দেবর ভাবীর পরকীয়া, অতঃপর…

গত ৭ই সেপ্টেম্বর ঢাকায় খুন হওয়া মনিরুজ্জামান মনিরের (৩৫) হত্যা রহস্য উদঘাটন হয়েছে। স্ত্রী ও ছোট ভাই যোগসাজসে ভাড়াটে খুনি দিয়ে হত্যা করে মনিরকে। স্ত্রী কাজল রেখা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এমনটাই জানিয়েছেন।

কাজল রেখার জবানবন্দি অনুযায়ী, গত আট-নয় বছর আগে মানিরের ভাই আজমল অসুস্থ অবস্থায় তাদের দিনাজপুরের বাসায় আসেন। এসময় তার সেবা- শুশ্রূষা করতে গিয়ে তাদের দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে মনির কাজের খোঁজে দিনাজপুরে চলে গেলে, আজমলের সঙ্গে কাজল রেখার সম্পর্ক আরো গভীর হয়। এক পর্যায়ে আজমল বিয়ে করতে চায় কাজলকে। কিন্তু মনির বেঁচে থাকলে তা সম্ভব নয় বলে তারা দুজনে মিলে মনিরকে হত্যা পরিকল্পনা করতে থাকেন।

তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী ঈদের সময় ঢাকায় অবস্থানরত আজমল তার ভাইকে হত্যার জন্য ভাড়াটে খুনি ঠিক করতে থাকেন। এক লক্ষ টাকা দিয়ে ভাড়াটে খুনি ঠিক করে অগ্রিম ৩০ হাজার টাকাও দেন তাদেরকে। কিন্তু তখন পরিকল্পনা সফল না হলেও পরবর্তীতে নিজের বিয়ের জন্য পাত্রী দেখার কথা বলে বড় ভাই মনিরকে ঢাকায় আনেন তিনি। ঢাকায় আজমলের বাসায় যাওয়ার কথা বলে দিনাজপুরে থেকে ৭ সেপ্টেম্বর রওনা দেন মনির। পরে ঢাকায় পৌঁছানোর পর রাত দশটার পর থেকে আজমলের মোবাইল বন্ধ পাওয়ার কথা বলে বাড়িতে আহাজারি শুরু করেন কাজল। অপরদিকে পরেরদিন ৮ই সেপ্টেম্বর সকালে রাজধানীর বাড্ডা থেকে মনিরের লাশ উদ্ধারের পরে অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন আজমল।

এদিকে মামলা অন্যদিকে মোড় দেয়ার জন্য স্ত্রী কাজল রেখা বলেন ২০ হাজার টাকা নিয়ে মনির বাড়ি থেকে বের হন। ছিনতাইকারীদের খপ্পড়ে পড়তে পারেন বলে আহাজারি করতে থাকেন তিনি।

তবে তাদের এসকল নাটকের অবসান ঘটে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাড্ডা থানা পুলিশের তদন্তের মাধ্যমে। তথ্য জানার পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কাজল রেখাকে ঢাকায় আনা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে স্বামীকে হত্যার সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেন কাজল। আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন তিনি।

এছাড়া এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত আজমল ও কাজল ছাড়াও ভাড়াটে খুনি আবদুল মান্নান, সোহাগ ওরফে শাওন ও ফাহিম নামের আরো তিনজনকে গতকাল পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এছাড়াও উদ্ধার করা হয়েছে মনির হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি ছুরি ও মনিরের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন সেটটি।