যশোরের চৌগাছায় দিলরুবা বেগম (৬০) নামের এক বৃদ্ধার রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় স্বামী মোস্তাফিজুর রহমানকে (৭০) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রোববার সকালে চৌগাছা উপজেলার আন্দারকোট গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। এই দম্পতির ছেলে মাসুদ রানা মালয়েশিয়া প্রবাসী ও মেয়ে লিপি আমেরিকার নাগরিক।
পুত্রবধূ ও নাতিকে নিয়ে তারা স্বামী-স্ত্রী বসবাস করতেন। নাতিকে নিয়ে পুত্রবধূ স্কুলে গেলে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় স্বরূপদাহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ আনোয়ার হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এলাকাবাসীর দাবি, অজ্ঞাত কবিরাজের সঙ্গে ওই বৃদ্ধের ধর্ম আত্মীয় ছিল। প্রায় তাদের বাড়িতে আসতেন। কিন্তু তার নাম পরিচয় জানা নেই। রোববার ওই দম্পতির নাতি ও পুত্রবধূ স্কুলে গেলে ধর্ম আত্মীয় বাড়িতে আসেন। তিনি খাবারের সঙ্গে বিষক্রিয়ার কিছু খাওয়াতে পারে, এমনটাই ধারণা এলাকাবাসী আত্মীয় স্বজনের।
নিহতের পুত্রবধূ নার্গিস বেগম জানান, সকাল ৭টার সময় ছেলে এবং মেয়েকে নিয়ে চৌগাছায় স্কুলে চলে যায়। এর ৪ ঘণ্টাপর বাড়িতে এসে দেখি আমার শ্বশুর- শাশুড়িকে চৌগাছা হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। সেখান থেকে যশোর হাসপাতালে নেয়ার পথে শাশুড়ির মৃত্যু হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, চুয়াডাঙ্গার দিকে কোথাও ওই কবিরাজের বাড়ি হবে। আমার শ্বশুর এবং শাশুড়ি তার সঙ্গে মাঝে মধ্যে মোবাইলে কথা বলতেন। গত রাতেও আমার শ্বশুর তার সঙ্গে কথা বলেন। সে সময় মেয়ে টাকা পাঠিয়েছে একথাও বলছিলেন। তবে কত টাকা ছিল সেটা আমি জানি না।
প্রতিবেশী সেলিনা বেগম বলেন, ওই দম্পতির মেয়ে লিপি আমেরিকা থাকেন। সেখান থেকে শনিবার কিছু টাকা পাঠিয়েছিলেন। সকালে চাচা চৌগাছার একটি ব্যাংক থেকে সেই টাকা তুলে এনেছিলেন। ধর্ম আত্মীয় কবিরাজকে স্থানীয়ারা একমুঠি টাকা নিয়ে পালিয়ে যেতে দেখলেও ধরতে পারেনি। পরে বাড়িতে এসে চাচা-চাচি গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় তাদের হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
অসুস্থ মোস্তাফিজুর রহমানের ভাজিতা হাফিজুর রহমান বলেন, রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হঠাৎ কিছুটা চেঁচামেচি শুনতে পাই। বাড়ির পাশে সবজি ক্ষেতে কাজ করা শ্রমিকদের সঙ্গে এসে দেখি চাচা ও চাচি উভয়েই ঘরের মেঝেতে শুয়ে আছে। তারা বারবার বাথরুমে যাচ্ছিলেন।
তিনি বলেন, এ অবস্থায় দ্রুত উদ্ধার করে চৌগাছা হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে তাদের যশোরে স্থানান্তর করা হয়। যশোর জেনারেল হাসপাতালে যাওয়ার পথেই চাচির মৃত্যু হয়। লাশ বিকেল ৩টার দিকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়। ডাক্তার বলেছেন চাচার অবস্থাও খুব খারাপ। তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
চৌগাছা থানার ওসি খন্দকার শামীম উদ্দিন বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি।