সিরিজ জয়ে বাংলাদেশের প্রয়োজন ২৭২ রান

স্পোর্টস ডেস্ক : সৌভাগ্যের মাঠ গায়ানাতেই কি সিরিজ নিশ্চিত করে ফেলবে বাংলাদেশ? নাকি পরের ম্যাচের জন্য থাকবে অপেক্ষা? এই প্রশ্ন নিয়েই বুধবার গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলতে নেমেছ টাইগাররা। এই মাঠেই প্রথম ওয়ানডে জিতে সফরকারীরা সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে। এমন ম্যাচে বাংলাদেশকে ২৭২ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য দিয়েছে ক্যারিবিয়রা।

bangladesh masrafi

এদিন দিবারাত্রির ম্যাচে টস জিতে আগে বোলিং বেছে নেয় বাংলাদেশ। ৪৯.৩ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৭১ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শুরুতে দুর্দান্ত বোলিংয়ে ক্যারিবিয়দের চাপে ফেলে বাংলাদেশ। ২৩.৫ ওভারে ১০২ রানে ৪ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। কিন্তু এরপর শিমরন হেটমায়ার ও রোভমান পাওয়েল মিলে গড়েন ১০৩ রানের জুটি। যে জুটিতে বড় স্কোরের ভিত্তি পেয়ে যায় ক্যারিবিয়রা।

এই জুটির পর অবশ্য দ্রুত উইকেট হারিয়েছে উইন্ডিজ। কিন্তু হেটমায়ার ঠিকই তোলে নেন সেঞ্চুরি। ১২৫ রান করে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন তিনি। দলকে দিয়ে যান লড়াইয়ের ভিত্তি।

টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ভালো শুরুরই আভাস ছিল লুইস ও ক্রিস গেইলের ব্যাটে। আগের ম্যাচে এই দুজন জুটি গড়েছিলেন ২৭ রানের। লুইসকে ফিরিয়ে মাশরাফী সেদিন ভাঙেন জুটি। এম্যাচেও মাশরাফীই প্রথম সাফল্য এনে দিলেন দলকে। সেটি সেই লুইসকে প্যাভিলিয়নে ফিরিয়ে। ১২ রান করে এলবিডব্লিউ হওয়ার পর লুইস অবশ্য রিভিউ নিলেন। কিন্তু পার পাননি বা-হাতি ব্যাটসম্যান।

২৯ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারানোর পর ৫৫ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় উইন্ডিজ। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আগেই ক্রিস গেইলকে ফেরান মেহেদী হাসান মিরাজ। গায়ানায় প্রথম ওয়ানডেতে ব্যক্তিগত ৪০ রানে কাটা পড়েছিলেন গেইল। বুধবার দ্বিতীয় ম্যাচে আউট হলেন ২৯ রান করে। মিরাজের বলে এলবিডব্লিউ হয়েছেন গেইল।

দলীয় ৭৭ রানের মাথায় সাই হোপকে ফিরিয়ে দেন সাকিব আল হাসান। তাতে তৃতীয় উইকেট পড়ে ক্যারিবিয়দের। সাই হোপ ও হেটমেয়ার মিলে ২২ রানের জুটি গড়েন। সাই হোপ উইকেটে থিতু হয়ে গিয়েছিলেন। ৪৩ বলে ২৫ রান করে সাকিবের বলে সাব্বির রহমানের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি ।

এরপর রুবেলের আঘাত। দলীয় ২৪তম ওভারে প্রথম বল করতে আসেন রুবেল। এসেই পঞ্চম বলে ফিরিয়ে দেন জেসন মোহাম্মদকে। ২৩.৫ ওভারে ১০২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১২ রান করা জেসন মোহাম্মদ রুবেলের বলে ক্যাচ দিয়েছেন উইকেটের পিছনে। মুশফিকুর রহীম সেই বল গ্লাভস বন্দি করতে ভুল করেননি।

কিন্তু এরপরই উইকেটে দাঁড়িয়ে গেলেন হেটমায়ার ও পাওয়েল। হেটমায়ার দ্রুতগতিতে রান তুললেন। দুজনের জুটিতে চাপ কাটিয়ে ভালো ভিত্তি পেয়ে যায় ক্যারিবিয়রা। তখন মনে হচ্ছিল টাইগারদের বড় স্কোরই দিতে যাচ্ছে উইন্ডিজ। তবে পাওয়েলকে ফিরিয়ে ১০৩ রানের জুটিটি ভাঙেন রুবেল। ৬৭ বলে ৪টি চারের সাহায্যে ৪৪ রান করে রুবেলের বলে ফিরেছেন পাওয়েল।

এরপর আবার ক্যারিবিয়দের ব্যাটিং ধস। রুবেল যে ওভারে পাওয়েলকে ফিরালেন সেই ওভারেই হেটমায়ারের ক্যাচ ছাড়লেন সাকিব। বাউন্ডারি লাইনে যেটি সাকিবের হাত গলে ছক্কা হয়ে যায়। সেই হেটমায়ার শেষ পর্যন্ত সেঞ্চুরি করলেন। তবে তিনি সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার আগে আরো ৩ উইকেট হারায় ক্যারিবিয়রা। ৫ উইকেটে ২২৪ থেকে ৮ উইকেটে ২৪১ হয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

৭ রান করা হোল্ডারকে ফেরান সাকিব আল হাসান। তাতে ২২৪ রানে ৬ উইকেট হারায় টাইগাররা। ৩ রান করা নার্সকে ফেরান মোস্তাফিজ। এরপর কিমো পলকে (৪) ফিরিয়ে নিজের তৃতীয় উইকেট শিকার করেন রুবেল। ২৪১ রানে ৮ উইকেট হারায় ক্যারিবিয়রা।

৪৮তম ওভারে দেবেন্দ্র বিশুকে (০) ফিরিয়ে দেন মোস্তাফিজ। ২৪২ রানে ৯ উইকেটে পরিণত হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তার ঠিক আগের বলেই সেঞ্চুরি তুলে নেন হেটমায়ার। দেশের মাটিতে সবচেয়ে কম বছর বয়সী হিসেবে তার সেঞ্চুরি এটি। ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে ১২৫ রানে আউট হন তিনি। এই স্কোর করেছেন তিনি ৯৩ বলে ৩ চার ও ৭ ছক্কায়।

৫০ তম ওভারে রান আউট হন হেটমায়ার। তবে তার আগে আলজারি জোসেফকে নিয়ে শেষ উইকেটে যোগ করেন ২৯ রান। জোসেফের অবদান সেখানে মাত্র ১। শেষ পর্যন্ত জোসেফ ১ রানে অপরাজিত থেকে যান।

বাংলাদেশের পক্ষে রুবেল হোসেন সর্বাধিক ৩ উইকেট নেন। এছাড়া ২টি করে উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান ও সাকিব আল হাসান। ১টি করে উইকেট পেয়েছেন মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা ও মেহেদী হাসান মিরাজ।