স্পোর্টস ডেস্ক: টেস্ট সিরিজে বিপর্যস্ত বাংলাদেশ ওয়ানডেতে ফিরেছিল দারুণ ছন্দে। গায়ানায় প্রথম ওয়ানডেতে দারুণ এক জয় তুলে নেয় টিম বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও প্রায় জয়ের দারপ্রান্তে চলে গিয়েছিল টাইগাররা। কিন্তু নাটকীয় হারে সেটি হয়নি। হয়নি একম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ জেতাটাও। তবে সেন্ট কিটসে সেই সুযোগ কাজে লাগানোর পালা। আর অঘোষিত ফাইনালে ক্যারিবীয়দের ৩০২ রানের লক্ষ্য দিয়েছে বাংলাদেশ। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৩০১ রান করে মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার দল। ওয়েন্ট ইন্ডিজের মাটিতে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে যা টাইগারদের সর্বোচ্চ সংগ্রহ।
আগের দুই ম্যাচের মতো এম্যাচেও হাসলো তামিম ইকবালের ব্যাট। সফরের দ্বিতীয় ও ওয়ানডে ক্যারিয়ারে নিজের একাদশ সেঞ্চুরি তুলে নেন তামিম ইকবাল। ১০৩ রানের ইনিংস খেলেন এই ড্যাশিং ওপেনার। হয়েছে দারুণ এক রেকর্ডও। ওয়েস্ট ইন্ডিজে তিন ম্যাচের সিরিজে সফরকারী কোনো দলের পক্ষে সর্বোচ্চ রান এখন তামিমের (২৮৭)।
আর এদিনও সাকিব আল হাসানের সঙ্গে দারুণ জুটি হয়েছে তামিমের। দ্বিতীয় উইকেটে ৮১ রান যোগ করেন এই দুজন। সাকিব ৩৭ রান করেন। এদিন দারুণ ব্যাট করলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। অপরাজিত ৬৭ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। ছয় নম্বরে নেমে ২৫ বলে ৩৬ রানের ইনিংস খেলেন মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। তাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নিজেদের সর্বোচ্চ স্কোরের ইতিহাস লিখা হলো বাংলাদেশের। আগের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটিও এই সিরিজেই লিখেছিল বাংলাদেশ। গায়ানায় প্রথম ওয়ানডেতে ৪ উইকেটে ২৭৯ রান করে।
প্রথম দুই ম্যাচের মতো এদিনও টসে জয় লাভ করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। প্রথমে ব্যাটিং বেছে নেন তিনি। তামিম ইকবালের সঙ্গে ওপেন করতে নেমে এদিন ৩১ বলে মাত্র ১০ রান করে ফিরে যান এনামুল হক বিজয়। তার অমন মন্থর-ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের শুরুটাও তাই ছিল মন্থর। ৯.৩ ওভারে দলীয় ৩৫ রানে ফিরেন বিজয়। জেসন হোল্ডারের বলে কাইরান পাওয়েলের হাতে ক্যাচ হন তিনি।
এরপর তামিম ইকালের সঙ্গে সাকিবের দারুণ জুটি। যে জুটিতে দলীয় শতরান পার করে বাংলাদেশ। ২২.১ ওভারে দলীয় শতরান পূরণ করে বাংলাদেশ। তামিম তোলে নেন ফিফটি। তবে ২৬তম ওভারে নার্সের বলে কিমো পলের হাতে ক্যাচ হন সাকিব। ৪৪ বলে ৩ চারে ৩৭ রান করেন সাকিব। প্রথম ওয়ানডেতে দুজন গড়েছিলেন ২০৭ রানের জুটি। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে এই দুজন ৯৭ রানের জুটি উপহার দেন।
সাকিব ফেরার পর মুশফিকুর রহীমের সঙ্গে ৩৬ রানের জুটি তামিমের। মুশফিক ১২ রান করে নার্সের বলে বোল্ড হয়ে ফিরলে উইকেটে আসেন মাহমুদউল্লাহ। এই জুটিতে বাংলাদেশ দুইশ রানের কোটায় পৌঁছায়। সেঞ্চুরি তুলে নেন তামিম। তবে সেঞ্চুরি তোলার পর দেবেন্দ্র বিশুর বলে পাওয়েলের হাতে ক্যাচ হন তামিম। ৩৮.৫ ওভারে দলীয় ঠিক ২০০ রানে কাটা পড়েন তিনি। ১২৪ বলে ৭ চার ও ২ ছক্কায় ১০৩ রান করেছেন তামিম।
তামিম ফেরার পর সাব্বির ও মোসাদ্দেককে রেখে ছয় নম্বরে ব্যাট করতে আসেন অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। পরিকল্পনাটা কাজে লেগেছে দারুণ। মাশরাফী ২৫ বলে ১ ছক্কা ও ৪ চারে করেছেন ৩৬ রান। মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে হয়েছে তার ৫৩ রানের জুটি। যে জুটিতে বেড়েছে বাংলাদেশের রানের চাকা।
জেসন হোল্ডারের বলে গেইলের হাতে ক্যাচ হয়ে যখন ফিরেন মাশরাফী, তখন ৪৫.৫ ওভারে ২৫৩ বাংলাদেশের স্কোর। শেষ ৪ ওভারে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ৪৮ রান। তাতে তিনশ পেরোনো স্কোর পায় বাংলাদেশ। যেখানে সবচেয়ে বড় অবদান মাহমুদউল্লার। তাকে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন সাব্বির ও মোসাদ্দেক হোসেন। সাব্বির ৯ বলে ২ চারে ১২ রান করেন। মোসাদ্দেক ৫ বলে ১ চারে করেন অপরাজিত ১১ রান। আর মাহমুদউল্লাহ ৪৯ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৬৭ রানে অপরাজিত থেকে যান।
ক্যারিবীয়দের পক্ষে সর্বাধিক ২টি করে উইকেট নিয়েছেন জেসন হোল্ডার ও অ্যাশলে নার্স। ১টি করে উইকেট নিয়েছেন শেলডন কটরেল ও দেবেন্দ্র বিশু।