ডিজিটাল কারচুপির মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে পুনরায় ক্ষমতায় আনতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন-ইভিএম ব্যবহারের পাঁয়তারা করছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা এবং নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ।
রোববার বিকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মুখপাত্র সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমদে এমন অভিযোগ করেছেন।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন তাড়াহুড়া করে দেড় লাখ ইভিএম কেনার উদ্যোগ নিয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে। ক্রয় ও সংরক্ষণের জন্য এ প্রকল্পের ব্যয় হবে ৩ হাজার ৮২১ কোটি ৪০ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
‘অথচ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইসির সঙ্গে সংলাপে আওয়ামী লীগ ছাড়া প্রায় সব রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, পেশাজীবী সংগঠন ইভিএমের বিপক্ষে মত দিয়েছে। এমনকি প্রধান নির্বাচন কমিশনারও একাধিকবার বলেছেন- সবাই না চাইলে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার হবে না’ যোগ করেন তিনি।
বিএনপি মুখপাত্র বলেন, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ ব্যক্তির গণমাধ্যমে জাতির উদ্দেশে রাখা বক্তব্য জনগণের নিকট অঙ্গীকারনামার মতো বিবেচিত হয়। কিন্তু প্রতিশ্রুত বক্তব্য থেকে সরে গিয়ে সিইসি বিপুল অংকের টাকায় দেড় লাখ ইভিএম মেশিন ক্রয় করার উদ্যেগ নিচ্ছেন।
‘একই সঙ্গে কমিশনের সচিব গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২ সংশোধন করে ইভিএম ব্যবহারের বিধান অন্তর্ভুক্তের ইঙ্গিত দিয়েছেন যা সম্পূর্ণভাবে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা’ যোগ করেন তিনি।
রিজভী বলেন, আগামী নির্বাচনকে ক্ষমতাসীনদের অনুকূলে ম্যানিপুলেট করার জন্য ইভিএম ব্যবহার প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং কমিশনের সচিবের যৌথ প্রযোজনা।
তিনি বলেন, ইভিএম মানেই ত্রুটিযুক্ত নির্বাচন। ইভিএম দিয়ে কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। ইভিএমে সাধারণ মানুষের আস্থা নেই। এ মেশিন দ্বারা ডিজিটাল কারচুপি হওয়া সম্ভব।
বিএনপি মুখপাত্র বলেন, ইভিএম সম্পর্কে এর আগে বিস্তারিত আমরা জানিয়েছি। আগামী নির্বাচনে কারচুপির মাধ্যমে জনবিচ্ছিন্ন আওয়ামী সরকারকে পুনরায় ক্ষমতায় বসানোর জন্যে বিতর্কিত ইভিএম ব্যবহারের পাঁয়তারা করছেন সিইসি এবং কমিশন সচিব।
তিনি বলেন, কোনো অবস্থাতেই আগামী নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করতে দেয়া হবে না। আগামী নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের অশুভ তৎপরতা বন্ধ করতে জনগণ প্রস্তত।
রিজভী আরও বলেন, ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে নির্বাসনে পাঠিয়ে এখন আগামী নির্বাচন নিয়ে অবৈধ সরকার নতুন নতুন ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। মসনদ হারানোর ভয়ে ক্ষমতাসীনরা মানসিক ভারসাম্যহীনতায় ভুগছে।’
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনের আগেই এ সরকারের পতন হবে এমন আলামত দেখে দেশব্যাপী মিথ্যা মামলার ছড়াছড়ি আর নির্বিচারে গ্রেফতারের হিড়িক শুরু হয়েছে। ঈদের প্রাক্কালেও দেশজুড়ে গণগ্রেফতারের অবিরাম অভিযান চলছে। গ্রেফতার করা হচ্ছে বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ নেতা, জনপ্রতিনিধিসহ হাজার কর্মীদের।
বিএনপি মুখপাত্র বলেন, ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে সরকার মরণ কামড় দিচ্ছে। কিন্তু তাদের সময় পার হয়ে গেছে। শেখ হাসিনার অধীনে আগামী নির্বাচন হবে না। আগামী নির্বাচন হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। এবার গায়ের জোর খাটিয়ে কোনো লাভ হবে না।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি নেতা আবুল খায়ের ভূইয়া, আবদুস সালাম, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, মুহাম্মদ মুনির হোসেন প্রমুখ।