ভারতের বিচারব্যবস্থায় শ্রদ্ধা বেড়েছে বিএনপির

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বেকসুর খালাস হওয়ায় ভারতের বিচার ব্যবস্থার প্রতি শ্রদ্ধা বেড়েছে দলটির। স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করায় ভারত সরকারকে ধন্যবাদও দিয়েছে দলটি।

ভারতের উত্তর পূর্বের মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ের আদালতে অবৈধ অনুপ্রবেশ মামলায় নির্দোষ ঘোষিত হয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন। এর পরদিন নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ে করা নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানান বিএনপির মুখপাত্র রুহুল কবির রিজভী।

২০১৫ সালে বিএনপির সরকার পতনের আন্দোলন চলাকালে অজ্ঞাত স্থান থেকে হঠাৎ উধাও হন সালাহউদ্দিন। তিন বছর পর ২৬ অক্টোবর রায় ঘোষণা করে শিলংয়ের আদালত, যেখানে সালাহউদ্দিনকে খালাস দেয়া হয়।

রিজভী বলেন, ‘এই রায়ে ভারতীয় বিচার ব্যবস্থার নিরপেক্ষতা ও স্বাধীনতা সম্পর্কে আমাদের শ্রদ্ধা আরও বৃদ্ধি পেলো। আমি ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানাতে চাই স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ আইনী প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য।’

‘আমরা আশা করবো যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সালাহউদ্দিন আহমেদকে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দেয়া হবে। এ বিজয় এদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষের বিজয়।’

‘ফ্রন্টের নেতারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন চান কি না তা নিয়েও সংশয় রয়েছে’ বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বক্তব্য রেখেছেন সেটা নিয়েও কথা বেলন রিজভী। বলেন, ‘জনগণের মনে বড় ধরনের সংশয় হচ্ছে যে, শেখ হাসিনাই নির্বাচন করবেন না। কারণ সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হলে তার বারোটা বাজবে। এই কারণেই তিনি একতরফা নির্বাচনেরই যোগাড়যন্তর করছেন। নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে নানা ধরণের নীল নকশা আঁটছেন।’

‘একনায়কতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে শেখ হাসিনা দেশে অস্বাভাবিক পরিবেশ তৈরি করে রেখেছেন বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি নেতা। বলেন, ‘একের পর এক কালা কানুন প্রণয়নের মাধ্যমে মত প্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করে আপনারা হানাদারি শাসন টিকিয়ে রাখতে চাচ্ছেন। আর এজন্যই একতরফা নির্বাচন করতে উঠেপড়ে লেগেছেন।’

শেখ হাসিনার অধীনে কোন নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি এবং হবেও না উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘তার অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।… জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণের ভোট দেয়ার গ্যারান্টিাই হচ্ছে-সেই নির্বাচন হবে নির্দলীয় সরকারের অধীনে। সেজন্য নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবি করলেই প্রধানমন্ত্রীর চিত্তচাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। কারণ, চিরচেনা আওয়ামী সন্ত্রাসের আবহেই আগামী নির্বাচন করতে চান শেখ হাসিনা।’

‘নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া দেশে কোন নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। নির্বাচনের আগে অবশ্যই সংসদ ভেঙে দিতে হবে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাজা প্রত্যাহারসহ রাজবন্দীদের মুক্তি দিতে হবে। রাজনৈতিক সকল মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। অবশ্যই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফা দাবি সরকারকে মানতে হবে।’

নির্বাচন কমিশনের ইভিএম মেলারও সমালোচনা করেন বিএনপি নেতা। বলেন, ‘বিশ্বের দেশে দেশে প্রত্যাখাত ও বির্তকিত ইভিএম ব্যবহার করে নির্বাচন কমিশন পাতানো নির্বাচন করতে চাচ্ছে। বিএনপি এসব ইভিএম মেলার প্রতিবাদ ও প্রত্যাখান করছে। ইভিএম মেলাতে বিএনপি বা অঙ্গ সংগঠনের কোন নেতা-কর্মী অংশগ্রহণ করবে না।’

আজ শনিবার খুলনা, রাজশাহী, রংপুর, ফরিদপুর, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ ও কুমিল্লা অঞ্চলে এই মেলা হচ্ছে।