ঝিনাইদহের সেই আ’লীগ নেতাকে গনপিটুনি!

বিএনপি, জামায়াত ও আওয়ামী লীগের এক পক্ষকে মারধর করার হুমকী দিয়ে ফেসবুকে ভিডিও ভাইরাল করা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেই শহিদুল ইসলাম হিরন নিজেই গনপিটুনির শিকার হয়েছেন। শনিবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে সদর উপজেলার মধুপুর চৌরাস্তার মোড়ে তাকে মারধর করা হয়। এ সময় তার সহযোগী চাপড়ি গ্রামের রিপন মেম্বর, বারইখালী গ্রামের আব্দুল হান্নান ও মধুপুর গ্রামের আজিজুল আহত হন। ঘটনার দিন রাত ১টার দিকে তিনি ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসাও নেন। তার চিকিৎসা রেজি নং ৭১০৪/২। শহিদুল ইসলাম হিরণ সদর উপজেলার আড়ুয়াকান্দি গ্রামের মৃত আবুল কালাম মুন্সির ছেলে।

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের রাত্রিকালীন চিকিৎসক ডাঃ শাহিন খবরের সত্যতা নিশ্চত করে জানান, শনিবার রাত ১টার দিকে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহাটী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেই শহিদুল ইসলাম হিরন কয়েক জন সঙ্গীসহ হাসপাতালে এসে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে যান। হিরন চেয়ারম্যানের ডান হাটু ও ডান হাতের হিপ জয়েন্টসহ বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাড. আব্দুর রশিদ জানান, আমি শুনেছি সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম হিরনকে মারধর করা হয়েছে। তবে কারা তাকে মেরেছে তা আমি নিশ্চিত হতে পারিনি।

ঝিনাইদহ সদর থানা যুবলীগের আহবায়ক ও পোড়াহাটী ইউনিয়নের বাসিন্দা শাহ মোহাম্মাদ ইব্রাহীম খলিল রাজা মুঠোফোনে জানান, শনিবার রাতে পোড়াহাটী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম হিরন বেআইনী জনতা নিয়ে মধুপুর এলাকায় অবস্থান করছিলেন। খবর পেয়ে কে বা কারা সেখানে এসে তাকে গনপিটুনি দেয়। এ সময় হিরণের ২০/২৫ জন সমর্থক আহত হন। তবে তারা প্রশাসনের লোক নাকি কোন প্রতিপক্ষ গ্রুপ তা যুবলীগ নেতা রাজা গনমাধ্যম কর্মীদের নিশ্চিত করতে পারেনি।

ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি এমদাদুল হক শেখ জানান, তারা নিজেরা নিজেরা নাকি অন্য কারো সাথে গন্ডগোল হয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন শহিদুল ইসলাম হিরন সম্ভবত ভর্তি হন নি। এটা আমি জানি।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম হিরনের জনসভার অশ্লিল বক্তৃতার ভিডিও ফুটেজ ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এ নিয়ে তিনি ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সমালোচনার মুখে পড়ে। হিরণ সদর উপজেলার সাধুহাটি, হলিধানী বাজার, হাটগোপালপুর, মধুপুর, গোয়ালপাড়াসহ বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্য জনসভায় বিএনপি ও আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ গ্রুপকে মারধর করে পাছার চামড়া তোলার হুমকী দেন। এ সময় তিনি বিএনপি নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ঠ্যাং ভাঙ্গে পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার করানোর হুমকী দেন।

পুলিশ তার এই নির্দেশ না মানলে তাদের ঝিনাইদহ ছাড়ার হুমকী দেন। হিরণ চেয়ারম্যানের অশ্লিল ও অনুচ্চরণযোাগ্য বক্তৃতার ভিডিও ফুটেজ আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ফারুকুজ্জামান ফরিদ তার ফেসবুকে দিলে তা মুহুর্তের মধ্যে দেশ বিদেশে ভাইরাল হয়ে যায়।