মোবাইল ব্যবহারে বাড়ছে ঘাড়ের সমস্যা

স্বাস্থ্য ডেস্ক : বর্তমান সময়ে সবচেয়ে প্রচলিত ও অত্যাধুনিক যোগাযোগ মাধ্যম হলো মোবাইল ফোন। আমরা অনেকইে দীর্ঘসময় ধরে বিভিন্ন ভঙ্গিতে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে থাকি। ঠিকভাবে মোবাইল ফোন ব্যবহার না করার কারণে আমরা অনেকেই মাথা, কাঁধ, হাত ও কোমর ব্যথা জনিত সমস্যায় ভুগে থাকি।

ঠিক তেমনই একটি কষ্ট যা ঘাড় ব্যথা। ঘাড় ব্যথা আমাদের সমাজের মানুষের একটি প্রধান সমস্যা। প্রতি তিনজন মানুষের মধ্যে দুই জন ঘাড় ব্যথায় ভুগে থাকেন। ঘাড় ব্যথার অনেকগুলো কারণের মধ্যে রয়েছে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা।

একটি গবেষণায় দেখা গেছে ১৮-৪৪ বছর বয়সী, ৭৯% ভাগ লোক তাদের দৈনন্দিন কাজ-কর্মের দুই ঘণ্টা ছাড়া বাকিটা সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করে থাকেন।

ঘাড় ব্যথার অন্যতম কারণ দীর্ঘ সময় ঘাড় ঝুঁকিয়ে মোবাইল ফোনের দিকে তাকিয়ে থাকা বা টেক্সট করা। ঘাড় সামনের দিকে ঝুঁকিয়ে মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে ঘাড়ের মাংসপেশি শক্ত ও স্পাজম হয়ে যায়। ফলে ঘাড়ে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভূত হয় এবং ঘাড়ের মবিলিটি কমে যায়। যার ফলে জয়েন্ট সঠিকভাবে কাজ করেনা।

আপনি জানেন কী অসঠিক ভঙ্গিতে মোবাইল ফোন ব্যবহারের সময় আপনার মাথার ওজন দ্বিগুণ বা তিনগুণ বেড়ে যায়? স্বাভাবিকভাবে আমাদের ঘাড় থেকে কানের যে স্ট্রাকচার থাকে তা সামনের দিকে চলে যায়। ফলে প্রতি ইঞ্চিতে অতিরিক্ত ১০-১২ পাউন্ড ওজন যুক্ত হয়। এতে করে ঘাড়ের মাংসপেশির উপর অনেক চাপ পড়ে এবং ঘাড়ে প্রচণ্ড ব্যথা হয়।

এছাড়াও দীর্ঘদিন অসঠিক ভঙ্গিতে মোবাইল ফোন ব্যবহারে ফলে অনেকের হাত ঝি ঝি করে, অবশ অবশ অনুভূত হয় এ অবস্থাকে বলা হয় সার্ভাইক্যাল রেডিকোলপ্যাথি।

আধুনিক ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার মাধ্যমে এ ধরনের ঘাড় ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে- লো-লেভেল লেজার থেরাপি, মায়োফেসিয়াল রিলিজ, ঘাড়ের মাংসপেশির স্ট্রেচিং-স্ট্রেন্দেনিং এক্সারসাইজ, চিনটাক এক্সারসাইজ, কোল্ড থেরাপি অতীব ফলদায়ক।

চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধ ভালো। সেজন্য মোবাইল ফোন ব্যবহারের সময় আপনার ভঙ্গি সঠিক রাখা অত্যাবশ্যক। নিচের দিকে ঘাড় ঝুঁকিয়ে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। মোবাইল ফোন চোখের লেভেল বরাবর রেখে ব্যবহার করুন। কিছুক্ষণ মোবাইল ফোন ব্যবহারের পর অল্পক্ষণ বিরতি নিন এবং ঘাড়ের এক্সারসাইজ করুন। প্রচুর পানি পান করুন, ধূমপান বর্জন করুন । সঠিকভঙ্গি এবং ঘাড়ের এক্সারসাইজ আপনার কষ্ট নিরাময় করবে।