আসছে ১০ম সমাবর্তন, সাজছে রাবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ১০ম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর (শনিবার)। বহুল প্রতীক্ষিত এ সমাবর্তনকে ঘিরে ক্যাম্পাসকে বর্ণিল সাজে সাজাতে জোর প্রস্তুতি নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। রাস্তা সংস্কার কাজ শেষে এখন বিভিন্ন ভবন ও স্থাপনায় রঙ-তুলির আঁচড় ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে।

এছাড়া প্রশাসন ভবন, কাজী নজরুল ইসলাম মিলানায়তনসহ বেশ কয়েকটি ভবন আলোকসজ্জ্বা করা হয়েছে। তবে এর সাথে সাথে নিরাপত্তার দিকটাও বাদ যাচ্ছে না। নিরাপত্তার সার্থে রাবি’র অভ্যন্তরে এবং বাইরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।

আগের ৯টি সমাবর্তনের তুলনায় এবারের সমাবর্তন অনেক বেশি জাকজমকপূর্ণ হবে বলে জানাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর (শনিবার) আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয় স্টেডিয়ামে ১০ম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত শুরু হবে। এ সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করবেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ। সমাবর্তনে বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও একুশে পদকপ্রাপ্ত এমিরেটাস অধ্যাপক আলমগীর মো. সিরাজউদ্দীন।

এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ উপস্থিত থাকবেন। সমাবর্তন অনুষ্ঠান শেষে বিকেল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেখানে গান পরিবেশন করবেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন।

এর আগে সমাবর্তন অনুষ্ঠান শুরুর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশরত্ন শেখ হাসিনার নামে ছাত্রীদের জন্য একটি আবাসিক হলের ভিত্তি প্রস্থর উদ্বোধন করবেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি। এছাড়াও সমাবর্তনে প্রখ্যাত কথা সাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক ও সেলিনা হোসেনকে সম্মানসূচক ডি.লিট ডিগ্রী প্রদান করা হবে বলে বিশ্ববিদ্যালয় জনসংযোগ দফতরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রভাশ কুমার কর্মকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

প্রশাসন সূত্রে আরো জানা গেছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এই দশম সমার্বতনে আরো অনেক চমকপ্রদ কিছু থাকছে। সেগুলো বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক আবদুস সোবহান সংবাদ সম্মেলন করে সাংবাদিকদের জানাবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী মো. সিরাজুম মুনীর বলেন, সমাবর্তনকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসের রাস্তাগুলো মেরামত করা হয়েছে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভবনসহ একাডেমিক ভবনগুলো রঙ করা হয়েছে। স্টেডিয়ামের চারপাশ রঙ করা হয়েছে। মঞ্চ ও প্যেন্ডেলের কাজের জন্য দায়িত্ব দেয়া আছে খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে এসব প্রস্তুতির কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এম এ বারী জানান, সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মিজানউদ্দিনের সময়ে দশম সমাবর্তনের নিবন্ধন শুরু হয়। ওই সময়ে মোট পাঁচ হাজার ২৭৫ জন গ্রাজুয়েট নিবন্ধন করেন। এরপর মিজানউদ্দিনের মেয়াদ শেষ হলে নতুন উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহান আবারও সমাবর্তনের নিবন্ধনের তারিখ ঘোষণা করেন। এতে ২০১১ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত সময়ে স্নাতকোত্তর, এমফিল, পিএইচডি, এমবিবিএস, বিডিএস ডিগ্রি অর্জনকারীদের নিবন্ধনের সুযোগ দেওয়া হয়। সমাবর্তনে অংশ নিতে মোট ৬ হাজার ৯ জন গ্রাজুয়েট নিবন্ধন করেন। তারপর আরো ৫ জন নিবন্ধন করলে এর সংখ্যা দাঁড়ায় ৬ হাজার ১৪ জন।

এদিকে নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘মহামান্য রাষ্ট্রপতির আগমনে উৎসবমুখর পরিবেশ বজায় রাখতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অতিরিক্ত প্রশাসন মোতায়েনসহ ক্যাম্পাসের প্রধান প্রধান জায়গায় সিসিটিভি ক্যামেরা ব্যাবস্থা করা হবে। এ ছাড়া অনুষ্ঠানস্থালের চারদিকে পুলিশ ও গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়ের করা হয়েছে। সমাবর্তন উপলক্ষে ক্যম্পাসে অবস্থিত ভাসমান দোকানগুলো তুলে দেয়ার ঘোষনা দেয়া হয়েছে। সমাবর্তন শেষে পুণরায় সেগুলো চালু হবে বলে জানান তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থীরা সমাবর্তন অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারবে কিনা জানতে চাইলে জনসংযোগ দফতরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রভাশ কুমার কর্মকার বলেন, এটা শুধু নিবন্ধনকৃত গ্রাজুয়েটদের জন্য। তাই বর্তমান শিক্ষার্থীরা এখানে অংশ নিতে পরবেন না। বর্তমান শিক্ষার্থীরাও পর্যায়ক্রমে সমাবর্তন পাবেন। তবে ওইদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্যম্পাসে আইডি কার্ড নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবে।

প্রসঙ্গত, এর আগে সর্বশেষ ২০১৫ সালের ১৮ জানুয়ারী বিশ্ববিদ্যালয়ের নবম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়।