ভুতুড়ে জাহাজটি আসছিল বাংলাদেশে

ইয়াঙ্গুনের কাছে সৈকতে আটকেপড়া ভুতুড়ে জাহাজটিকে একটি টাগবোট বাংলাদেশে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল।

মিয়ানমারের বাণিজ্যিক রাজধানীর উপকূলের কাছে গত সপ্তাহে জেলেরা স্যাম রাতুলাঙ্গি পিবি ১৬০০ নামের জাহাজটির সন্ধান পায় বলে কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বিবিসি।

জাহাজটি কী করে মিয়ানমারের জলসীমায় এলো, এর পেছনে কোনো উদ্দেশ্য আছে কিনা গত কয়েক দিন ধরে সেসব খতিয়ে দেখছিল দেশটির পুলিশ।

গত বৃহস্পতিবার নৌবাহিনী ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা সমুদ্রসৈকতে আটকেপড়া ওই জাহাজটির ভেতর অনুসন্ধান চালায়।

সে সময় ইন্দোনেশিয়ার পতাকাবাহী জাহাজটিতে কোনো নাবিক বা পণ্য ছিল না বলে ফেসবুকে জানিয়েছিল ইয়াঙ্গুন পুলিশ।

শনিবার মিয়ানমার নৌবাহিনী জানায়, একটি টাগবোট ওই জাহাজটি বাংলাদেশের একটি শিপব্রেকিং ইয়ার্ডে নিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু পথে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে জাহাজটি দড়ি ছিঁড়ে সমুদ্রে হারিয়ে যায়।

মিয়ানমারের জলসীমায় পরিত্যক্ত জাহাজ ভেসে আসার ঘটনা এটিই প্রথম।

বিশ্বজুড়ে জাহাজ চলাচলের খবরাখবর দেয়া মেরিন ট্রাফিক ওয়েবসাইটের তথ্যানুযায়ী, স্যাম রাতুলাঙ্গি পিবি ১৬০০ নামের জাহাজটি ২০০১ সালে নির্মিত। কনটেইনার পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত এ জাহাজের দৈর্ঘ্য ১৭৭ মিটারেরও বেশি।

সেখানে জাহাজটির সর্বশেষ অবস্থান রেকর্ড করা হয় ২০০৯ সালে, তাইওয়ান উপকূলে। ৯ বছর পর ইয়াঙ্গুনের কাছে এর খোঁজ মিলল।

অনুসন্ধানে জাহাজটির মাথায় দুটি দড়ি বাঁধা থাকতে দেখে মিয়ানমার নৌবাহিনীর প্রথম সন্দেহ হয়, হয়তো অন্য একটি জাহাজ এটিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল।

সে অনুযায়ী তল্লাশি শুরু করে মিয়ানমার উপকূল থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে ইনডিপেনডেন্স নামে একটি টাগবোট খুঁজে পায় তারা।

ওই টাগবোটে থাকা ইন্দোনেশিয়ার ১৩ জন ক্রুকে জিজ্ঞাসাবাদের পর জানা যায়, তারা গত ১৩ আগস্ট থেকে জাহাজটি টেনে নিয়ে যাচ্ছিল। তারা সেটিকে বাংলাদেশের একটি শিপব্রেকিং ইয়ার্ডে নিতে চেয়েছিল।

কিন্তু ঝড়ের মধ্যে পড়ে দুই জাহাজে বাঁধা দড়ি ছিঁড়ে গেলে তারা সেটি পরিত্যাগের সীদ্ধান্ত নেয়। টাগবোটটির মালিক মালয়েশিয়ার নাগরিক বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিস্তারিত তদন্ত করে দেখছে।