জলবিদ্যুৎ বিষয়ে সমঝোতা চুক্তি হচ্ছে নেপালের সঙ্গে

নেপালে একটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পঅবশেষে নেপালের সঙ্গে জলবিদ্যুৎ দিয়ে সমঝোতা চুক্তি সই করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এজন্য বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল আগামী ৯ আগস্ট নেপাল যাচ্ছেন।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, আগামী সপ্তাহে সমঝোতা চুক্তিটি সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রথমে দ্বিপক্ষীয়ভাবে দেশ দুটির মধ্যে বিদ্যুৎ খাতে সহায়তা সম্প্রসারণের জন্য এমওইউটি সই হবে।

পরবর্তীতে প্রতিবেশী দেশ ভারতকে উভয় দেশ মিলে অনুরোধ করা হবে। কারণ ভারতের ভূমি ব্যবহার করেই এই বিদ্যুৎ বাংলাদেশে আনতে হবে। এমওইউ সই হওয়ার পর ভারতের মতো নেপালের সঙ্গে যৌথ স্টিয়ারিং কমিটি ও ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হবে। ফলে দেশটির বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগের বিষয়ে দ্রুত কার্যকর সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হবে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা।

২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে নেপালের জ্বালানি মন্ত্রী জনার্দন শর্মা ঢাকা সফরে আসেন। ওই সময়ের আলোচনায় নেপাল-বাংলাদেশ জল বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়। এরপর দুই দেশের বিদ্যুৎ বিভাগ সমঝোতা চুক্তির খসড়া তৈরির কাজ শুরু করে।

এ বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের যুগ্মসচিব ফয়জুল আমীন বলেন, নেপালে জল বিদ্যুৎ উৎপাদন, নেপাল থেকে জল বিদ্যুৎ আমদানি, সোলার হোম সিস্টেমের অভিজ্ঞতা নেপালের সঙ্গে বিনিময় এবং বাংলাদেশের বিদ্যুৎখাতের সাফল্যর আলোকে নেপালের বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নয়ন করার বিষয়গুলো এই সমঝোতায় অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে ভারত একটি নীতিমালা করেছে। যাতে সরাসরি ভারতের ওপর দিয়ে তৃতীয় কোনও দেশ বিদ্যুৎ আনতে পারবে না বলে বলা হয়েছে। এইক্ষেত্রে ভারতের সহায়তা ছাড়া নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানি সম্ভব নয়। এ বিষয়ে একজন কর্মকর্তা জানান, নেপাল এবং বাংলাদেশ মিলে ভারতকে অনুরোধ করা হবে। এই অনুরোধে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহারের অনুমতি চাওয়া হবে। সেক্ষেত্রে ভারতের সংশ্লিষ্ট কোম্পানি শুধুমাত্র বিদ্যুৎ পরিবহনের জন্য হুইলিং চার্জ (সঞ্চালনের অর্থ) পেতে পারে।

বর্তমানে নেপালে ৩০ হাজার মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা থাকলেও দেশটি বর্তমানে সামান্য পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে।এখানেও ভারতের বিভিন্ন কোম্পানি কয়েকটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ করার উদ্যোগ নিয়েছে। জিএমআর নামে ভারতীয় একটি কোম্পানি নেপালে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করছে।

তারা বাংলাদেশে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বিক্রির প্রস্তাবও দিয়েছে সরকারকে। এছাড়া ভারতের রাষ্ট্রীয় কোম্পানি এনভিভিএন নেপাল থেকে ৫০০ থেকে ৯০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশে বিক্রি করতে আগ্রহী। এজন্য বাংলাদেশ সরকার অথবা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এর সঙ্গে দীর্ঘ মেয়াদি বিদ্যুৎ বিক্রয় চুক্তি সইয়ের প্রস্তাবও দিয়েছে তারা।

বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়, নেপালের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো নির্মাণ করা হবে। কেন্দ্রে নেপাল এবং বাংলাদেশ সরকারের মালিকানা থাকবে। বাংলাদেশে যে প্রক্রিয়ায় কয়লা চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে একই পদ্ধতি নেপালের ক্ষেত্রেও অনুসরণ করা হবে।