১৪৩ রানে থমকে গেল বাংলাদেশ

 

স্পর্টস ডেস্ক: প্রথম ওভারেই আউট দুই ওপেনার। পরের দুই ব্যাটসম্যানও নেই ষষ্ঠ ওভারে। মাথা তুলে দাঁড়ানোর দুঃসাহস দেখাচ্ছিল মাহমুদউল্লাহর ব্যাট। তিনিও নুইয়ে পড়েন একটা সময়ে। ব্যাটিং উইকেটে বাংলাদেশ তাই করতে পারেনি দেড়শ রানও।

তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে সেন্ট কিটসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশ করতে পেরেছে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৪৩ রান।

শুরুতে জোড়ায় জোড়ায় উইকেট হারালেও মাহমুদউল্লাহর সৌজন্যে একাদশ ওভারেই একশ ছুঁয়েছিল দলের রান। তবে ততক্ষণে নেই ৫ উইকেট। কেসরিক উইলিয়ামসের ৪ উইকেটে পরের সময়টুকুতে আরও ধুঁকেছে বাংলাদেশ।

টসের পর নামা বৃষ্টিতে খেলা খেলা হয়েছিল দেরিতে। বৃষ্টি থামলে বাংলাদেশ শুরু করে আত্মহত্যার খেলা। রেকর্ড বইয়ে নাম লেখান দুই ওপেনার; যে রেকর্ড অনাকাঙ্ক্ষিত।

অ্যাশলি নার্সের অফ স্পিন দিয়ে প্রথমবার বোলিং শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ পায় দারুণ সাফল্য। ম্যাচের প্রথম বলেই বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে অনায়াসেই স্টাম্পড তামিম ইকবাল।

এই প্রথমবার টি-টোয়েন্টি ম্যাচের প্রথম বলেই স্টাম্পড হলেন কোনো ব্যাটসম্যান।

তিনে নামা লিটন দাস শুরু করেছিলেন প্রথম বলে বাউন্ডারি মেরে। পরের বলে তার সিঙ্গেলে স্ট্রাইক পেলেন সৌম্য সরকার। সামনে খেলার বল পেছনে খেলে হলেন বোল্ড।

টি-টোয়েন্টিতে এই প্রথম কোনো দলের দুই ওপেনারই আউট হলেন মুখোমুখি প্রথম বলে।

লিটন ও সাকিব আল হাসানের ব্যাটে সেই ধাক্কা অনেকটাই সামাল দিয়েছিল বাংলাদেশ। তৃতীয় ওভারে স্যামুয়েল বদ্রিকে টানা দুটি চার মারেন লিটন। পরের ওভারে আন্দ্রে রাসেলকে চার বলে তিন বাউন্ডারি মারেন সাকিব।

কিন্তু এই দুজনও কাজ অসমাপ্ত রেখে ফেরেন জোড় বেঁধে। ষষ্ঠ ওভারে কিমো পলের শর্ট বলে সীমানায় ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ২১ বলে ২৪ রান করা লিটন। পরের বলে আবারও শর্ট বলেই আপার কাট খেলে সীমানায় কেসরিক উইলিয়ামসের দারুণ ক্যাচের শিকার সাকিব। বাংলাদেশ অধিনায়ক করেছেন ১০ বলে ১৯।

সেখান থেকেই মাহমুদউল্লাহর চোখধাঁধানো প্রতি আক্রমণ। জোড়া উইকেটের পরের ওভারেই চমকে দেন বদ্রির টানা তিন বলে দুটি বাউন্ডারি ও এক ছক্কায়। পরের ওভারে দুর্দান্ত টাইমিংয়ে কিমো পলকে আছড়ে ফেলেন গ্যালারিতে।

আরেক পাশে মুশফিকও শুরু করেছিলেন দারুণ। গড়ে উঠছিল জুটি। ২৪ বলে ৪৭ রানের দারুণ সম্ভাবনাময় সেই জুটির অপমৃত্যু আবারও আপার কাট শটে।

জায়গা বানিয়ে থার্ডম্যান দিয়ে একটি চার মেরেছিলেন মুশফিক। তার জন্য তাই পাতা হয় ফাঁদ, থার্ডম্যান ফিল্ডার একটু সোজাসুজি রেখে শর্ট বল করেন উইলিয়মস। মুশফিক ফাঁদে পা দেন পরের বলেই সেখানে ক্যাচ দিয়ে।

বাকি সময়ে দল এগিয়েছে খুঁড়িয়ে। ইনিংস গড়ার পর্যাপ্ত সময় থাকলেও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি আরিফুল হক। করেছেন ১৮ বলে ১৫।

দল তাকিয়ে তখন মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে। প্রয়োজন ছিল তার শেষ পর্যন্ত থাকা। কিন্তু বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে উইলিয়ামসের স্লোয়ারে যখন বোল্ড হলেন, ইনিংসের বাকি তখনও ২৩ বল। তার ২৭ বলে ৩৫ রানের ইনিংসটা হয়ে থাকল অপূর্ণতার গল্প।

বাংলাদেশের ইনিংসটিও তেমনই। নিখাদ ব্যাটিং উইকেটে রান হতে পারত আরও অনেক বেশি।

প্রথম ওভারে দুই উইকেটের পর আর বোলিং পাননি নার্স। পেসারদের দারুণ বোলিংয়ে সেটির প্রয়োজনই হয়নি। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে প্রথমবার ৪ উইকেট নিয়েছেন উইলিয়ামস।

বাংলাদেশের ইনিংস শেষের পর আবার বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ থাকার পর জয়ের জন্য ১১ ওভারে ৯১ রানের লক্ষ্য পেয়েছে স্বাগতিকরা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৪৩/৯ (তামিম ০, সৌম্য ০, লিটন ২৪, সাকিব ১৯, মুশফিক ১৫, মাহমুদউল্লাহ ৩৫, আরিফুল ১৫, মিরাজ ১১, অপু ৭, রুবেল ২*, মুস্তাফিজ ৩*; নার্স ২/৬, রাসেল ১/২৭, বদ্রি ০/৩৫, পল ২/২৪, ব্র্যাথওয়েট ০/২১, উইলিয়ামস ৪/২৮)