ঝিনাইদহ চক্ষু হাসপাতাল এখন দরিদ্র মানুষের ভরসার কেন্দ্র

সৎ চেষ্টা আর কর্মস্পৃহা থাকলে যে অসাধ্য সাধন করা যায় তার দৃষ্টান্ত এখন ঝিনাইদহ চক্ষু হাসপাতাল ও অন্ধ পুনর্বাসন কেন্দ্রটি। আশপাশের জেলায় এ ধরণের সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান যখন ধুকছে যোগ্য নেতৃত্ব ও অর্থ সংকটে, তখন ঝিনাইদহ চক্ষু হাসপাতাল অত্যাধুনিক সব যন্ত্রপাতি বসিয়ে নির্বিঘ্নে সেবা দিয়ে যাচ্ছে চক্ষু রোগীদের। শুধু তাই নয় দুরদুরান্ত জেলা থেকে রোগীরা আসছেন চোখের অপারশেন করতে। বলা যায় ঝিনাইদহ চক্ষু হাসপাতাল এখন হতদরিদ্র গরীব মানুষের ভরসার কেন্দ্র হয়ে দাড়িয়েছে।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ২০০৩ সালে দেড় একর জমির উপর এই প্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরু করে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ঝিনাইদহ চক্ষু হাসপাতাল ও অন্ধ পুনর্বাসন কেন্দ্রটির উদ্বোধন করেন। সে সময় নির্মানকাজ, যন্ত্রপাতি কেনা ও অচল লিফট নিয়ে নানা বিতর্ক থাকলেও বর্তমানে দক্ষ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠানটির খ্যাতি ছড়িয়ে দিয়েছে।

চক্ষু হাসপাতালে ডাঃ মোঃ আব্দুল হালিমের নেতৃত্বে রয়েছে চারজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক। অন্য চিকিৎসকরা হলেন ডাঃ আব্দুর রউফ, ডাঃ সুবোধ রঞ্জন বিশ্বাস ও ডাঃ আরাফাত রহমান। প্রতিদিন এ সব চিকিৎসকরা সাড়ে তিন’শ থেকে চার’শ রোগীর দেখছেন। রোগীরা কাউন্টার থেকে মাত্র ৫০ টাকার টিকেট কেটে ডাক্তার দেখাতে পারছেন। হাসপাতালটিতে এখন কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সংখ্যা ৫১ জন। সবাই সরকারের বেতন কাঠামো মোতাবেক বেতন পাচ্ছেন।

ঝিনাইদহ চক্ষু হাসপাতাল ও অন্ধ পুনর্বাসন কেন্দ্রটির প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মিলন হোসেন জানান, হাসপাতালটিতে এখন অত্যাধুনকি যন্ত্রপাতি বসিয়ে লেন্স স্থাপন, আওপি, রিফ্রাকশন ও ফেকো সার্জারী করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, অত্যান্ত কম টাকায় আমরা চক্ষু রোগীদের সেবা দিচ্ছি। তারপরও বছরের খরচ মিটিয়ে আমরা ১০ লাখ টাকার মতো লাভ করছি। সেই টাকা জমিয়ে জমিয়ে আমরা নিজেদের অর্থয়নে মুল্যবান যন্ত্রপাতি কিনছি।

ঝিনাইদহ চক্ষু হাসপাতাল ও অন্ধ পুনর্বাসন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক এড, আজিজুর রহমান জানান, এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা হতদরিদ্রদের সেবা করতে পারছি ভেবে খুব ভাল লাগে।

তিনি বলেন, মাত্র ১২ হাজার টাকায় আমরা ফেকো সার্জারী করছি। অন্য স্থানে হলে এই অপারশেনের অনেক দাম ছিল। তাছাড়া অল্প দামে আমরা লেন্স স্থাপন করে দিচ্ছি। তিনি বলেন অনেক সময় খুব গরীব রোগীদের মানবিক কারণে একেবারেই ফ্রি অপারেশন করা হয়। তাছাড়া হতদরিদ্রদের মধ্যে কেও আবেদন করলেই তার অপারেশনের মুল্য কমিয়ে দেওয়া হয়। এটা করতে পেরে খুব ভাল লাগে।

তিনি চিকিৎসকদের প্রশংসা করে বলেন, তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে আজ ঝিনাইদহ চক্ষু হাসপাতাল ও অন্ধ পুনর্বাসন কেন্দ্র নিয়ে গর্ব করা যায়।

চুয়াডাঙ্গার তিওরবিলা থেকে আগত আশীতিপর বৃদ্ধা হাজেরা খাতুন জানান, তিনি ঝিনাইদহ চক্ষু হাসপাতালে চোখ চিকিৎসা করে এখন অনেকটা সুস্থতা বোধ করেন। তিনি বলেন এখানকার ডাক্তাররা খুবই আন্তরিকতার সাথে রোগী দেখেন।