অভয়নগরে মুক্তিযোদ্ধা মোল্যা ওলিয়ার রহমানের চতুর্থ হত্যাবার্ষিকী পালিত

যশোরের অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা, মুক্তিযোদ্ধা , দৈনিক জন্মভূমি পত্রিকার নওয়াপাড়ার বুরো প্রধান মোল্যা ওলিয়ার রহমানের চতৃর্থ হত্যাবার্ষিকী পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে নওয়পাড়া প্রেসক্লাব, উপজেলা আওয়ামী লীগ ও নওয়াপাড়া ট্রাক ট্রান্সপোর্ট শ্রমিক ইউনিয়ন পৃথকভাবে শোক র‌্যালী, আলোচনা সভা, কবর জিয়ারত, পুষ্পমাল্য অর্পণ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে।

সকাল আটায় অভয়নগর-নওয়াপাড়া ট্রাক ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি শ্রমিক ইউনিয়ন কবর জিয়ারত করে ও শোক র‌্যলি করে। সকাল ১০টায় নওয়াপাড়া ইনস্টিটিউট অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল করে। অভয়নগর–নওয়াপাড়া ট্রাক ট্রান্সপোর্ট শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বাঘার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, ব্যবসায়ী নেতা গণি সরদার, শাহজালাল হোসেন, ট্রাক ট্রান্সপোর্ট শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম বিশ্বাস, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক মোল্যা, ওয়ার্ড কাউন্সিলর বকশিয়ার রহমান কালু,ইমারত নির্মান শ্রমিক ইউনিয়নেসর সভাপতি মোশারফ হোসেন, হ্যান্ডলিংক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফাল্গুন মন্ডল, ট্রাক ট্রান্সেপোর্ট ইউনিয়ন নেতা আমির আলী গোলদার, আবুল কালাম আকন প্রমুখ।

২০১৪ সালের ২৩ নভেম্বর সকালে উপজেলা পরিষদের নিকটে নওয়াপাড়া বাইপাস সড়কে মোটরসাইকেল আরোহী তিনজন সন্ত্রাসী মোল্যা ওলিয়ার রহমানকে খুব কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করে। তিনি অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের বিদায়ী কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এ ছাড়া তিনি নওয়াপাড়া পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, খুলনা থেকে প্রকাশিত দৈনিক জন্মভূমি পত্রিকার অভয়নগর উপজেলা প্রতিনিধি, নওয়াপাড়া প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য, ১২টি শ্রমিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত অভয়নগর শ্রমজীবী সমন্বয় পরিষদ ও নওয়াপাড়া ট্রাক ট্রান্সপোর্ট এজেন্সির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

এ হত্যাকান্ডের পরদিন (২৪/১১/১৪) নিহতের স্ত্রী নূরজাহান বেগম বাদী হয়ে তিনজন মোটরসাইকেল আরোহীসহ অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে অভয়নগর থানায় একটি হত্যা এবং যশোর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল খায়ের মোল্যা বাদী হয়ে সাতজনকে আসামী করে অস্ত্র আইনে অভয়নগর থানায় আরেকটি মামলা দায়ের করেন।

অস্ত্র আইনে করা মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারি কর্মকর্তা ডিবি’র উপপরিদর্শক মো. মুরাদ হোসেন ২০১৫ সালের ১১ জুলাই যশোরে অবস্থিত জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে (অভয়নগর আমলী আদালত) অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

অভিযুক্ত আসামিরা হলেন- অভয়নগর উপজেলার সুন্দলী ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালিন চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পরিতোষ কুমার বিশ্বাস, ডহর মশিয়াহাটি গ্রামের নারায়ণ মন্ডলের ছেলে শিশির মন্ডল, একই গ্রামের দুর্জয় বিশ্বাস ও তাঁর স্ত্রী সুচিত্রা বিশ্বাস, চলিশিয়া গ্রামের হারুন মোল্যার ছেলে অহেদুজ্জামান সুমন, বেদভিটা গ্রামের মৃত দ্বীনবন্ধু রায়ের ছেলে প্রসেন রায়, নড়াইল সদর উপজেলার কালীনগর গ্রামের কাওছার ফারাজীর ছেলে আলামিন ফারাজী ওরফে আলা ওরফে সুমন, খুলনার ফুলতলা উপজেলার উত্তর দামোদর গ্রামের তোফায়েল আহম্মেদের ছেলে জাহিদুল ইসলাম রুবেল ও ফুলতলা এমএম কলেজ রোডের মাহাবুবুর রহমানের ছেলে রাকিবুল ইসলাম।

এদিকে, ২০১৬ সালের ২১ মার্চ মোল্যা ওলিয়ার রহমান হত্যা মামলায় অভিযোগপত্র দেয় যশোর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল খায়ের মোল্যা তদন্ত শেষে যশোরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে অভিযোগপত্রটি দাখিল করেন। অভয়নগর উপজেলার সুন্দলী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) তৎকলিন চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পরিতোষ কুমার বিশ্বাসসহ ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।

অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক এনামুল হক বাবুল বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা মোল্যা ওলিয়ার রহমানের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কবর জিয়ারত, দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।’