ডাকসু নির্বাচন : সহাবস্থানে আপত্তি নেই ছাত্রলীগের, ছাত্রদল চায় পরিবেশ

আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগেই ডাকসু নির্বাচন চায় ছাত্রলীগ-ছাত্রদলসহ বাম ছাত্র সংগঠনগুলো। তবে জাতীয় নির্বাচনের আগে পসিবল না উল্লেখ করে ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি বলেছেন, যদি এর আগে ডাকসু নির্বাচন হয় তাহলে আমরা সাধুবাদ জানাবো।

একই সাথে ঢাবি প্রশাসনের সাথে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা শেষে ছাত্রলীগ, ছাত্রদল ও বাম সংগঠনগুলো ডাকসু নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক সহাবস্থানের পক্ষে মত দিয়েছে। রোববার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে এই বৈঠক চলে।

বৈঠক শেষে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, রাজনৈতিক সহাবস্থানের পক্ষে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। যদি ছাত্রদল পেট্রল বোমা না নিয়ে ঘুরে, তাহলে সহাবস্থানের পক্ষে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আমরা নির্দিষ্ট টাইম ফ্রেম দিচ্ছি না। যৌক্তিক সময়ে নির্বাচন চাচ্ছি।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিব আহসান বলেন, ডাকসু নির্বাচনকে আমরা স্বাগত জানাই। তবে ডাকসু নির্বাচনের আগে আমরা রাজনৈতিক সহাবস্থান নিশ্চিত চাই৷ বিভিন্ন হলে অন্যান্য ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীদের রাজনৈতিক সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। মধুর ক্যান্টিনে সকল ছাত্রসংগঠনের সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, সামনে জাতীয় নির্বাচন। এটা একটা বড় ইস্যু। নির্বাচনের আগে বা মাঝখানে হলে আমার মনে হয় না ভালো হবে৷ আমার মনে হয় নির্বাচনের পরে যত দ্রুত সম্ভব করা যায়। আমরা কোনো টাইম ফ্রেম বেঁধে দিচ্ছি না। আমার মনে হয় নির্বাচনের আগে পসিবল না৷ যদি হয় তাহলে আমরা সাধুবাদ জানাবো।

তিনি আরো বলেন, ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে আমরা নির্দিষ্ট কোনো টাইম ফ্রেম বেঁধে দেইনি। তবে যতদূর সম্ভব অন্যান্য যারা সিনেট, সিন্ডিকেট মেম্বার আছে, বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক আছে তাদের অন্তর্ভুক্ত করে দ্রুত সময়ের মধ্যে ডাকসু নির্বাচন আমরা চাই৷ সেই ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রদান করবে।

তিনি আরো বলেন, আমি ধিক্কার জানাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক এই সভায় জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছি। ইতিহাস বিকৃতি যারা করে, তারা মস্তিষ্ক বিকৃতির বাইরে নয়।

তিনি আরো বলেন, এখানে অনেক সংগঠন টাইম ফ্রেম বেঁধে দিয়েছে। আমরা জানিনা তাদের সেই ধরনের রাইটস আছে কিনা৷ তারা বলে দিচ্ছে৷ জাতীয় নির্বাচনের আগে ডাকসু নির্বাচন করতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে ডাকসু নির্বাচন হচ্ছে না। আমার মনে হয় তাদের আরো সময় দেওয়া উচিত। একটা জিনিস ভালোভাবে করতে প্রস্তুতি প্রয়োজন। ভোটার তালিকা করতে হবে, আরো আনুষঙ্গিক কাজ রয়েছে। আমার মনে হয় তাদেরও সময় দেওয়া উচিত। সামনে জাতীয় নির্বাচন। এটা একটা বড় ইস্যু। নির্বাচনের আগে বা মাঝখানে হলে আমার মনে হয় না ভালো হবে৷ আমার মনে হয় নির্বাচনের পর যত দ্রুত সম্ভব করা যায়। আমরা কোনো টাইম ফ্রেম বেঁধে দিচ্ছি না। আমার মনে হয় নির্বাচনের আগে পসিবল না৷ যদি হয় তাহলে আমরা সাধুবাদ জানাবো।

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী বলেন, ডাকসু নির্বাচন অতি দ্রুত হওয়া প্রয়োজন৷ কেননা তা না হলে অতীতের মতো নির্বাচন ইস্যু কাজে লাগিয়ে নির্বাচন আটকানো হবে। এছাড়াও আমরা প্রত্যেকটা হলে রাজনৈতিক সহাবস্থানের পক্ষে মত দিয়েছি৷

আলোচনা শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, আজকের আলোচনাটি একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমরা সকল ছাত্রসংগঠনের মতামত শুনেছি৷ তাদের মতামত নোট করে নিয়েছি৷ আমরা অক্টোবরের মধ্যে খসড়া হালনাগাদ প্রকাশ করবো৷ যৌক্তিক সময়ে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে৷

রাজনৈতিক সহাবস্থানের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ক্যাম্পাসে সহাবস্থানের পক্ষে আমরা৷ কোনো ক্রিয়াশীল সংগঠন ক্যাম্পাসে আসতে পারবে না। এমন কোনো বাধা প্রশাসন থেকে নেই।