ইংরেজিতেই ডুবেছে যশোর বোর্ড

jessore boardস্টাফ রিপোর্টার, যশোর: এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে গত বছরের চেয়ে আরও পিছিয়েছে যশোর বোর্ড। দু’বছরের ব্যবধানে পাসের হার কমেছে ২৩ শতাংশ। ইংরেজিতে ফলাফল খারাপ হওয়ায় তা সার্বিক ফলাফলে প্রভাব ফেলেছে। যশোর বোর্ডে এবার ইংরেজিতেই ৩৫ ভাগ শিক্ষার্থী ফেল করেছে।

এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় যশোর বোর্ডে পাসের হার ৬০ দশমিক ৪০ শতাংশ। গত বছর এই হার ছিল ৭০ দশমিক ০২ শতাংশ। আর ২০১৬ সালে ৮৩ দশমিক ৪২ শতাংশ পাসের হার নিয়ে দেশসেরা হয়েছিল যশোর বোর্ড।

পাসের হারের পাশাপাশি জিপিএ-৫ প্রাপ্তিও কমেছে। এ বছর জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ হাজার ৮৯ জন। গতবছর জিপিএ-৫ পেয়েছিল ২ হাজার ৪৪৭ জন। আর ২০১৬ সালে এই সংখ্যা ছিল ৪ হাজার ৫৮৬ জন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রকাশিত ফলাফলে এ চিত্র উঠে এসেছে। যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্র এ ফলাফল নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, ইংরেজিতে ফলাফল খারাপ হওয়ায় তা সার্বিক ফলাফলে প্রভাব ফেলেছে।

যশোর বোর্ডের প্রকাশিত ফলাফল থেকে জানা যায়, এ বছর যশোর বোর্ড থেকে ১ লাখ ৯ হাজার ৬৯২ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৬৬ হাজার ২৫৮ জন। উত্তীর্ণদের মধ্যে ছাত্র ৩১ হাজার ৬৫২ জন এবং ছাত্রী ৩৪ হাজার ৬০৬ জন। পাসের হার ৬০ দশমিক ৪০ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ হাজার ৮৯ জন। বহিষ্কৃত হয়েছে ৪৭ জন।

গত বছর এই বোর্ড থেকে ৯৫ হাজার ৬৯২ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছিল ৬৭ হাজার ২ জন। উত্তীর্ণদের মধ্যে ছাত্র ৩৩ হাজার ৮০৮ জন এবং ছাত্রী ৩৩ হাজার ১৯৪ জন। পাসের হার ছিল ৭০ দশমিক ০২ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ২ হাজার ৪৪৭ জন। বহিষ্কৃত হয়েছিল ৫৬ জন।

২০১৬ সালে এই বোর্ড থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার ৫৭২ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছিল ১ লাখ ৮ হাজার ৯২৯ জন। পাসের হার ছিল ৮৩ দশমিক ৪২ শতাংশ আর জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৪ হাজার ৫৮৬ জন। পরীক্ষায় বহিষ্কৃত হয়েছিল ৮১ জন।

এ হিসাবে গত দু’বছরে যশোর বোর্ডে পাসের হার কমেছে ২৩ দশমিক ০২ শতাংশ। জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যাও কমেছে ২ হাজার ৪৯৭ জন।

শিক্ষা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর যশোর বোর্ডে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১৯ হাজার ৩০৪ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে ১৫ হাজার ৬১৮ জন। পাসের হার ৮০ দশমিক ৯১ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ হাজার ৫৮৪ জন।

মানবিক বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ৬৮ হাজার ৮৯৮ জন। উত্তীর্ণ হয়েছে ৩৫ হাজার ৭২৮ জন। পাসের হার ৫১ দশমিক ৮৬ শতাংশ। এই বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৩৮ জন।

ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ২১ হাজার ৪৯০ জন ছাত্র ছাত্রীর মধ্যে পাস করেছে ১৪ হাজার ৯১২ জন। পাসের হার ৬৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৬৭ জন ছাত্র ছাত্রী। সারাদেশের গড় ফলাফলের তুলনায় যশোর বোর্ডের ফলাফলও নিম্নমুখী। তবে ২০১৬ সালে ভূমিধস সাফল্যে দেশসেরা অবস্থানে ছিল এই বোর্ড।

এবারের ফলাফলের চিত্র তুলে ধরে যশোর শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মাধব চন্দ্র রুদ্র জানান, এইচএসসি পরীক্ষায় এ বছর কোনো ধরনের প্রশ্নপত্র ফাঁসের খবর পাওয়া যায়নি। সব মহলের সহযোগিতায় প্রশ্ন ফাঁসের অপতৎপরতা রুখে দেয়া সম্ভব হয়েছে। এ জন্যও পাসের হার কিছুটা কমেছে। তবে ভাল শিক্ষার্থীরা ফলাফল ভালো করেছে। তার প্রমাণ জিপিএ-৫ প্রাপ্তি কমেছে মাত্র ৩শ’র মতো। আর দেশের প্রায় সব বোর্ডেই এবার ইংরেজির ফলাফল তুলনামূলক খারাপ হয়েছে।

যশোর বোর্ডে এবার ইংরেজিতেই ৩৫ ভাগ শিক্ষার্থী অনুত্তীর্ণ হয়েছে। এছাড়া মানবিকেও পাসের হার কমেছে। এ জন্য এর প্রভাব সার্বিক ফলাফলে পড়েছে।