দ্রুত দেশে ফিরতে চান সালাহউদ্দিন

সাড়ে তিন বছর ধরে চলা ভারতে অনুপ্রবেশের মামলায় নির্দোষ ঘোষণার পর দেশে ফিরতে উদগ্রীব বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। জানিয়েছেন, তৃতীয় কোনো দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় চাওয়ার কোনো ইচ্ছা তার নেই। যাই হোক না কেন, দেশেই ফিরতে চান। দেশে কী হবে, সেটি আর পরোয়া করেন না তিনি।

শিলং আদালতের রায়ের পর ‘শিলং টাইমস’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমি খুশি যে আদালত আমাকে মুক্তি দিয়েছে এবং দ্রুত দেশের ফেরার ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছে। এই রায় নিশ্চিত করেছে যে সালাউদ্দিনের প্রবেশ অবৈধ ছিল না।’

২০১৫ সালে বাংলাদেশে সরকার পতনের ডাক দিয়ে বিএনপির আন্দোলন চলাকালে ১০ মার্চ অজ্ঞাত স্থান থেকে নিখোঁজ হন সালাহউদ্দিন। বিএনপি সব বিভিন্ন মহলের অভিযোগ এই ঘটনায় জড়িত পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগ৷ রহস্যজনক সেই অন্তর্ধান প্রতিবেশী রাষ্ট্রে ছড়িয়েছিল ব্যাপক চাঞ্চল্য৷

সেই বছরের ১১ মে শিলংয়ে অসুস্থ ও অসংলগ্ন অবস্থায় দেখা মেলে বিএনপি নেতার। পরে তার পরিচয় পরে জানতে পারে মেঘালয় পুলিশ। এরপরেই তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া নিয়ে দাবি উঠতে থাকে বাংলাদেশের বিরোধী রাজনীতিক মহলে৷

তবে ভারত সরকারের তরফে সালাহউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশকারী হিসেবে মামলা করা হয়৷ তিন বছরেরও বেশি সময় শিলংয়ে গৃহবন্দি থাকার পরে তাঁকে নির্দোষ বলেছে আদালত৷

শিলংয়ে দীর্ঘদিন অবস্থানের বিষয়ে তার কাছে জানতে চাওয়া হলে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘এটি একটি দীর্ঘযাত্রা। এই দীর্ঘযাত্রায় মেডিকেল সহায়তাসহ বিভিন্ন সহায়তার জন্য ভারতীয় এবং মেঘালয়া সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।’

বিএনপি নেতার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তিনি তৃতীয় কোনো দেশের কাছে রাজনৈতিক আশ্রয় নিবেন কি না। জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি কখনোই তৃতীয় কোনো দেশে যেতে চাই না। আমি দ্রুত আমার দেশে ফেরার জন্য অপেক্ষা করছি।’

সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধে দেশে নাশকতার একাধিক মামলা রয়েছে এবং তিনি নিখোঁজ হওয়ার আগ পর্যন্ত তাকে খুঁজছিল পুলিশ। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে গ্রেপ্তার করবে- এমন ভয়ে ভীত নন তিনি।

‘আমরা কাউকে পরোয়া করি না। আমরা দেশ ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে এটিকে মোকাবেলা করছি এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করছি। বাংলাদেশে আসার পর সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে প্রস্তুত’- বলেন সালাহউদ্দিন।

সালাহউদ্দিনের অভিযোগ, বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই। রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের কারণে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

‘বাংলাদেশের বর্তমান শাসকরা সঠিক নির্বাচনের মাধ্যমে আসেনি। ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে ৫ শতাংশ ভোট দিয়েছে অথচ তারা বলে যে তারা নির্বাচিত সরকার। তারা সকল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে এবং গণমাধ্যমে বিরুদ্ধে কালো আইন প্রণয়ন করেছে।’

সাক্ষাৎকারের শেষে মেঘালয়ার মানুষকে বন্ধুত্বপূর্ণ ও সুন্দরমনের বলে অভিহিত করেন বিএনপি নেতা।