেকে আন্তে রেবিচ দারুণ এক ক্লিয়ার করে সে যাত্রায় ইংল্যান্ডকে বাঁচান ক্রস জন স্টোনস। তবে ফিরতি বলে রেবিচ শট করলে পিকফোর্ড সহজেই তা আটকে দেন। ইংল্যান্ড প্রথমার্ধের খেলা শেষ করে ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে।

কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে ফিরেই ইংল্যান্ডকে চেপে ধরে ক্রোয়েশিয়া। ম্যাচের ৬৮তম মিনিটে ক্রোয়েশিয়াকে ১-১ গোলের সমতায় ফেরান পেরিসিচ।

সমতায় ফিরে আরো আগ্রাসী হয়ে ওঠে লুকা মদ্রিচরা। ইংল্যান্ডের রক্ষণে দারুণ চাপ সৃষ্টি করে খেলে তারা। ক্রোয়েশিয়ার একের পর এক আক্রমণে রীতিমতো কোণঠাসা হয়ে পড়ে ইংলিশরা। টানা আক্রমণে গেলেও কোনভাবেই গোল পাচ্ছিল না ক্রোয়েটরা। কখনও ইংলিশ ডিফেন্স, কখনও গোলকিপার, কখনও গোলবার ক্রোয়েটদের হতাশায় পোড়াচ্ছিল।

এর মাঝে ইংল্যান্ডও আক্রমণে যায়। কিন্তু গোলের দেখা তারাও পায় না। ফলে নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হয় ১-১ গোলের সমতায়। অতিরিক্ত সময়ে শুরুতেই এগিয়ে যেতে পারত ইংল্যান্ড। ম্যাচের ৯৯ মিনিটে কেইরান ট্রিপারের ক্রস থেকে পাওয়া বল দারুণ হেড নিয়েছিলেন জন স্টোনস। কিন্তু নিশ্চিত গোলটি রুখে দিয়ে সিমো ভ্রাজালকো সে যাত্রায় বাঁচান দলকে।

অবশেষে ম্যাচের ১০৯ মিনিটে মানজুকিচর পা থেকে কাঙ্ক্ষিত গোলটি পায় ক্রোয়েশিয়া। এদিন সব বিভাগেই এগিয়ে ছিল ক্রোয়েশিয়া। পুরো ম্যাচে তাদের দখলে বল ছিল ৫৫ ভাগ। গোল মুখেও শট বেশি নিয়েছে তারা।