সড়ক দুর্ঘটনা রোধে যশোর-সাতক্ষীরা সড়কের মঙ্গলকোট বাজার থেকে কেশবপুর পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার সড়কের দু‘পাশের ঝোপঝাড় স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে অপসারণ করে ফুটপাথ তৈরীর ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন কেশবপুর উপজেলার আলতাপোল গ্রামের চারের মাথা এলাকার একদল যুবক। ২৬ অক্টোবর থেকে ওই এলাকার শিক্ষক, ব্যবসায়ী, ঈমাম, শিক্ষার্থী ও যুব সমাজ এ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
জানা গেছে, যশোর সাতক্ষীরা সড়কটি দিনদিন ব্যস্ততম সড়কে পরিণত হয়েছে। এ রাস্তর দু‘পাশের বাগান পরিস্কার না করায় পথচারীদের চলতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিশেষ করে এ সড়কের মঙ্গলকোট থেকে গোলাঘাটা মোড় পর্যন্ত সড়কের দু‘পাশ ঝোপঝাড়ে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। তাছাড়া সম্প্রতি স্কুল পারাপারের সময় চারের মাথা এলাকার ২য় শ্রেণীর ছাত্রী মুক্তা খাতুন বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা ওই এলাকার সচেতনমহলের বিবেককে ব্যাপকভাবে নাড়া দেয়। একথা উপলদ্ধি করে এলাকার যুবকরা সিদ্ধান্ত নেয় এভাবে আর যেন কোন প্রাণ অকালে সড়কে ঝরে না যায়।
এ উপলক্ষে এলাকার যুবক জিএম মিন্টু ও রেজাউল ইসলামের নেতৃত্বে ২৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। “এসো করি কাজ” এ শ্লোগানকে সামনে নিয়ে গত শুক্রবার থেকে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে ওই যুবকেরা মানুষের কল্যাণে এ মহতি কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ কাজের প্রধান উদ্যোক্তা চাকুরিজীবী জিএম মিন্টু বলেন, তার এলাকার হাফেজ রবিউল ইসলাম, ডাক্তার বাবলা, মোস্তফা কামাল, ইউসুপ আলী টিটু, হাফিজুর রহমান, রুবেল, সোহেল কবীর, আব্দুস সালামসহ ২৫ জন যুবক স্বেচ্ছাশ্রমে জনস্বার্থে কাজ করছে। সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার সকালে তারা রাস্তার দু‘পাশের বাগান পরিস্কার করে ফুটপাথ তৈরীর কাজ করবে। প্রথম দিনে মঙ্গলকোট বাজার থেকে চারের মাথা হয়ে ২৩ মাইল পর্যন্ত কাজ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে তারা কেশবপুর বাজার পর্যন্ত কাজ করবে।
অপর উদ্যোক্তা রেজাউল ইসলাম বলেন, শুধু রাস্তার দু‘পাশ পরিষ্কার নয়। মঙ্গলকোট বাজার থেকে কেশবপুর পর্যন্ত সড়কের দু‘পাশের যে সমস্ত গাছ মরে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে তা অপসারণে তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করবেন। এছাড়া এলাকার বাল্য বিবাহ, জঙ্গীবাদ, মাদক মুক্ত সমাজসহ রক্তদান কেন্দ্র করারও পরিকল্পনা তাদের রয়েছে।
শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ওই যুবকেরা সকাল থেকেই একই রঙের গেঞ্জি গায়ে দিয়ে রাস্তার দু‘পাশের বাগান পরিস্কারের কাজ করছেন। তাদের এই উদ্যোগে আরও অনেক যুবক উদ্বুদ্ধ হয়েছে। পর্যায়ক্রমে তারা উপজেলা ব্যাপী একাজ করবেন বলে জানান।
এ ব্যাপারে এলাকার চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলাউদ্দিন বলেন, ওই যুবকেরা খুব ভালো উদ্যোগ নিয়েছে। আমি যতদূর সম্ভব তাদের সহযোগিতা করব।