ঐক্যফ্রন্টের কমন প্রতীক ‘ধানের শীষ’

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটগতভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কমন প্রতীক ‘ধানের শীষ’ হবে বলে জানিয়েছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক ও ঐক্যফ্রন্ট নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না।

বৃহস্পতিবার (১৫ নভেম্বর) রাজধানীর মতিঝিলে ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন। ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

তিনি জানান, বুধবার (১৪ নভেম্বর) নয়াপল্টনে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সমনে পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের প্রেক্ষিতে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, গণফোরামের মহাসচিব মোস্তফা মহসীন মন্টু, ঐক্যপ্রক্রিয়ার সুলতান মুহাম্মদ মনসুর, আব্দুল মালেক রতন, সুব্রত চৌধুরী, জেএসডির আ স ম আব্দুর রব ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বাক মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ আরও অনেকে।

মান্না বলেন, ‘আমরা যতোগুলো দল মিলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেছি, তারা সবাই একটি কমন প্রতীক নিয়ে এবারের নির্বাচনে অংশ নেবো। সেই কমন প্রতীক হবে ধানের শীষ।’

আসন বণ্টন নিয়ে বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়েছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে মান্না বলেন, ‘এ বিষয়ে আলোচনা হয়নি৷ তবে এ বিষয়ে আলোচনার যাত্রা শুরু করেছি।’

নির্বাচন এক ঘণ্টাও পেছানোর সুযোগ নেই আওয়ামী লীগের এ দাবির প্রেক্ষিতে মান্না বলেন, ‘আমরা যখন সরকারের সঙ্গে দেখা করি প্রধানমন্ত্রীসহ সবাই বলেন, নির্বাচন কমিশনের ব্যাপারে আমাদের কিছু বলার নেই। আমরা নির্বাচন কমিশনারের কাছে গিয়ে যা বলেছি নির্বাচন পেছানোর জন্য তাতে অসংখ্য যুক্তি আছে। বিশেষ করে ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষে বিশ্বজুড়ে উৎসব হয়। ফলে পর্যবেক্ষকদের আসার কথা থাকলেও তারা আসতে পারবেন না। এতে সারাবিশ্ব থেকে এক ধরনের বিচ্ছিন্ন করে ভোট করার এ প্রচেষ্টা ঠিক নয়।’

মান্না বলেন, ‘সরকারি দল বলেছে নির্বাচন এক ঘণ্টাও পেছানো যাবে না, যা এক ধরনের হুমকি। আমি এর নিন্দা জানাচ্ছি।’

মান্না আরও বলেন, ‘বুধবার বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশের নির্মম হামলার তীব্র প্রতিবাদ করছি। একদিকে সরকার পক্ষ চারদিন ধরে সমস্ত রাস্তাঘাট বন্ধ করে উৎসব করলো। সেই উৎসবের ফসলে দুজন মারা পর্যন্ত গেলো। তখন পুলিশ কোনও কিছুই করেনি৷

অথচ এদিকে দেখা গেলো, বিরোধীদল বিএনপির মনোনয়নপত্র বিতরণ উপলক্ষে যখন নেতাকর্মীরা জমা হয়েছে তার একদিন আগে নির্বাচন কমিশন সড়ক পরিষ্কার রাখতে বিবৃতি দিলেন এবং তার পরদিনই এ হামলা হলো। আমরা মনে করি, নির্বাচন কমিশনের এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত ছিল।’

মান্না বলেন, ‘আমাদের কাছে প্রতিয়মান হয়েছে যে, এ হামলার পর পুলিশের দুটি গাড়ি ভাঙা এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য সরকারি দলের হাত আছে। অসমর্থিত কিন্তু বিশ্বাসযোগ্য খবরে জানা গেছে যে, যুবলীগ, ছাত্রলীগের কর্মীরা হেলমেট পড়ে, (সেই যে হেলমেট বাহিনী আমরা কোটা আন্দোলনোর সময় দেখেছিলাম) সেই বাহিনী নয়াপল্টনে তৎপর ছিল। আমরা এ ঘটনায় উদ্বেগ ও নিন্দা জানাই।’

ঐক্যফ্রন্টের এ নেতা বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বুঝতে পারছি সরকার চেষ্টা করছে, বিরোধীদল যেন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারে সেই উস্কানি দিচ্ছে। আমরা এর প্রতিবাদ করবো। আমাদের সিদ্ধান্ত সব রকমের বাধা উপেক্ষা করে নির্বাচন করবো। সেই নির্বাচনে স্বৈরাচারী এই সরকারের বিরুদ্ধে একটা ভোট বিপ্লব হবে।’