ক্ষমা চাইতে তনুশ্রীকে নানা-বিবেকের আইনি নোটিশ

যৌন হেনস্তার অভিযোগের পর পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত বর্ষীয়ান অভিনেতা নানা পাটেকার ও চিত্রনির্মাতা বিবেক অগ্নিহোত্রী ক্ষমা চাইতে তনুশ্রী দত্তকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন। দুটো আইনি নোটিশ পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন তনুশ্রী।

প্রাপ্তিস্বীকার করে সাবেক ভারতসুন্দরী বলেছেন, সত্য বলার জন্য তাঁকে এখন মূল্য দিতে হচ্ছে।

২০০৮ সালে ‘হর্ন ওকে প্লিজ’ ছবির ‘নাতনি উতারো’ আইটেম গানটির শুটিং চলাকালে যৌন হেনস্তার শিকার হয়েছিলেন—জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা নানা পাটেকারের বিরুদ্ধে তনুশ্রী দত্তর এমন বিস্ফোরক অভিযোগের পর বিনোদন জগতে তোলপাড় চলছে।

তনুশ্রীর অভিযোগ শুধু নানা পাটেকারের বিরুদ্ধেই নয়, তাঁর অভিযোগ পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রীর বিরুদ্ধেও। ‘আশিক বানায়া আপনে’ অভিনেত্রী বলেছেন, বিবেক তাঁকে একবার বলেছিলেন, ‘পোশাক খুলে’ নাচতে।

তবে ওই অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে নানা ও বিবেক বলেছিলেন, তনুশ্রীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবেন। প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে অভিযুক্ত দুজনই তনুশ্রীকে আইনি নোটিশ পাঠালেন।

আইনি নোটিশ পাওয়ার পর তনুশ্রী দত্ত এক বিবৃতিতে বলেছেন, নিপীড়ন, হেনস্তা ও অবিচারের বিরুদ্ধে মুখ খোলায় তাঁকে এখন মূল্য দিতে হচ্ছে। তিনি অভিযোগ করেন, নানা ও বিবেক দুজনই তাঁর বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাচ্ছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অন্যান্য মাধ্যমে তাঁরা মিথ্যা ও ভুল তথ্য দিচ্ছেন।

নানা ও বিবেকের সমর্থকরা তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ ও সংবাদ সম্মেলন আয়োজনের জন্যও চিৎকার করছে, বলেন তনুশ্রী।

গত সপ্তাহে তনুশ্রীর অভিযোগের পর বলিউডে তোলপাড় শুরু হয়। তারকা অভিনেতা স্বরা ভাস্কর, রিচা চাধা, রাভিনা ট্যান্ডন, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, সোনম কাপুর আহুজা, ফারহান আখতার, সিদ্ধার্থ, বীর দাস, টুইঙ্কেল খান্না, অনুরাগ কাশ্যপ, বরুণ গ্রোভার, ফ্রিদা পিন্টোসহ অনেকেই তনুশ্রীকে সমর্থন জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে তনুশ্রী উল্লেখ করেন, অজ্ঞাত দুজন জোর করে তাঁর বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করেছে। তিনি বলেন, বাড়ির নিরাপত্তারক্ষীরা ওই দুজনকে থামায়। এরপরই পুলিশ এসে ওই এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। এমএনএস (মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা) পার্টির লোকজনও তাঁকে হুমকি দিচ্ছে বলে জানান তনুশ্রী।

ওই বিবৃতিতে তনুশ্রী দত্ত ভারতের বিচারব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রতা নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেন। বলেন, কোনো প্রকার আশান্বিত উপসংহার ছাড়াই দশকের পর দশক মামলা চলতে থাকে। শেষ পর্যন্ত ভগ্ন আশা ছাড়া কিছুই থাকে না। জীবন ধ্বংস হয়ে যায়। এমন অবস্থার মধ্য দিয়েই যেতে হয় ভুক্তভোগীদের।

তনুশ্রী আরো বলেন, ১০ বছর আগে এমন পরিবেশের মধ্য দিয়েই তাঁকে যেতে হয়েছে। আর এসব কারণেই ভারতে ‘মি টু’ আন্দোলন হয় না।