ঢাকা-১৭ ‘ছেড়ে দিচ্ছেন’ এরশাদ

ersad - hm ershad

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ভোটের আগেই দেশে ফিরছেন, তবে ঢাকা-১৭ আসনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে তিনি নিজেকে ‘সরিয়ে নিচ্ছেন’ বলে খবর রটে যাওয়ায় তৃণমূল নেতাদের মধ্যে তৈরি হয়েছে ক্ষোভ।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজের জেলা রংপুরের সদর ও শহরের আসনের (রংপুর-৩) পাশাপাশি ঢাকার গুলশান, বনানী, সেনানিবাস (ঢাকা-১৭) আসনেও প্রার্থী হয়েছিলেন এরশাদ।

এর মধ্যে রংপুরের আসনটি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তাদের মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিলেও ঢাকার আসনটিতে এরশাদের বিপরীতে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান ফারুককে।

ভোটের এই ডামাডোলের মধ্যেই নানা গুঞ্জনের জন্ম দিয়ে নয় দিন আগে ‘চিকিৎসার জন্য’ সিঙ্গাপুরে চলে যান জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান।

দলের নির্বাচনী সেলের প্রধান ও প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খান বুধবার বলেন, “হয়তো তিনি ঢাকার আসন থেকে আর নির্বাচন করবেন না। বয়স হয়েছে, তাছাড়া তিনি অসুস্থ। দুটি আসন থেকে নির্বাচন করা সম্ভব হয়ে উঠবে না।”

আগামী ২২ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফিরে এরশাদ নিজেই এ বিষয়ে ‘আনুষ্ঠানিক ঘোষণা’ দেবেন বলে জানান দেলোয়ার।

একটি আসন থেকে এরশাদের এই ‘সরে যাওয়া’ নিয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ বা চেয়ারম্যানের বিশেষ সহকারী এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার কোনো কথা বলেননি। তবে মাঝারি সারির নেতাদের অনেকেই এ নিয়ে আলোচনা করছেন।

বনানী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম জসিম উদ্দিন বলেন, “আমাদের কাছে মেসেজ আছে, উইদিন শর্ট টাইম এরশাদ সাহেব ঢাকা-১৭ আসন থেকে সরে দাঁড়াবেন।”

এর আগে গত ১২ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ-৭ আসন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন এরশাদের স্ত্রী ও পার্টির সিনিয়র কো চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ। তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাফেজ রুহুল আমিন মাদানীর সমর্থনে নিজেকে সরিয়ে নেন ওই আসন থেকে।

জাতীয় পার্টির একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ঢাকা-১৭ এবং ময়মনসিংহ-৭ ছাড়াও আরো বেশকিছু আসনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে সরে আসার ব্যাপারেও ‘আলোচনা চলছে’ জাতীয় পার্টিতে।

জাতীয় পার্টি এবার মহাজোট থেকে ২৬টি আসন পেলেও আরও প্রায় দেড়শ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন দলটির নেতারা। তা নিয়ে আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ে ক্ষোভ রয়েছে, ভোটের মাঠেও তার ফল পাওয়া যাচ্ছে।

জয়পুরহাট-২ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী কাজী আবুল কাশেম রিপন অভিযোগ করেছেন, কালাই, ক্ষেতলাল, আক্কেলপুর উপজেলায় তার লাঙ্গলের পোস্টার লাগালেই তা ছিঁড়ে ফেলছেন ‘আওয়ামী লীগের কর্মীরা’।

নির্বাচনী প্রচারের বিষয়ে কেন্দ্র থেকে সেভাবে নির্দেশনা না পাওয়ার কারণেও ক্ষোভ রয়েছে জাতীয় পার্টির তৃণমূলের নেতাদের মধ্যে।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে জাতীয় পার্টির নির্বাচনী সেলের প্রধান দেলোয়ার হোসেন খান বলেন, “পার্টি অফিসে এমন অভিযোগ প্রতিদিনই আসছে। শীর্ষ নেতারা এখন কেউ ঢাকায় নেই। কী আর বলব আমি! জাতীয় পার্টি হচ্ছে মহাজোটের দুধ-ভাত। তারা থাকলে থাকল, না থাকলে নাই।”