শাকিব-শ্রাবন্তীর প্রেমে তোলপাড় দুই বাংলা

প্রেমিকপুরুষ শাকিব খানের রোমান্সে ভরা মনকে নাকি আবার উসকে দিয়েছে বসন্তের মাতাল হাওয়া। এমন খবর এখন শুধু এ বাংলায় নয়, ওপার বাংলার মানুষের কানে কানে লতিয়ে উঠেছে। তবে এ খবরের জোরালো কোনো সত্যতা কেউই এখন পর্যন্ত খুঁজে পায়নি। অনেকের কথায় শাকিবের ক্যারিয়ারের সাফল্যে বরাবরই ঈর্ষান্বিত কিছু মানুষ তার বিরুদ্ধে এ ধরনের অপপ্রচার চালাতে আদাজল খেয়ে নেমেছেন। অনেকের কথায় এক সঙ্গে কাজ করতে গেলে মনের সঙ্গে মনের ধাক্কা আর বেপরোয়া চোখের চোখাচোখি হতেই পারে। তাই বলে প্রেম? প্রেম কি এতই সহজ? চোখে চোখ পড়লেই হয়ে গেল? যত্তসব বাজে কথা! শাকিবের নতুন প্রেমের খবরকে এভাবে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছেন অনেকে।

আবার অনেকে ঠোঁট বাঁকিয়ে বলছেন শাকিব তো প্রেমিকপুরুষ। এর প্রমাণ তো অনেকবারই পাওয়া গেছে। তিনি ফের প্রেমে পড়বেন এতে কপালে চোখ ওঠার কী আছে। তিনি আবার কারও প্রেমে পড়লে তাতে হা-পিত্যেশ করারইবা কী আছে? মানুষের মন হচ্ছে জল ফড়িং আর প্রজাপতির মতো। ফুলে ফুলে উড়ে বেড়াতেই পারে।

আসলে দুই বাংলায় শাকিবের প্রেমের যে খবরটি চাউর হয়েছে সে খবরের পাত্রী হলেন টলিউড কন্যা সুশ্রী শ্রাবন্তী। বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলো দুজনের সম্পর্কের কথা নিয়ে আগেই সরব ছিল। এবার ভারতীয় মিডিয়া দুজনকে নিয়ে বেশ মাতামাতি শুরু করে দিয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যমে পেইজ থ্রি সংবাদের মূল আকর্ষণ থাকে তারকাদের প্রেম।

এবার তেমনই এক খবরের শিরোনাম করল তারা এপার বাংলার শীর্ষ নায়ক শাকিব খানকে নিয়ে। আর তার সঙ্গে নাম জড়িয়েছে কলকাতার শ্রাবন্তীর। দুজনকে নিয়ে রগরগে খবর প্রকাশ করেছে।

চলতি মাসে ভারতীয় গণমাধ্যম জি নিউজ এক খবরে বলেছে— ‘টালিগঞ্জের স্টুডিও পাড়ায় কান পাতলে শোনা যাচ্ছে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র তারকা শাকিব খানের সঙ্গে নাকি সম্পর্কে রয়েছেন অভিনেত্রী শ্রাবন্তী। প্রথমে ‘শিকারি’ এরপর শাকিবের সঙ্গে ‘ভাইজান এলো রে’ ছবিতে অভিনয় করেছেন শ্রাবন্তী। লন্ডনে ভাইজান এলোরে ছবির শুটিং চলাকালীনই তাদের সম্পর্কের গুঞ্জন শোনা যায়।

শোনা যায়, সিনেমায় একটি দৃশ্যের শুটিংয়ের জন্য রোমান্টিক পোজ দিচ্ছিলেন শ্রাবন্তী-শাকিব। এই দৃশ্যটি শুট হয়ে গেলেও তারা নাকি দুজনে ওই একইভাবে একে অপরের দিকে তাকিয়ে মন্ত্রমুগ্ধের মতো দাঁড়িয়ে থাকেন। নির্মাতার কাট শব্দেও মগ্নতা ভাঙেনি তাদের।

এমন খবর শুনে চলচ্চিত্রবোদ্ধারা বলছেন, যারা প্রকৃত শিল্পী তারা যখন অভিনয় করে তখন তাতে এমনভাবে ডুবে যায় কোনো কিছুতেই তাদের মগ্নতা ভাঙে না। এখানে প্রেমের কথা আসে কীভাবে। আসলে আমাদের সমাজে এটি একটি পুরনো ব্যাধি। মানে কেউ ভালো কাজ করুক তা অনেকে সহ্য করতে পারেন না। আমার হাতে কেন কাজ নেই আর সে কেন কাজ করছে তাই তাকে যেভাবে হোক ডোবাতেই হবে। গল্পটা অনেকটা সেই লেজ কাটা শেয়ালের মতো। এক লেজ কাটা শেয়াল ভাবল আমার যেহেতু লেজ নেই সেহেতু অন্যের কেন তা থাকবে। অন্যদের লেজও কাটতে হবে। লেজ কাটা শেয়াল অন্যদের লেজ কাটতে আদাজল খেয়ে নামে। শাকিবের বিরুদ্ধেও এখন একই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। শাকিব যখন কলকাতার নায়িকার সঙ্গে জুটি বেঁধে সাফল্য পাচ্ছেন তখনই ওখানকার এক নায়িকার সঙ্গে তাকে জড়িয়ে প্রোপাগান্ডা চালানোর হীন চেষ্টা শুরু হয়ে গেছে।

চলচ্চিত্রবোদ্ধাদের এই কথার সত্যতা পাওয়া যায় তখনই যখন দেখা যায় যারা এ খবর রটাচ্ছেন তারা এর পক্ষে কোনো যুক্তি দেখাতে পারছেন না। চলচ্চিত্রকাররা শাকিবকে এসব কথায় কান না দিয়ে তার উন্নত কাজের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। অপুর সঙ্গে শাকিবের ডিভোর্সের আগে ও পরে বুবলির সঙ্গেও শাকিবকে জড়িয়ে গোপন প্রেম বিয়ের খবর চাউর করেছিল একটি মহল। কিন্তু তাতেও হালে পানি পায়নি তারা। আগামীতেও শাকিবের বিরুদ্ধে যত রটনা রটানো হোক এতে তার কোনো ক্ষতি কেউ করতে পারবে না। এটিই চিরন্তন সত্য বলছেন চলচ্চিত্রবোদ্ধা এবং শাকিবের ভক্তরা।

এদিকে ব্যাংককে ছবির শুটিং শেষ করে ঈদের আগের দিন দেশে ফিরে শাকিব খান সাংবাদিকদের বলেন, ব্যাংকক থেকে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার পথ পাড়ি দিয়ে প্রতিদিন দুর্গম এলাকায় শুটিংয়ে যেতে হতো। আবার সাড়ে তিন ঘণ্টার রাস্তা পাড়ি দিয়ে ব্যাংকক ফিরতাম। এত কষ্ট শরীরে আর কুলায় না। তারপরেও দেশের স্বার্থে দেশীয় চলচ্চিত্রের উন্নয়নের জন্য এমন কঠিন পরিশ্রম করে যাচ্ছি। বিনিময়ে দেশ আর দেশের মানুষের ভালোবাসা পাচ্ছি। এটিই আমার কষ্ট আর কাজের সার্থকতা। কে আমার বিরুদ্ধে কী বলল বা করল তাতে আমার কিছু যায় আসে না। আমি দেশের জন্য কাজ করে সাফল্য পাচ্ছি, কাজের মাধ্যমে বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে পারছি এটিই আমার সবচেয়ে বড় সার্থকতা।

প্রয়াত নায়করাজের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শাকিব বলেন, তিনি সব সময়ই আমাকে একটি কথা বলতেন, আর তা হলো—‘দেখ শাকিব, ঝড়-ঝাপটা সব সময় বড় গাছগুলোর ওপর দিয়েই বয়ে যায়, তুমি এখন দেশীয় চলচ্চিত্রের বটবৃক্ষ। তোমার ওপর দিয়ে ঝড়-ঝাপটা বয়ে যাবে এটিই স্বাভাবিক। এসবকে পাত্তা না দিয়ে নিজের মতো করে চলচ্চিত্রের উন্নয়নে কাজ করে যাও। দেশ তোমার মূল্যায়ন করবে।’