সামনেই ঈদুল আজহা। আগামী ২২শে আগস্ট উদযাপিত হবে ধর্মীয় এই উৎসব। বরাবরই এই উৎসবকে কেন্দ্র করে টিভি চ্যানেলগুলোর থাকে বিশাল আয়োজন। এরমধ্যে দর্শকের চোখ থাকে বেশি নাটকের দিকে। এবারের ঈদে প্রায় ছয় শতাধিক নাটক নির্মাণ হচ্ছে। জনপ্রিয় নির্মাতাদের পাশাপাশি এসব নাটক নির্মাণ করছেন অনেক নতুন নির্মাতা।
রোজার ঈদের পর থেকেই টিভি তারকাদের শুরু হয় কোরবানি ঈদের নাটকের ব্যস্ততা। অনেক তারকা শিল্পী ঈদের আগের দিন পর্যন্ত শুটিং নিয়ে ব্যস্ত থাকবেন বলে জানিয়েছেন। ঈদের সময় টিভি চ্যানেলগুলোতে হাসির নাটক বেশি দেখা যায়।
কিছু কিছু নাটকে দর্শকদের জোর করে হাসানোর চেষ্টা থাকে বলেও অনেকে মন্তব্য করেন। গেল ঈদে বিশ্বকাপ ফুটবলের আমেজ ছিল ঈদের নাটকে। কিন্তু এবার নতুন কী থাকছে ঈদের নাটকে? এই প্রসঙ্গে অভিনেতা আবুল হায়াত বলেন, আমাদের নাটকে এখন আর নতুন কী থাকার আছে? সারা বছরই একই ধরনের গল্পের নাটক নির্মাণ হতে দেখি। এরমধ্যে দু-একটি ব্যতিক্রম থাকে। আমাকেও ঈদের নাটকে দেখা যাবে। অনেক ভালো কিংবা নতুন কিছু করেছি তেমন বলার মতো নেই। ঈদের নাটকে নতুন কী থাকছে এই প্রসঙ্গে নির্মাতা সাগর জাহান বলেন, ঈদের সময় দর্শক বিনোদন খোঁজে।
সুতরাং, দর্শকের কথা নির্মাতাকে ভাবতে হবে। আমি বরাবরই দর্শকের কথা ভেবে নাটক নির্মাণ করি। নাটকের গল্প বিভিন্ন রকম হতে পারে। তবে আমি আমার নাটকের মধ্যদিয়ে দর্শকদের আনন্দ দিতে চাই। যারা আমার নাটকের নিয়মিত দর্শক তারা নিশ্চয় জানেন আমি কেমন ধরনের নাটক নির্মাণ করে আসছি। তবে আরো একটি বিষয় আমার নাটকে থাকে। সেটি হলো হাসির ছলে সামাজিক যেকোনো একটি ম্যাসেজ।
এবারের নাটকগুলোও আমার সেই রকম।
এই প্রসঙ্গে নির্মাতা শিহাব শাহিন বলেন, ঈদের জন্য আমি তিনটি নাটক নির্মাণ করেছি। তিনটি নাটকের গল্প তিন রকম। সত্যি বলতে, কোরবানির ঈদের জন্য সময় কম পাওয়া যায়। সেই কারণে অল্প সময়ের মধ্যেই আমাদের কাজ শেষ করতে হয়। তবুও আমি চেষ্টা করেছি আমার নাটকে সামাজিক কিছু ম্যাসেজ তুলে ধরতে। শুধু হাসির নাটক দিয়ে দর্শকের মন জয় করা যায় না। বাস্তবধর্মী গল্পের নাটকও দর্শক দেখতে চায় বলে আমি মনে করি। এবার ঈদে সাজিন আহমেদ বাবুর রচনা ও পরিচালনায় থাকছে একাধিক নাটক। জনপ্রিয় তারকা শিল্পীদের উপস্থিতি থাকছে তার নাটকগুলোতে।
ঈদের নাটক নিয়ে তিনি বলেন, আমি এবার নিরীক্ষাধর্মী নাটক নির্মাণের চেষ্টা করেছি। একটি পার্টি সেন্টারে একসঙ্গে আশিজন শিল্পী নিয়ে কাজ করেছি একটি নাটকে। এক রুমেই সাত পর্বের নাটকটি শেষ করা হয়েছে। এরআগে এমন কেউ করেছে কি না আমার জানা নেই। আমার অন্য নাটকগুলোও একেকটি ভিন্ন ভিন্ন গল্পে দর্শক দেখবে। যদিও সংখ্যায় আমার নাটক বেশি। কিন্তু এগুলো আমি বেশ সময় নিয়ে লিখেছি। আমি চাই দর্শক নতুন কিছুর মুখোমুখি হোক।
নাটক সংশ্লিষ্টদের মতে, শুধু কমেডি-হাসির নাটক নির্মাণ থেকে নির্মাতাদের বের হয়ে আসা প্রয়োজন। দর্শক বিনোদন খোজে তাই বলে দর্শকদের জোর করে হাসানোর কোনো মানে হয়না। দর্শক সিরিয়াস গল্পের পাশাপাশি সমসাময়িক নানা ধরনের গল্পের নাটক দেখতে চায়। এই বিষয়গুলো নির্মাতাদের ভাবতে হবে। আর সস্তা জনপ্রিয়তার জন্য অভিনয় না করে শিল্পীদেরও উচিত গল্প নির্বাচনে আরো সচেতন হওয়া।