নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে যশোরে সবজি খেতে ‘ফেরেমন ট্রাপ’ স্থাপন

নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে কৃষকদের সচেতনতা সৃষ্টিতে প্রচারাভিযান চালানো হয়েছে। এ সময় বিষের ব্যবহার না করে জৈব পদ্ধতিতে পোকা দমনের জন্যে ২০ জন কৃষকের মাঝে ১০০টি ফেরেমন ট্রাপ (হরমনের মাধ্যমে পোকা দমন ফাঁদ) দেওয়া হয়েছে। প্রথম আলো যশোর বন্ধুসভার বন্ধুরা কয়েকটি খেতে ফেরেমন ট্রাপ স্থাপন করে দিয়েছেন।

রোববার যশোর সদর উপজেলার নোঙ্গরপুর গ্রামের সবজির খেতে এ ট্রাপ স্থাপন করা হয়। প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠা বাষির্কী উপলক্ষে ‘একটি ভালো কাজ’র অংশ হিসাবে এ অনুষ্ঠান করা হয়।

যশোরের নোঙ্গরপুরসহ আশপাশের গ্রাম সবজি উৎপাদন এলাকা হিসাবে পরিচিত। এখানকার মাঠে এখন শীতকালীন সবজি বাঁধাকপির আবাদ হচ্ছে। কৃষকেরা ৩৩ শতকের এক বিঘা বাধাকপির খেতে আড়াই হাজার টাকার কিটনাশক ব্যবহার করছেন। যা মানবদেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর। পোকা দমনের জন্যে ফেরেমন ট্রাপ ব্যবহার করলে বিঘাতে কৃষকের মাত্র ৫০০ টাকা খরচ হয়। অন্যদিকে সবজিও নিরাপদ হয়। কিন্তু সচেতনতার অভাবে কৃষকেরা ফেরেমন ট্রাপ ব্যবহারে ততটা আগ্রহী নয়নি। যে কারণে প্রথম আলো বন্ধুসভা কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে খেতে ফেরেমন ট্রাপ স্থাপন করে দিয়েছে।

ফেরেমন ট্রাপ খেতে স্থাপনের আগে কৃষকদের সচেতনতামূলক সংক্ষিপ্ত আলোচনা হয়। এতে বক্তব্য রাখেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপ-সহকারি উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা শ্যামল কুমার নাথ, উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. মাহাবুবুল আলম, আবু ছায়াদ মো. আরিফ ও প্রথম আলোর জেলা প্রতিনিধি মনিরুল ইসলাম।
উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. মাহাবুবুল আলম বলেন, ‘বাঁধাকপির একটি মাত্র ক্ষতিকর পোকা রয়েছে। যার নাম- ডায়মন্ড ব্যাকমথ। এই পোকা দমনের জন্যে কৃষকেরা ৩৩ শতকের এক বিঘা বাঁধাকপির খেতে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকার বিষ প্রয়োগ করছে। যা ছয়টি ফেরেমন ট্রাপ স্থাপন করে দমন করা সম্ভব। যাতে খরচ হয় মাত্র সাড়ে চার থেকে ৫০০ টাকা। কিন্তু কৃষকেরা এ বছর এটি ব্যবহার করেনি। যে কারণে প্রথম আলো বন্ধুসভার এই উদ্যোগ অত্যন্ত সময়োপযোগী। যা কৃষকদের ভীষণ কাজে আসবে।’

কৃষকেরা কেন এ পদ্ধতি ব্যবহার করতে আগ্রহী হয়নি -জানতে চাইলে বদরুল আলমসহ কয়েকজন কৃষক বলেন, ‘একটি মাঠে সব চাষীদেরকেই এ পদ্ধতি ব্যবহার করতে হয়। তা নাহলে এ পদ্ধতি ব্যবহারের সফলতা পাওয়া যায় না। আমরা কেউ কেউ ব্যবহার করতে চাইলেও অন্যরা করতে আগৃহী হয়নি। যে কারণে ফেরেমন ট্রাপ পোকা দমকের একটি আদর্শ পদ্ধতি হওয়া সত্ত্বেও আমরা ব্যবহার করছি না। এ মাঠের সব কৃষককে এক সাথে এ পদ্ধতি ব্যবহার করানোর জন্যে প্রথম আলো বন্ধুসভা খুবই ভালো কাজ করলো। আমরা এখন থেকে এই পদ্ধতিতে সবজি উৎপাদন করবো।’